এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ৬০টি এয়ারলাইন্সের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ এবং সবচেয়ে অনিরাপদ এয়ারলাইন্সগুলোর তালিকা করেছে জার্মানির জেএসিডিইসি ইনস্টিটিউট৷ তালিকাটি দেখে বোঝা যায় বিমানযাত্রায় বড় ঝুঁকির মুখে রয়েছে মানুষ৷ খবর ডয়েস ভেলের।
অনিরাপদ চায়না এয়ারলাইন্স : ২০১৬ সালে ৩৭০ কোটি যাত্রী তাদের বিমানে যাতায়াত করেছে৷ যারা চায়না এয়ারলাইন্সে যাতায়াত করেছেন তাদের অনেকেরই মনে হয়েছে এটি একটি অনিরাপদ পরিবহন৷ তাই ৬০ টি এয়ারলাইন্সের তালিকায় তাইওয়ানিজ এয়ারলাইন সবচেয়ে অনিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে৷
কলম্বিয়ার অ্যাভিয়াঙ্কার বিকল্প নেই : গত ৩০ বছরের নিরাপত্তার উপর ভিত্তি করে ঐ তালিকা করা হয়েছে৷ বিমান কতবার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, কত যাত্রী নিহত হয়েছে, বিধ্বস্ত হয়েছে কিনা, এছাড়া কত কিলোমিটার যাত্রা করেছে এবং যাত্রী সংখ্যা কত- এসবের ভিত্তিতে তালিকা করা হয়েছে৷ এসবের ভিত্তিতে তাদের ০ থেকে ১.০০ পয়েন্ট দেয়া হয়েছে৷ কলম্বিয়ার অ্যাভিয়াঙ্কার স্কোর দাঁড়িয়েছে ০.৯১৪৷ ২০১৬ সালের সবচেয়ে খারাপ বিমানের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থান তাদের৷
ইন্দোনেশিয়ায় এয়ারলাইন্সে বিধ্বস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি : গারুদা ইন্দোনেশিয়ার স্কোর ০.৭৭৭৷ খারাপ বিমানের তালিকায় এর অবস্থান তৃতীয়৷ ১৯৫০ সালে চলাচল শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই এয়াররলাইন্স ৪৭টি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে মোট ৫৮৩ জন৷
বিজয়ী : হামবুর্গভিত্তিক ঐ গবেষণা তালিকায় হংকংয়ের ক্যাথে প্যাসিফিক ২০১৬ সালের সবচেয়ে নিরাপদ এয়ারলাইন্স হয়েছে৷ দ্বিতীয় অবস্থানে আছে এয়ার নিউজিল্যান্ড এবং তৃতীয় অবস্থানে চীনের হাইনান এয়ারলাইন্স৷ জার্মানির লুফৎহানসার অবস্থান তালিকায় দ্বাদশ৷
আকাশের হিরো : ২০০৯ সালে হাডসন নদীতে ১৫৫ জন যাত্রী নিয়ে নেমে পড়েছিল বিমান৷ পাইলট ছিলেন চেসলে শুলেনব্যর্গার৷ কিন্তু তিনি পানিতে বিমানটি অবতরণ করাতে পারায় প্রাণে বেঁচেছিলেন যাত্রীরা৷
মানব আচরণ : বিমানের চালকরা ঝুঁকির অন্যতম কারণ৷ সাম্প্রতিক সময়গুলোতে অর্ধেকের বেশি দুর্ঘটনা হয় তাদের ভুলের কারণে৷ মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভুল থেকেও দুর্ঘটনা ঘটে৷ এছাড়া পাইলটের মানসিক অবস্থার উপরও দুর্ঘটনা নির্ভর করে৷
প্রযুক্তিগত কারণ : বর্তমানের বিমানগুলো নতুন প্রযুক্তি সমৃদ্ধ৷ দুর্ঘটনার ২০ ভাগ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হয়৷
খারাপ আবহাওয়া : এছাড়া ভয়াবহ খারাপ আবহাওয়ার কারণে বহু দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমান৷ সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, দুর্ঘটনার ১০ ভাগ দুর্ঘটনা তুষারপাত, কুয়াশা এবং ঝড়ের কবলে পড়ে হয়েছে৷
দুর্ঘটনার শিকার বিমান : দুর্ঘটনার পর যেসব বিমান মেরামত করে আবার চালানো হয়, সেগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে সবসময়ই উদ্বেগ থাকে৷ বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে কখনোই প্রশ্ন তোলেন না যে দুর্ঘটনায় পড়া বিমান আদৌ নিরাপদ কিনা৷
গবেষণা নিয়ে সমালোচনা : কিন্তু জেএসিডিইসি’র তালিকা কিছুটা সমালোচনার মুখে পড়েছে, কেননা, টেকনিক্যাল কোনো ত্রুটির কথা তারা উল্লেখ করেনি৷ এমনকি মানব আচরণের সমস্যার কথাও নেই সেখানে৷ আবহাওয়া বা সন্ত্রাসী হামলার উল্লেখ নেই, যেমন, সন্ত্রাসবাদ বিমানের নিরাপত্তার জন্য বর্তমানে সবচেয়ে বড় হুমকি৷ এর কারণে ১০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষক সিমন অ্যাশলে বলেছেন, সন্ত্রাসের ভয় দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ৷
যে দুর্ঘটনা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে : জেএসিডিইসি জানিয়েছে, গত বছর বিমান দুর্ঘটনায় ৩২১ জন প্রাণ হারিয়েছে৷ এ বছর যে বিমান দুর্ঘটনাটি সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে, সেটা হলো ৭২ জন যাত্রী নিয়ে বলিভিয়া থেকে কলম্বিয়া যাওয়ার সময় মেডেলিন বিমানবন্দরের কাছে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা, যেখানে ব্রাজিলের শাপেকোইনসি রেয়াল ফুটবল দলের খেলোয়াড়রাও নিহত হন৷
৪ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএ