এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এ যেন উলটপুরাণ ৷ চাকরি করা সত্ত্বেও পকেটে নেই কোনও টাকা ৷ তাদের বেতনের টাকা পান তাদের স্ত্রী ৷ না না, কোনও জোর জুলুম নয় বা এটা হল অত্যাচার বন্ধের দাওয়াই৷ মাসের শুরুতে স্ত্রীর কাছে হাত পেতে মাসোহারা নেওয়াটাই হল অপরাধের উচিত শাস্তি ৷
দুজনেই সরকারি চাকরি করেন। দুজনেই পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার বাসিন্দা। আরও একটা জায়গায় মিল দুজনের । দুই সরকারি চাকুরিজীবীদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তারা সংসারে টাকা দেন না। দীর্ঘদিন স্বামীদের এমন ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে দুই স্ত্রী দ্বারস্থ হন মহকুমা প্রশাসকের। সব শুনে বাঁকুড়ার সদর প্রশাসকের আদেশ, মাসের বেতনের একাংশ যাবে দুই স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে।
বাঁকুড়া সদর থানার জুনবেদিয়া এলাকার বাসিন্দা দিপালী সিংহ। দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক অশান্তিতে ভুগে জেরবার। দিপালীর অভিযোগ, দুই সন্তানের দেখভাল থেকে পরিবারের খুঁটিনাটি সবেতেই তার শিক্ষক স্বামীর প্রবল অনিহা। টাকা চাইলেই নাকি মারধর করতেন সরোজকান্তি সিংহ। আর পেরে না উঠে বাধ্য হয়েই বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসকের কাছে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা জানান তিনি।
বাঁকুড়া সদর থানার কানটাকাটার বাসিন্দা পদ্মা পালের সমস্যাও একই। স্বামী কংসাবতী সেচ দফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কিন্তু স্ত্রী-সংসারের দিকে নজর দেওয়া তো দূর, টাকা পয়সা সব নিজের কাছেই রাখতেন সরকারি চাকুরি পার্থসারথি পাল।
সব কিছু দেখে-শুনে বাঁকুড়া সদর প্রশাসক অসীমকুমার বালার আদেশ, স্বামীদের মাস বেতনের অংশ যাবে স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে। যেই কথা সেই কাজ, শিক্ষকের অ্যাকাউন্টের ষাট শতাংশ টাকা এখন দিপালীদেবীর অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে।
স্ত্রীর আনা অভিযোগ একেবারেই মানতে চাননি শিক্ষক স্বামী সরোজকান্তি সিংহ। প্রশাসকের এই বিচারে স্বস্তি ফিরেছে দিপালী ও পদ্মার জীবনে। কিন্তু প্রশাসকের এই আদেশে প্রশাসনিক মহলে শোরগোল পড়ে গেছে। তবে অসীমবাবুর দাবি, এক্তিয়ারের মধ্যে থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন।
০৫ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস