বুধবার, ০২ আগস্ট, ২০১৭, ০১:০৪:৩৮

ভারত-পাকিস্তান একে অপরকে ঘৃণা করে কেন?

ভারত-পাকিস্তান একে অপরকে ঘৃণা করে কেন?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রতিদিন বিকেলে সূর্য অস্ত যাবার বেলা। অমৃতসর থেকে লাহোর পর্যন্ত তীরের মতো সোজা সড়কের মাঝামাঝি স্থানে একটা দৃশ্যের অবতারণা হয়। জমকালো ইউনিফর্মধারী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সেনা স্কোয়াড একে অপরের দিকে হন হন করে গিয়ে ধপাস করে বুট ফেলে মাটিতে।

এটি আসলে ‘বিটিং রিট্রিট’ নামে সপ্তদশ শতাব্দীর সময়কার একটি বৃটিশ সামরিক কসরত। গর্জনের সুরে কমান্ড, ক্রুদ্ধ দৃষ্টি আর হাস্যকরভাবে পা উঁচু করা - এই কসরতের সব প্রথাতেই এক ধরনের সহিংস আকাঙ্ক্ষার ছাপ আছে। কিন্তু এরপরই ভালোবাসা সমেত এক ঐকতানে দুপক্ষ নিজ নিজ জাতীয় পতাকা নমিত করে। খুব চাঁচাছোলাভাবে হাত মেলায় গার্ড দুজন। তারপরই রাতের জন্য বন্ধ হয়ে যায় সীমান্তের প্রবেশদ্বার।

এই আগস্টেই পাকিস্তান ও ভারত তাদের ৭০তম জন্মদিন উদযাপন করবে। কিন্তু ওয়াগা’র এই সীমান্ত চৌকিটি দেশ দু’টির অকার্যকারিতার প্রতিফলন। এই শো দেখতে আসা দর্শণার্থীদের জন্য একটি বহুস্তর বিশিষ্ট গ্যালারি (অ্যাম্ফিথিয়েটার) বানিয়েছে পাকিস্তান। ভারতীয়রাও কম যায় না। বরং, এক ধাপ এগিয়ে প্রায় ১৫ হাজার দর্শনার্থীর উপযোগী করে আধা-স্টেডিয়ামই নির্মাণ করেছে তারা। অথচ, এই শো দেখতে সপ্তাহে যত মানুষ আসেন, তাদের সংখ্যা কয়েকশ’ পেরোয় খুব কমই।

ওয়াগায় সৈন্যদের এই হাস্যকর টুপি পরিধান, হন হন করে হেঁটে চলার মধ্যে কিন্তু গুরুতর একটা ব্যাপার আছে। এই শোর নিখুঁত ধারাবাহিকতা ছাড়া, দুপক্ষের প্রথা অনুসরণ করা, সীমান্তরেখার দুপাশে সেনা ও উপস্থিত জনতার হুবহু একই ধাঁচে কথা বলা ও আচরণ করা দেখে মনে হতে পারে দুই দলের মধ্যে খেলোয়াড়সুলভ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ রয়েছে। এই চর্চা যেন বলছে, আমাদের মধ্যকার পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক, আমরা জানি এটা হলো স্রেফ একটা খেলা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, ভারত ও পাকিস্তানের খেলা প্রায়ই খুব সিরিয়াস হয়ে ওঠে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গ্লানিদায়ক অবসানের পর, বৃটেন নিজেদের অশান্ত ভারতীয় সাম্রাজ্যের দাবিদার পায় দুপক্ষকে। এই ভারতীয় সাম্রাজ্য হলো জাতি, ভাষা ও ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর এক বিশাল মিশ্রণ। এই সাম্রাজ্যের অর্ধেক সরাসরি বৃটিশরা পরিচালনা করতো। অবশিষ্ট অর্ধাংশ শাসন করতো বৃটিশ রাজপরিবারের অনুগত ৫৬৫ জন বংশপরম্পরায় আগত শাসক। প্রায় সবাই চেয়েছিলেন স্বাধীনতা।

কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর কংগ্রেস পার্টি যেখানে ঐক্যবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রীয় (ফেডারেল) সরকার চেয়েছিল, মুসলিম লীগের মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ সেখানে যুক্তি দেখান, উপমহাদেশের ৩০ শতাংশ মুসলিম সংখ্যালঘুর প্রয়োজন আলাদা রাষ্ট্র। কারণ, এই মুসলিমরা সংখ্যাগুরু হিন্দুদের হাতে নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বৃটেনের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটনকে বাধ্য করেছিল ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে। তিনি পুরো দেশকে ভাগ করেন দুই, কিংবা তিন অংশে (যেহেতু নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের ছিল দুই অংশ)।

১৯৪৭ সালের আগস্টের মাঝামাঝি যখন দুই নতুন রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষিত হলো, আশা করা হয়েছিল এই বিভাজন হবে সুশৃঙ্খল। মানচিত্রে আঁকা হলো বিভক্তি রেখা। সেনা ব্যান্ডের সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সেনা সদস্য ও সম্পদ- ভাগ হলো সবই। কিন্তু জনসংখ্যা লেনদেনের বিশাল, বিশৃঙ্খল ও সহিংস প্রক্রিয়া সমস্ত পরিকল্পনাকে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে ভেস্তে দিল। মারা গেল কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ। দেড় কোটি মানুষ হলো ঘরবাড়ি ছাড়া।

কয়েক মাসের মধ্যেই বিরোধ রূপ নিল আনুষ্ঠানিক যুদ্ধে। এই যুদ্ধ শেষ হলো সাবেক রাজ্য কাশ্মীর দুই ভাগে বিভাজিত হওয়ার মাধ্যমে। সেখানকার ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত হয়ে গেল স্থায়ী বৈরিতার বিষয়। এরপর আরও দুবার, অর্থাৎ ১৯৬৫ ও ১৯৭১-এ ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণোদ্যমে যুদ্ধে জড়ায়; যদিও সংক্ষিপ্ত ছিল যুদ্ধগুলো। দ্বিতীয় যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাভাষীদের গেরিলা বিদ্রোহে ভারত সহযোগিতা দেয়। জন্ম নেয় আরেকটি নতুন গর্বিত দেশ- বাংলাদেশ। কিন্তু কমপক্ষে ৫ লাখ বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার আগে এটি ঘটেনি। পশ্চিম পাকিস্তান নিষ্ঠুরভাবে বিদ্রোহ দমাতে গেলে এই বিপুল পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়।

এমনকি তুলনামুলক শান্ত সময়গুলোও শান্তিপূর্ণ ছিল না। নব্বইয়ের দশকে ভারতের কাশ্মীরিদের গেরিলা বিদ্রোহে সমর্থন দেয় পাকিস্তান। এই বিদ্রোহে কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানি সেনারা কার্গিল অঞ্চলের কিছু পর্বতচূড়া দখলে নেয়। পরে ভারত এসব অঞ্চল ফের নিজেদের দখলে নেয়। ২০০৩ সাল থেকে কাশ্মীরে বিরাজমান অস্ত্রবিরতি সত্ত্বেও পাকিস্তান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর বারবার ভারতে অনুপ্রবেশ থামেনি। পাকিস্তানের দাবি, ভারতও গোপনে নাশকতামূলক গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে।

তবে এই পারস্পরিক হেনস্তার মধ্যে বিশ্লেষকরা একটি প্যাটার্ন খুঁজে পান। যখনই উভয় দেশের রাজনীতিকরা শান্তির পথে কিছুটা অগ্রসর হন, তখনই যেন খুব নোংরা কিছু একটা ঘটে যায়। সাধারণত, এই চিরাচরিত ঘটনাচক্রের আবর্তন শুরু হয় কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাদের ওপর পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারীদের একটি হামলার মাধ্যমে। ফলে পাল্টা আক্রমণ করে ভারত। আর ওই হামলার ফলে পাকিস্তানও যেন জবাব দেওয়ার বাধ্যবাধকতায় চলে যায়। কয়েক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ঠিক এমনই একটি ঘটনাচক্র শুরু হয় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। এর শুরু সম্ভবত পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বাড়িতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক সারপ্রাইজ সফরের মাধ্যমে। এই আচমকা সফরের মাধ্যমে যতটুকু আশা প্রজ্জ্বলিত হয়েছিল তা কয়েকদিন বাদেই নিভু নিভু হয়ে যায়, যখন জিহাদি অনুপ্রবেশকারীরা ভারতীয় একটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।

আরেকদল আত্মঘাতী হামলাকারী আঘাত হানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সীমান্ত লাগোয়া শিবিরে। নিহত হয় ১৯ সেনা। ফলে ভারতে জন অসন্তোষ উঠে চরমে। এরই প্রেক্ষাপটে মোদি গতানুতিক প্রতিক্রিয়ার চেয়েও অনেক কঠোর জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাকিস্তানে পাঠান কমান্ডো টিম। অতীতে, ভারত পাল্টা হামলা চালালেও চুপ থাকতো। পিছু হটার সুযোগ থাকতো পাকিস্তানের। কিন্তু এবার মোদি সরকার পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে একঘরে করার চেষ্টা চালায়। পর্দার অন্তরালে উত্তেজনা নিরসনের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করে ভারত।

ভারতের ধৈর্যের সমাপ্তি বোধগম্য। পাকিস্তানের চেয়ে ছয়গুণ বড় জনসংখ্যা, আর ৮ গুণ বড় অর্থনীতি ভারতের। কিন্তু এরপরও ভারত দেখছে, যত বেশি উসকানি তারা দেয়, তার চেয়ে বেশি উসকানির শিকার তারা হয়। ২০১৪ সালে মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি দেয় ভারতের গতানুগতিক নিস্তেজ বিদেশ নীতি জোরদার করার। সামরিক ইতিহাসবিদ ও সাংবাদিক সুশান্ত সিং বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ভারত এবার শুধু পাল্টা জবাবই দিচ্ছে না, বরং সক্রিয় হয়ে উঠছে। এটি বেশ বড় ধরনের পরিবর্তন।’

কিন্তু মোদির এই যুদ্ধংদেহি মনোভাব বিপজ্জনক সংঘাত সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। ভারতের অন্যতম খ্যাতিমান চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবী প্রতাপ ভানু মেহতা লিখেছেন, ‘একটি রুটিন অভিযানের পর, বৈরিতা বাড়তেও পারে, না-ও পারে। কিন্তু প্রচার চালিয়ে অভিযান চালানোর পর, তার (মোদি) কেবল একটি বিকল্পই থাকে। সেটি হলো, বৈরিতা বাড়ানো।’

সাংঘাতিক কোনো সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার মতো বেপরোয়া ভারত-পাকিস্তান হোক আর না হোক, তাতে অত গা না দিলেও চলতো, যদি তাদের থাকতো কেবল প্রচলিত সামরিক শক্তি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তাদের আছে শতাধিক পারমাণবিক ওয়্যারহেড। সঙ্গে আছে সেগুলো নিক্ষেপের মতো ক্ষেপণাস্ত্র। নব্বইয়ের দশকে উভয় দেশ নিজেদের পারমাণবিক শক্তির কথা প্রকাশ করে। এরপর অনেকে আশাবাদী ভেবেছিলেন, এই ভারসাম্য উভয় দেশকেই মধ্যপন্থা অবলম্বনে উৎসাহিত করবে।

কিন্তু এই আশাবাদীরা আংশিকভাবে সঠিক প্রমাণিত হয়েছেন। ভারতীয়দের অভিযোগ, তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে। পাকিস্তান জানে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি আছে জেনেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি তাদের উসকানির বিপরীতে কড়াভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। চিন্তার কারণ হলো, ‘প্রথমে ব্যবহার না করা’র যে পারমাণবিক ডকট্রিন আছে, সেটি পছন্দ নয় পাকিস্তানের। বরং, দেশটি নিজেদের যুদ্ধাস্ত্রের অংশ হিসেবে স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক ওয়্যারহেড ইতিমধ্যে মোতায়েন করে রেখেছে। এসব অস্ত্র কোনো কারণে হাতবদল হলে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে নিজ দেশের নাগরিকরাই, এমন ঝুঁকি সত্ত্বেও এই উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তান।

প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার ডকট্রিনের পক্ষে ভারত। কিন্তু দেশটির সামরিক পরিকল্পনায় এমন দৃশ্যকল্পও অন্তভ্তুক্ত রয়েছে, যেখানে শত্রুপক্ষের ভূখণ্ড দখল ও জবাব দেওয়ার আগেই পাকিস্তানের আক্রমণের সামর্থ্য চুরমার করে দেওয়ার কথা বলা আছে।

ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে শব্দের চেয়ে ৫ গুণ গতিবেগসম্পন্ন ব্রহ্ম-৩। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ৩০০ কেজি ওজনের যেকোনো বিস্ফোরক পাকিস্তানের যেকোনো স্থানে নিক্ষেপ করতে সক্ষম এটি। ইসলামাবাদে ২ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যেতে পারবে ব্রহ্ম, লাহোরে এক মিনিটেরও কম সময়ে। আর সবচেয়ে খারাপ দৃশ্যকল্পে, অর্থাৎ পারমাণবিক হামলা হলেও ভারত মনে করে, পাকিস্তানের চেয়ে তাদের ৪ গুণ বেশি ভূখণ্ড থাকায় পারমাণবিক হামলা হজম করার সক্ষমতা তাদের বেশি।

তবে উভয় দেশই তর্জন গর্জন আর সামরিক আস্ফালন দেখাতে অভ্যস্ত হলেও, তারা জানে যে পুরোদমে যুদ্ধ শুরু হলে তার মূল্য হবে বেশ চড়া। অপরদিকে চীনের উত্থান, আফগানিস্তানে অব্যাহত অস্থিরতা এবং ডনাল্ড ট্রাম্পের অনিশ্চিত আমেরিকা- এসবের কারণে যেই অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে, তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও দৃশ্যত মনে করে, প্রয়োজন পড়লে পাকিস্তান ও ভারতকে সংঘাত থেকে টেনে সরাতে পারবে তারা।

কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের উচিত তাদের ৭ দশকের তিক্ত বিভক্তির কী মূল্য দিতে হয়েছে তা আরও বেশি খোলাখুলিভাবে স্বীকার করা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যুদ্ধ পরিচালনা ও সামরিক তৎপরতা বজায় রাখতে গিয়ে মানবপ্রাণ ও সম্পদ খরচ হয়েছে প্রচুর। শুধু তা-ই নয়। একই উপমহাদেশের দুই অংশের মধ্যে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে কী অপরিসীম লাভ হতো তাদের- সেটিও ক্ষতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। বর্তমানে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ২৫০ কোটি ডলার।

স্থায়ী শত্রুতার বাতাবরণে বিকৃত হয়েছে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। বিশেষ করে পাকিস্তানে। সেখানে উদ্ধত জেনারেলরা বারবার জাতীয় নিরাপত্তার নামে গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। পাকিস্তান সাংস্কৃতিকভাবেও ক্ষতির শিকার হয়েছে। নিজেদের ঘরানার উপমহাদেশীয় সংস্কৃতির বদলে দেশটি আরব বিশ্বের দিকে ঝুঁকেছে। প্রভাবিত হয়েছে ইসলামের কম সহিষ্ণু ভাবধারার দিকে।

অপরদিকে এই চিরস্থায়ী শত্রুতার ফলে ভারত নিজের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ থেকে সরে ঝুঁকেছে আইডেন্টি পলিটিকসে। ভারতের স্বভাবগত ভয় দেখে পাকিস্তানি জেনারেলরা আফগানিস্তানে নাক গলাতে উৎসাহী হয়েছে। আফগানিস্তানকে এই জেনারেলরা বিবেচনা করে নিজেদের কৌশলগত ‘আঙিনা’ হিসেবে।

এখানে কোনো বিদেশি শক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেওয়া যাবে না, এমনই নীতি তাদের। পাকিস্তানের ক্রমাগত উসকানির ফলে ভারত অপরদিকে নিজেদের ছোট ছোট প্রতিবেশীর সঙ্গে বদমেজাজি আচরণ করছে। তাই এ নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, উপমহাদেশের সামগ্রিক বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ হলো আঞ্চলিক বাণিজ্য। অথচ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই হার এক-চতুর্থাংশ বেশি।

(লন্ডনের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ইকোনমিস্টের ‘হোয়াই ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান হেইট ইচ আদার’ শীর্ষক নিবন্ধ থেকে অনুদিত। অনুবাদ করেছেন মাহমুদ ফেরদৌস।) এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে