বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭, ০১:৪৩:৫৪

আগ্রা নয়, আরও এক তাজ মহলের সন্ধানে ভারতের পাহাড় রাজ্যে

আগ্রা নয়, আরও এক তাজ মহলের সন্ধানে ভারতের পাহাড় রাজ্যে

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: আগ্রা নয়, আরও এক তাজ মহলের সন্ধানে ভারতের পাহাড় রাজ্যে।  দেশের উত্তরপূর্ব দিকে যে আরও একটি তাজমহল রয়েছে তা একেবারেই জানা ছিল না। অন্তত স্থানীয়রা তাকে এই নামেই ডাকে। ভারতের উত্তর-পূর্বের একটি ছোট্ট রাজ্য মিজোরাম।

বিশ্বের সুন্দরতম এয়ারপোর্টগুলির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দর। ঘন সবুজ পাহাড়ের মাঝখানে রয়েছে ছবির মতো সুন্দর সেই এয়ারপোর্টটি। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা, চওড়া, মসৃণ রাস্তা দিয়ে শুরু হল আমাদের যাত্রা।

মি- পিপল, মানে মানুষ
জো- হিল, মানে পাহাড়
রাম- ল্যান্ড, মানে জমি
মিজোরাম, মানে 'ল্যান্ড অফ হিলি পিপল'।

গাড়ি ছুটছে সেই পাহাড়ি মানুষের দেশে, গন্তব্য রাজধানী শহর আইজল। এই রাজ্যকে 'ল্যান্ড অফ ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ারস'-ও বলা হয়। চারপাশে কতও ধরনের বাহারি ফুল। কিছুক্ষণের মধ্যেই দূর পাহাড়ে দেখলাম আইজল শহরকে। খুবই ব্যস্ত শহর। শহর অনুপাতে জনসংখ্যাও যেন বেশি। জ্যাম জটও নজরে এল। কিন্তু, কোনও হর্নের শব্দ শুনলাম না। কোনও রকম চেঁচামেচিও কানে এল না। আশ্চর্য ব্যাপার!

মহিলাদের কর্ম-আধিক্য চোখো পড়ার মতো। দোকান, বাজার, হোটেল সব কিছুই মহিলারা সামলাচ্ছেন। আর এখানকার ছেলেরা বেশ জোরেই বাইক চালায়। ঘড়ির কাঁটা প্রায় তিনটে। এদিকে আবার সন্ধে ছ'টা বাজতে না বাজতেই দোকান-বাজার সব বন্ধ হয়ে যায়। তাই, হোটেলে পৌঁছে জিনিসপত্র রেখেই বেরিয়ে পড়লাম। পড়ন্ত বিকেলে শহরের মধ্যেই খানিক ঘোরাঘুরি করে ফিরে এলাম হোটেলে।

পরের দিন প্রথমেই গাড়ি হাঁকানো হল দুরতলং হিল গ্রামের দিকে। সেই গ্রামেরই পাহাড় চূড়ায় রয়েছে এ রাজ্যের তাজ মহল। যার স্থানীয় নাম 'কেভি প্যারাডাইস'। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ আর প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে এক সময় পৌঁছে গেলাম দুরতলং হিলে। শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ। তার মাঝেই দাঁড়িয়ে রয়েছে কেভি প্যারাডাইস।

নাহ্! দেখতে একেবারেই আমাদের পরিচিত তাজ মহলের মতো নয়। কিন্তু কোথাও যেন একই আর্তি রয়েছে। কে ছাওয়ানথুমা নামে জনৈক এক মিজোবাসীর স্ত্রী, রোশনপুই ভার্তে, হঠাতই এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। তাঁরই স্মৃতিতে তখন ছাওয়ানথুমা তৈরি করেন এই তিনতলা মহল।

সাদা মার্বেলের তৈরি মহলটিতে প্রবেশ করতে গেলে টিকিট কাটতে হয়। সিঁড়ি বেয়ে খানিকটা উঠেই সৌধের ছোট্ট চত্বর। বেশ কয়েক জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকা বসে রয়েছে ইতিউতি। পরিবেশের সঙ্গে একদম মানানসই। ভালবাসার নীরব সাক্ষী সৌধে এসেছে তারা।

সৌধের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে মিজোরামের 'মুমতাজ' রোশনপুই ভার্তের প্রতিকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম চুপচাপ। নীরবতা এখানের পরিবেশকে যেন বেশি সুন্দর করেছে। আর দূরে, পাহাড়ের উপর অনবরত মেঘের খেলা চলেছে। পাহাড়ের গা বেয়ে সাদা-বেগুনি ছোট ছোট এক ধরনের ফুল। কোনও শিল্পীর সদ্য শেষ হওয়া ক্যানভাস যেন। প্রেমের স্মৃতিসৌধে অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলাম আমরাও।-এবেলা
এমটিনিউজ২৪/এম.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে