বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৭, ০৫:৫৩:০৯

ভারতে মৌলভীদের ‘রাজনৈতিক ফরমান’ কি মুসলিমরা মানে?

ভারতে মৌলভীদের ‘রাজনৈতিক ফরমান’ কি মুসলিমরা মানে?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভারতে মুসলিমদের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ইসলামী ধর্ম শিক্ষার প্রতিষ্ঠান দারুল-উলুম দেওবন্দ ঘোষণা করেছে যে, আপাতত তারা কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করবে না।

দারুল উলুমের প্রধান মুফতি আবুল কাসিম নোমানি জানিয়েছেন, ভারতের পাঁচ রাজ্যে যে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে, তার আগে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে কোনও দলের নেতাদের সঙ্গেই তিনি কথা বলবেন না।

দেওবন্দ দারুল উলুম উত্তর প্রদেশের সাহারাণপুরে অবস্থিত। সেই রাজ্যেও কয়েকদিনের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন শুরু হতে চলেছে। নির্বাচনের আগে ভারতের মৌলভি আর ধর্মগুরুদের অনেকেই সেইসব প্রার্থী বা দলকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে থাকেন, যারা মুসলমান সমাজের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

প্রথা ভেঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির থেকে ভোটের সময়ে দূরত্ব বজায় রাখার যে সিদ্ধান্ত নোমানি নিয়েছেন, তাতে অনেকেই সমর্থন জানিয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য মুহম্মদ আদিব যেমন বলছিলেন, "এটা খুবই বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। আমাদের সমস্যাগুলো তো আসলে ধর্মীয় সমস্যা নয়। অর্থনৈতিক সমস্যা। তাই উলেমাদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকাই উচিত"।

কিন্তু মুসলমান ভোটারদের ওপরে আদৌ কি কোনও প্রভাব ফেলতে পারে ইসলামী সংগঠন আর ধর্মগুরুদের ওই সব নির্দেশ?

সিনিয়র সাংবাদিক কুরবান আলির কথায়, "আমি ত্রিশ বছরের বেশী ধরে এই পেশায় রয়েছি। এতগুলো বছরে কখনও দেখিনি যে কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কাকে ভোট দিতে বলল, সাধারণ মুসলমান নাগরিকরা সেই অনুযায়ী গিয়ে ভোট দিল। হাতে গোনা কিছু আসন ছেড়ে দিলে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ যেভাবে ভোট দেন, মুসলমানরাও সেই সব বিবেচনা করেই ভোট দেন"।

কুরবান আলি আরও বলছিলেন যে, মুসলমান ধর্মগুরু বা ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচনে ব্যবহার করার রীতিটা শুধু উত্তর ভারতেই রয়েছে। দক্ষিণ ভারতে এই প্রথা নেই। দক্ষিণের রাজ্য কেরালায় ২৬% মানুষ মুসলমান। তা স্বত্ত্বেও মুসলিম লীগের মতো ধর্মভিত্তিক দলও ভোট চাইতে মৌলভি বা উলেমাদের কাছে হাত পাতে না।

তবে উর্দু সাংবাদিক মাসুম মুরাদাবাদীর কথায় দারুল-উলুমের এই সিদ্ধান্তটা অপ্রয়োজনীয় ছিল। এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্কই থাকা উচিত না।

তার কথায়, "ইসলামী প্রতিষ্ঠান আর মৌলভিরা কাকে ভোট দিতে বলছে, তার একটা প্রভাব তো পড়েই। অন্তত ৫০% মানুষ তাদের কথা অনুযায়ীই ভোট দিয়ে থাকেন। উলেমা আর ধর্মীয় নেতাদের কথাতেই বহু মানুষ ঠিক করেন যে কাকে ভোট দেবেন"।

কিন্তু  মুরাদাবাদীও স্বীকার করছেন যে, মুসলমানরা কোনও একটি রাজনৈতিক দলকে যে জোট বেঁধে ভোট দেয়, এমন নয়। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে, যেখানে আর কয়েকদিন পরেই নির্বাচন, সেখানে মুসলমানদের ভোট তিন ভাগে বিভক্ত হয়। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি আর কংগ্রেস - তিনটে দলই মুসলমানদের ভোট পেয়ে থাকে। বিবিসি
১৮ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে