শুক্রবার, ০৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:১৫:১০

শুনলে চমকে যাবেন, এরপর​ও বেঁচে আছে শিশুটি!

শুনলে চমকে যাবেন, এরপর​ও বেঁচে আছে শিশুটি!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক:গর্ভকালের মাত্র পাঁচ মাসেই জন্ম। ওজন ছিল মাত্র ৬০৯ গ্রাম। শরীরের চামড়া এতটাই পাতলা ছিল যে, স্পর্শ করলেও রক্তপাত শুরু হওয়ার আশঙ্কা ছিল। জন্মের পরপরই সে ভোগে অন্ত্রের সমস্যায়। বেঁচে থাকার কোনো আশাই ছিল না।

জন্মের মাত্র ছয় দিন পরই বাবা-মায়ের সম্মতি নিয়ে চিকিৎসকেরা এই মেয়ে শিশুর অস্ত্রোপচার করেন। অত্যাধুনিক ওই অস্ত্রোপচারের পর বেঁচে যায় সে। শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন তার বাবা-মা।

শিশুটির নাম আবিয়াজিল পিটার্স। লন্ডনের দক্ষিণের টুটিং এলাকার সেন্ট জর্জেস হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী রো​গী আবিয়াজিল। হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধারণা, বিশ্বে আবিয়াজালই সবচেয়ে ছোট শিশু, যে পাকস্থলীতে বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের পরও বেঁচে আছে।

গর্ভকালের মাত্র ২৩ সপ্তাহে গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে হঠাৎ করে জন্ম নেয় আবিজিয়াল। তার জন্ম নেওয়ার প্রত্যাশিত তারিখ ছিল ১৯ ফেব্রুয়ারি। নির্দিষ্ট সময়ে আগে জন্ম নেওয়ার পর তার পাকস্থলী কালো হয়ে যায়। তার বেঁচে থাকার কোনো আশা ছিল না। জন্মের মাত্র ছয় দিন পর তার পাকস্থলীতে অস্ত্রোপচার করা হয়।

শিশুটির মা পিটার্স বলেন, ‘এটা ছিল দুর্ঘটনার মতো। হঠাৎ-ই ঘটে যায়। বিষয়টা এমন ছিল, অস্ত্রোপচার করলে সে নাও বাঁচতে পারে। আবার অস্ত্রোপচার ছাড়াও তাকে বাঁচানো যাবে না। কাজেই আমরা সম্মতি দেই এবং অপেক্ষা করি। এটা অসম্ভব ভীতিকর ছিল। এত ছোট শিশু বেঁচে উঠতে পারে—তা বিশ্বাস করাও কঠিন ছিল।’

পেডিয়াট্রিক সার্জারির জন্য যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালের একটি হলো সেন্ট জর্জেস। তবে এই হাসপাতালটিতেও এত ছোট শিশুর অস্ত্রোপচারের ঘটনা এটাই প্রথম।

ওই হাসপাতালের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেন কনসালট্যান্ট পেডিয়াট্রিক সার্জন জাহিদ মুক্তার। তাঁর ধারণা, বিশ্বের যে কোনো স্থানেই আবিয়াজালই সবচেয়ে ছোট শিশু যে পাকস্থলীতে বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের পরও বেঁচে গিয়েছে। ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, সার্জিক্যাল দলের জন্য এটা ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। এত ছোট শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের সরঞ্জাম।

পেডিয়াট্রিক সার্জন জাহিদ মুক্তার বলেন, ‘শিশুটির চামড়া ও টিস্যু ছিল জেলির মতো। যদি আপনি ধরতে যান তবে রক্ত পড়া শুরু হতে পারে।’ তিনি বলেন, হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের ঘটনা এটাই প্রথম। আবিয়াজিল শেষ পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত। এখন সে তার বাড়িতেই বেড়ে উঠছে। জাহিদ মুক্তার বলেন, ‘১০ জনের এই সেরা সার্জিক্যাল দলটি ছোট শিশুটির জন্য সর্বোচ্চ শক্তি ব্যয় করেছে।’

আবিয়াজিলের মা পিটার্স বলেন, ‘শিশুটি দারুণ রয়েছে। আমাদের বলা হয়েছে—তার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুর মতোই আচরণ করতে। সে এখন সার্বক্ষণিক সুস্থ। এত ছোট অবস্থায় জন্ম নেওয়া এবং এত কিছুর পরও তার বেঁচে থাকাটা পুরোদস্তুর অলৌকিক ঘটনা।’
পিটার্সের গর্ভকালীন কোনো জটিলতা ছিল না। শিশুটির এত আগে জন্ম নেওয়ার কারণ জানা যায়নি।
০৩ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪ডটকম/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে