মঙ্গলবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০১:৩৬:০২

‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর মতোই ইফতিকারের কাহিনি, যা চোখে আনন্দাশ্রু আনবেই

‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর মতোই ইফতিকারের কাহিনি, যা চোখে আনন্দাশ্রু আনবেই

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: হিংসা নয়। মানবিকতার বন্ধনেই যে দূর হতে পারে সমস্ত বিভেদ তা আরও একবার প্রমাণ করল ভারত-পাকিস্তান। আর এই মানবিকতার সেতুর হাত ধরেই ভারতকে ধন্যবাদ জানাল পাকিস্তান। উরি সন্ত্রাসের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেও যে এমনভাবে ভারত-পাকিস্তান কাছাকাছি আসতে পারে তা কল্পনাতেও ছিল না।

বলতে গেলে এ যেন বাস্তবে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর গল্প। বছর দেড়েক আগে সলমন খান অভিনীত ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ দেখিয়েছিল কীভাবে ভারতে হারিয়ে যাওয়া এক মূক ও বধির শিশুকে পাকিস্তানের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রিল লাইফের সেই ঘটনাই যেন পুনরাবৃত্তি হল ওয়াঘা সীমান্তে।

আসলে বছর পাঁচেকের ইফতিখার আহমেদকে নিজের হেফাজতে পেতে দিল্লি আদালতে মামলা করেছিলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দা রোহিনা কিয়ানি। বছর খানেক আগে, ইফতিখারকে নিয়ে কাশ্মীরে পালিয়ে এসেছিলেন তার বাবা গুলজার আহমেদ তান্ত্রে।

প্রাণ বাঁচাতে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এক পরিবারে আশ্রয় নিয়েছিলেন গুলজার আহমেদ। সেখানেই রোহিনা কিয়ানির সঙ্গে গুলজারের পরিচয়। পরে বিয়ে। সন্তান ইফতিখারকে নিয়ে গুলজার ও রোহিনার সংসার সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যেই চলছিল। কিন্তু, সমস্যা বাধে যখন গুলজার ভারতে ফিরতে চায় এবং রোহিনাকেও সঙ্গে আসতে বলে। রোহিনা রাজি ছিলেন না ভারতে বসবাস করতে। এই পরিস্থিতিতে একদিন আচমকা ছেলে ইফতিখারকে নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান গুলজার। পরে রোহিনা জানতে পারেন গুলজার ভারতে ফিরে গিয়েছেন এবং কাশ্মীরের বাড়িতে বসবাস করছেন।

দিল্লিতে, পাকিস্তান দূতাবাসের সাহায্যে দিল্লির আদালতে মামলা করেন রোহিনা। আদালত তার রায়ে ইফতিখারের হেফাজত রোহিনাকে দেয়। এরপরই আদালতের নির্দেশ পালনে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক গুলজারের কাছ থেকে ইফতিখারকে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল।

শেষমেশ বছরখানেক বাদে গত শনিবার পঞ্জাবের ওয়াঘা সীমান্তের একটি শহরে ইফতিখারকে তুলে দেওয়া হয় রোহিনার হাতে। এই হস্তান্তরের সময় সেখানে হাজির ছিলেন ভারত সরকারের প্রতিনিধি দল এবং সেনা আধিকারিকরা। পাকিস্তানের তরফে হাজির ছিলেন তাদের সেনা আধিকারিকরা। ছেলেকে ফিরে পেয়ে চোখের জল বাধ মানেনি রোহিনার। অশ্রুসজল চোখে বারবার ভারত সরকারের প্রতি কৃতঞ্জতা প্রকাশ করেন তিনি। এমনকী, স্বামী গুলজারকেও ক্ষমা করেছেন বলে জানান রোহিনা। তাঁর আশা, স্বামী নিশ্চই স্ত্রী ও সন্তানের টানে পাকিস্তানে ফিরে আসবে। এই ঘটনায় আপ্লুত পাকিস্তান সরকারও। ভারতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিত পরে টুইটারে ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।  

হিংসা, সন্ত্রাস আর হুমকি যখন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যেকার নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়, তখন মানবতার টানে দুই দেশের এমনভাবে কাছাকাছি আসা সকলেরই মন ছুঁয়ে গিয়েছে।-এবেলা
৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে