নদীতে সোনা কুড়ানোর ধুম!
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : নদীতে সোনা কুড়ানোর ধুম পড়েছে। এমন সংবাদ আজগুবি মনে হলেও ঘটনা কিন্তু সত্যি। বুলগেরিয়ার নদীতে সোনার খোঁজে ভিড় পড়ে গেছে।
জানা গেছে, গত আগস্টে বুলগেরিয়ার সরকারও এমন এক তথ্য প্রকাশ করেছিল। সেই সময় বুলগেরিয়া সরকার জানায়, বুলগেরিয়ার প্রায় সব নদীতেই রয়েছে সোনার কণা। বুলগেরিয়ায় নদীতে থাকা সোনার কণা প্রাচীন থ্রেশানদের তৈরি করা অলঙ্কারের গুড়ো বলে মনে করা হয়।
বুলগেরিয়ায় কাঁকর-নুড়ি থেকে সোনার কণা পৃথক করার কাজে জড়িত ব্যক্তিদের সংগঠন প্রধান কিরিল স্তামেনভের কথায়, এ নদীতে সব সময়ই সোনা ছিল। আজকের বুলগেরিয়া একসময় থ্রেশান সভ্যতার অধীনে ছিল।
সোনার টানে নারী-পুরুষ সবাই নদীতে নেমে পড়েছেন। নদী থেকে নুড়ি-পাথর ও সোনা আলাদা করার কাজ করেন এমন এক ব্যক্তির কথায়, আমি গত দু’বছর ধরে এ কাজ করছি। সোনার আকর্ষণেই আমরা কাজ করি। সেদেশের সরকারও বহু মানুষকে এ কাজে নিয়োগ করেছে।
ইউরোপের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ বুলগেরিয়া। তবে এবার বড় লোক হওয়ার আশায় নদীর তীরে দলবেঁধে নেমেছেন দেশটির অধিবাসীরা। সেখানে নুড়ি কুড়িয়ে পানিতে ধুলে সোনা পাওয়া যায়। শত শত নারী-পুরুষ নেমে পড়েছেন সোনার খোঁজে।
কাপড় গুটিয়ে হাঁটু পানিতে নেমে পড়েছেন কেউ কেউ। কেউ উপকূলের নুড়ি নাড়াচাড়া করছেন। কাদা-শ্যাওলা জমাটবাঁধা নুড়ি পাথর কুড়িয়ে পানিতে ধুয়ে ছেঁকে ছেঁকে দেখছেন স্বর্ণ আছে কিনা।
বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, অনেক আগে থ্রাসিয়ান সভ্যতার শাসকদের রাজত্ব ছিল এ অঞ্চল। তাদের রাজধানী ছিল এ নদী তীর। সেখানে অনেক স্বর্ণ-গহনা জমা রাখা হতো। সেই সভ্যতা বিলুপ্তির পর এখানকার পাথর-মাটির সঙ্গে মিশে গেছে সোনা।
এতে বলা হয়, কালের বিবর্তনে ২ হাজার বছর পরও নুড়ি কুড়িয়ে স্বর্ণের দেখা মেলে। বর্তমানে এ নদী তীরের প্রায় দেড় হাজার মানুষের সোনা কুড়ানোই তাদের পেশা। সোনা কুড়ানোদের একটি সংগঠনও রয়েছে।
সংগঠনটির প্রধান কিরিল স্টামেনভ বলেন, এখানে সবসময় সোনা ছিল। থ্রাসিয়ান সভ্যতার শৈশব গড়েছে এখানে। এখন স্বর্ণের চিকচিক দৃশ্য অনেক মানুষকে এ পেশায় টেনে এনেছে। দু’বছর ধরে সপ্তাহে একবার স্বামীর সঙ্গে এখানে সোনা কুড়াতে আসেন রিভিনা।
তিনি বলেন, আমরা ৮ গ্রাম সোনা পেয়েছি। ২০ গ্রাম হয়ে গেলে আমাদের নাতিদের কাজে দেবে। গত আগস্টে প্রকাশিত বুলগেরিয়া সরকারের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, দেশটির সব নদীই স্বর্ণবহমান।
লগেরিয়ায় ২০০৯ সালের পর থেকে নদী বা অন্য কোনো উৎস থেকে স্বর্ণ সংগ্রহকে বৈধতা দিয়েছে সরকার। বুলগেরিয়ার নদ-নদীগুলোতে বেশির ভাগই অনুসন্ধান চালিয়ে আসছে দেশটির মানুষ।
ব্যক্তিগত বা দলবদ্ধভাবে চলে সোনা সংগ্রহের কাজ। জরিপের হিসাব মতে, প্রায় ১৫০০ শ্রমিক সোনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত। অনেকের প্রধান পেশাই সোনা সংগ্রহ করা। এত বিপুল পরিমাণ সোনা সংগ্রহরের ফলে পুরো দেশই যেন সোনার খনিতে পরিণত হয়েছে।
২৯ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম