আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একহাতে শক্ত করে ধরা অটোর হ্যান্ডেল। অন্য হাতে জড়িয়ে দু’বছরের ছেলে। সারা দিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে কাদা ছেলেটা। তাকে আগলেই হাসি মুখে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন বছর ছাব্বিশের বাবা।
মোহাম্মদ সাঈদ। সংসারের একমাত্র রোজগেরে। স্ট্রোকে পঙ্গু হয়ে শয্যাশায়ী স্ত্রী। তাই বছর দুয়েকের ছেলেকে কোলে নিয়েই অটো চালিয়ে বেড়ান তিনি। সারা দিন ছেলে কোলেই চলে কাজ। নিরুপায় সইদ বলেন, ‘‘সংসারটা তো চালাতে হবে!’’
মুম্বাইয়ের ভারসোভায় দু’বছরের ছেলে, তিন মাসের মেয়ে আর ২৪ বছরের স্ত্রী ইয়াসমিনকে নিয়ে ছোট্ট সংসার সইদের। সপ্তাহ দুয়েক আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বাঁ দিকটা প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছে ইয়াসমিনের। সেই থেকে একা হাতে ঘর-বাহির দু’দিকই সামলাচ্ছেন মহম্মদ। ছেলে কোলে কাজে বের হতে হয়। বাধ্য হয়েই মেয়েকে রেখে আসেন প্রতিবেশীর ঘরে।
কঠিন মুখে সাঈদের জবাব, ‘‘অনেকেই আমার কোলে ছেলেকে দেখে আর অটোতে উঠতে চান না। এমনও হয়েছে সারা দিন কোনও যাত্রী পাইনি। রাতে খালি হাতে ফিরেছি বাড়িতে। কিন্তু ছেলেমেয়েরা খালি পেটে শুতে গেলে সহ্য করতে পারি না যে!’’
সম্প্রতি ছেলে কোলে সাঈদের একটি ছবি টুইট করেন বিনোদ কাপরি নামের এক পরিচালক। সেখানে সাঈদের নাম, ফোন নম্বর, ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড-ও লিখে দিয়েছিলেন বিনোদ।
এর পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে সেই ছবি। সাহায্য করতে চেয়ে এর পর থেকেই একের পর এক ফোন আসছে সাঈদের কাছে। যোগাযোগ করেছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। অনেকে উদ্যোগী হয়ে টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছেন সইদের অ্যাকাউন্টে।
এখনও তিনি জানেন না কত টাকা এসেছে তাঁর অ্যাকাউন্টে। তবে সকলের সাহায্যে মুখে একটু একটু হাসি ফুটছে। স্বস্তির মুখে সাঈদ জানালেন, ‘‘কখনও কোনও খারাপ কাজ করিনি। কাউকে ঠকাইনি। ভাগ্যে বিশ্বাস রাখি। সকলকে ধন্যবাদ। ’’-আনন্দবাজার
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম.জে