রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০৯:৪৯:০০

পিৎজা না পেয়ে পাঁচতলা থেকে লাফ দেয়ার চেষ্টা এই বাচ্চা ছেলের!

 পিৎজা না পেয়ে পাঁচতলা থেকে লাফ দেয়ার চেষ্টা এই বাচ্চা ছেলের!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: রুদ্ধশ্বাস প্রতিটি মুহূর্ত। পাঁচতলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে ১৩ বছরের ছেলে। 'নড়িস না বাবা, অনেক পিৎজা দেব'- বলতে বলতে গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল সবার। আর তাকে নিরাপদে নামাতে সব কৌশল প্রয়োগ করছিল পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা।

শেষ পর্যন্ত এক যুবকের তৎপরতায় এবং পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সাহায্যে উদ্ধার করা হয় ওই কিশোরকে।

শুক্রবার ভারতের আসামের শিলচরে 'পিৎজা আসক্ত' এই কিশোর এমন কাণ্ড ঘটায়। অবশ্য অঙ্কিত পালের বাড়ি শিলচরে নয়, আসামেরই নগাঁও জেলার যমুনামুখে।

অঙ্কিত নিজ এলাকার সেন্ট্রাল স্কুলে পড়তো। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর আর তাকে স্কুলে পাঠানো যাচ্ছিল না। বাবা নির্মল পাল ও মা তপতী পাল অতিষ্ঠ হয়ে যান। শেষে পিসি জলি পাল তাকে শিলচরে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল শিলচরে থেকেই অঙ্কিত পড়াশোনা করবে।

বৃহস্পতিবার অঙ্কিতকে শিলচরে নিয়ে আসা হয়। লিঙ্ক রোডে পিসির বাড়ি। রাতে হঠাৎ পিৎজা খাওয়ার বায়না ধরে সে। পিসি বা পিসেমশায় তাতে একদমই গুরুত্ব দেননি।

শুক্রবার সকালে মায়ের সঙ্গে পিসির বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় ফোনে। পিৎজা প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়। সেই সময় অঙ্কিত ফোন টেনে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল মাকে। জলিদেবী সে সুযোগ দেননি।

এর পরই ছাদে উঠে পাইপ বেয়ে জানালার কার্নিশে নেমে গিয়ে দাঁড়ায় অঙ্কিত। প্রথমে বিষয়টি পথচারীদের দু-একজনের নজরে পড়ে। দেখতে দেখতে নীচে ভিড় জমে যায়। এরই রেশে শহর জুড়ে যানজট মাত্রা ছাড়ায়।

ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ, দমকল বাহিনী আর এসডিআরএফ। কান্নায় ভেঙে পড়েন পিসি। কার্নিশে দাঁড়িয়েই শত শত পিৎজার 'অফার' পাচ্ছিল অঙ্কিত। দু-একজন গিয়ে দোকান থেকে পিৎজা কিনেও নিয়ে আসে। তবু নামতে রাজি হয়নি। তার একটাই বক্তব্য- এই জীবন রেখে লাভ নেই, সে মরতে চায়।

ঘণ্টা দুয়েক পর পেছন থেকে মান্না বড়ভুইয়া নামে এক যুবক দালান বেয়ে আচমকা অঙ্কিতের পা ধরে ফেলেন। মান্নার পেছনে পেছনে এগিয়ে যায় জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর এক জওয়ান। তখন ছাদ থেকে রশি ফেলা হলে দুজনে মিলে তার কোমর বেঁধে দেন। অন্যরা তাকে টেনে ছাদে নিয়ে যায়।

তবে নীচে নামানোর পরেও অভিমান কমেনি তার। পিসিকেই নানাভাবে দোষারোপ করছিল অঙ্কিত।

পুলিশ তাকে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করায়। তবে শরীরের কোথাও কোনো চোট লাগেনি। ছিল না কোনো অস্বাভাবিকতাও। পুলিশ জলিদেবীর হাতেই তাকে তুলে দেয়।

পৌরসভার সদস্য অসিত সরকার জানিয়েছেন, এর পরই অঙ্কিতের বাবাকে ফোন করা হয়েছে। তিনি এসে ঘরের ছেলেকে ঘরে নিয়ে যাবেন।
১৯ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে