এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এ যেন এক ভাঙাগড়ার খেলা। দুই শব্দ জুড়ে এক বাক্য। সেই বাক্য ভেঙে আবার নতুন বাক্য। কখনও দুই বাক্যেই এক শব্দ, কখনও আবার বাক্য গঠনের সময়, পুরনোর সঙ্গে জুড়ে যায় নয়া শব্দ! প্রক্রিয়া চলতে থাকে, বাড়তে থাকে বাক্য-সংখ্যা৷ এক সময় সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৫০ লাখে! ১৭০ শব্দ দিয়ে ৫০ লাখ বাক্য!
পরিসংখ্যানটি অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটি সর্বৈব সত্য। মাত্র ১৭০টি ইংরেজি শব্দ দিয়ে ৫০ লক্ষ বাক্য তৈরি করেছেন ভারতের মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত গ্রামের এক শিক্ষক।
যে কীর্তি জায়গা করে নিয়েছে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস্-এ৷ তবে, কোনও রেকর্ডের দিকে তাকিয়ে এই অসামান্য কাজটি করেননি দাহানু গ্রামের বালাসাহেব চহ্বন৷ তার উদ্দেশ্য ছিল, ছাত্রদের ইংরেজি শেখানো৷ আরও স্পষ্ট করে লিখলে... ইংরেজি ভাষাটিকে দখলে রাখার কৌশল শেখানো৷ আর তেমনটা করতে গিয়েই অভূতপূর্ব এই কাণ্ডটি ঘটিয়ে ফেলেন মহারাষ্ট্রের শিক্ষক!
মুম্বাই থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম৷ হাতে গোনা সরকারি স্কুল৷ যাবতীয় শিক্ষার উৎস সেটাই৷ মারাঠি এই গ্রামে শিক্ষার্থীদের ইংরাজি শেখাতে গিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়তে হয় বালাসাহেবকে৷ কারণ, কোনও মতে ‘এ বি সি ডি’ এবং গুটিকয়েক শব্দ শিখলেও, বাক্য গঠন করতে গিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা পড়ুয়াদের! এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের ইংরেজি শোধরাতে বাঁধা-ধরা পাঠ্য বইয়ের বাইরে বিকল্প পথের সন্ধানে নামেন বালাসাহেব৷ শুরু করেন বাক্য গঠন।
বালাসাহেবের বক্তব্য, প্রথমে একই শব্দ দিয়ে একাধিক বাক্য তৈরি করতে শুরু করেন তিনি৷ যেমন, ‘হি ইজ আ গুড বয়’, ‘শি ইজ আ গুড গার্ল’৷ তার পর আগের শব্দের সঙ্গে নতুন শব্দ যুক্ত করে বাক্য গঠন৷ সব শেষে একই শব্দকে কখনও নামপদ, কখনও ক্রিয়াপদ, কখনও বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার করে বাক্য গঠন।
কে এল পণ্ডা হাই স্কুলের এই ইংরাজি শিক্ষকের বক্তব্য, ‘ছাত্রছাত্রীদের জন্য কৌশল তৈরির কথা মাথায় রেখে কাজ শুরু করে ছিলাম৷ কিন্ত্ত, পরে তা নেশায় পরিণত হয়৷ তখন চেষ্টা করি যতটা কম সংখ্যক শব্দ দিয়ে যত বেশি সংখ্যক বাক্য গঠন করা যায়৷ ৫০ লক্ষ বাক্য গঠনের পরই থামি।’
শিক্ষকের বক্তব্য, ২০১০ সালে এই কাজ শুরু করেন তিনি৷ শেষ হয় ২০১৬-এ৷ ওই বছর ডিসেম্বরেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস চিঠি দিয়ে শিক্ষককে জানান, ‘এত কম শব্দ দিয়ে এত বিপুল সংখ্যক বাক্য এর আগে কেউ তৈরি করেননি।’
শুধু রেকর্ডই নয়৷ শিক্ষকের এই কীর্তিতে উপকৃত শিক্ষার্থীরাও৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বালাসাহেবের তৈরি ‘বাক্য-কোষ’ থেকে নিত্যনতুন বাক্য শিখতে পারছে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি, তার দেখানো কৌশলে সহজে বাক্যগঠনও করতে পারছে তারা৷ শিক্ষার্থীদের উপকার করতে পেরে খুশি শিক্ষকও। সূত্র: টাইমস অব ইনডিয়া
২৫ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম