এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : জীবন সংগ্রাম। রুটিরুজির লড়াই। একার সামর্থ্যই হাতিয়ার। পুরুষশাসিত এই সমাজে লক্ষ্যে অবচিল থাকলে সেই লড়াইও যে জেতা সম্ভব তা করে দেখিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুরের মল্লিকা। বুধবার নারী দিবস। এই দিনটিকে সামনে রেখে মল্লিকার লড়াইকে সম্মান জানালো পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মহিলা কমিশন।
মল্লিকার জীবনটা কিন্তু সহজ ছিল না। নিম্নবিত্ত পরিবার। তিন ভাইবোন। সংসার চালানোর দায়। তাই আর পাঁচটা নিম্নবিত্ত পরিবারের মত অল্প বয়েসেই মল্লিকার বিয়ে দিয়ে দেন তার বাবা। রিকশাচালক স্বামী স্বপনের সঙ্গে অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে বর্ধমানের গুসকরায় ঘর বাঁধেন মল্লিকা। কিন্তু তখনও বুঝতে পারেননি, আরও ঘোর অন্ধকার অপেক্ষা করছে তার জন্য।
সব কিছু হারিয়ে স্বামীর সঙ্গে খড়গপুর ফিরে আসেন মল্লিকা। রবীন্দ্রপল্লিতে ঘর ভাড়াও নেয়। কিন্তু স্বামীর রূপ বদল তাকে কঠিন বাস্তবের সামনে নিয়ে আসে। সংসার চালানোর মত ন্যূনতম খরচ তো দূরের কথা, স্বামীর কাছে নিত্য জুটত অপমান, অত্যাচার, মারধর। তারপরই শুরু মল্লিকার নতুন লড়াই। বাতাসা বিক্রি দিয়ে শুরু। তারপর লোকের বাড়ি, দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া।
প্রথমে সাইকেল। পরে ট্রলি, মোটার সাইকেলের পর এখন ভ্যানে করে গ্রাহকদের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেন মল্লিকা। সেই সঙ্গে আইআইটি বাজারে রয়েছে তার চায়ের দোকান। জীবন সংগ্রামে মল্লিকার এই লড়াইকে সম্মান জানাবে রাজ্য সরকার। এগারোই মার্চ সল্টলেকের জলসম্পদ ভবনে তাকে সম্মান জানানো হবে।
পরিশ্রমের দাম পেয়েছেন মল্লিকা। পেয়েছেন সম্মানও। মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখেছেন। নিজের ভুল বুঝতে পেরে কাছে ফিরে এসেছেন স্বামীও। মল্লিকা আজ অন্য পাঁচটা নারীর কাছে দৃষ্টান্ত। কিন্তু মল্লিকা বলছেন, তার লড়াই এখনও শেষ হয়নি।
০৮ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস