মঙ্গলবার, ০৮ আগস্ট, ২০১৭, ০৬:০৮:০৩

রাত নামলেই সমুদ্র সৈকতে ‘সানি-ক্যাটরিনা’দের হাতছানি!

রাত নামলেই সমুদ্র সৈকতে ‘সানি-ক্যাটরিনা’দের হাতছানি!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সানি বেশি দামী। ক্যাটরিনা, দীপিকার বাজার খারাপ নয়। কারিনা, প্রিয়াঙ্কার সিজন ডাল। পছন্দ আপনার। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমুদ্র উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্রে ঢুকলেই এই সব নাম, এবং তাদের অফার আপনার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। চমকাবেন না।

আসলে অভিনেত্রীদের নামের আড়ালে অনৈতিক ব্যবসায়ী চক্র পর্যটক টানতে ফাঁদ পেতে রেখেছে। রাজ্যটির দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর কিংবা শংকরপুর পর্যটন কেন্দ্রে পুলিশি অভিযানের ভয়ে খারাপ ব্যবসায়ীদের রাখা হয় না। তাদের এজেন্টরা টোপ রাখে পর্যটকদের সামনে। তারপর অর্ডার মত সানি, ক্যাটরিনারা পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে।

তবে সবার দর এক নয়। সিজন অনুযায়ী ওঠানামা করে। পার্টি বা ক্লায়েন্ট অনুযায়ীও বটে। আবার সব সময় যে রাত ফুরোলেই বাত ফুরোয় এমনটা নয়। পর্যটকরা চাইলে দু’তিনদিনের দিঘা ভ্রমণে সর্বক্ষণের সঙ্গী হতে পারেন সানি, ক্যাটরিনা কিংবা প্রিয়াঙ্কারা।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপশি বাংলাদেশ ও ভিন জেলার নারীদের সংগ্রহ করে এক জায়গায় মজুত করা হয়। সেই জায়গাটি হল পশ্চিমবঙ্গের রামনগর। রামনগর বাজারের উপর একটি মিষ্টি দোকানের দোতলায় ‘গদিঘর’। সেখানে তো মধুচক্র চলছেই, পাশাপাশি চাহিদা মতো তাদের পাঠানো হচ্ছে মন্দারমণি, শংকরপুর, তাজপুরের ঠিকানায়।

বেশ কিছু কিশোরীও এই কাজে যুক্ত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে একটা এন্ট্রি ফি আছে। মিষ্টি দোকানের দোতলায় থাকা মহিলাদের সঙ্গ নেওয়ার আগে শুধু পছন্দ করতে হলে আগেই দিতে হবে ৪০টাকা। তারপর দেখানো হবে। পছন্দ হলে ঘন্টা হিসেবে নেওয়া হবে চার্জ।

মন্দারমণি, তাজপুর, শংকরপুর কিংবা দিঘায় আসা পর্যটকেরা হোটেল সঙ্গী জোগাড় করে দেওয়ার কথা বললে ফোন মারফৎ যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয় দেহ ব্যবসায়ী চক্রের পান্ডাদের সঙ্গে। তারাই হোয়াটঅ্যাপসের মাধ্যমে সুন্দরী মহিলাদের ছবি পাঠিয়ে দেয়। সেইসঙ্গে কোন মহিলার জন্যে কত টাকা খরচ পড়বে তা বাতলে দেওয়া হয়। তবে তারসঙ্গে যুক্ত হয় হোটেলের কমিশন। যে মহিলাকে পছন্দ হবে হোটেল এবং রুম নম্বর বলে দিলেই পৌঁছে যাবেন সেই মহিলা।

এখন আবার একটু পৃথক কায়দায় মধুচক্রের আসর বসানো হচ্ছে দিঘা, মন্দারমনির হোটেলের সভাগৃহে। কী সেই নতুন কায়দা? হোটেলের সভাগৃহে ডিনার, ককটেল পার্টির আয়োজন করা হয়। কিন্তু অভিযোগ আদতে তা নিষিদ্ধ পার্টি। কীভাবে চলে এই পার্টি? হোটেলের সভাগৃহ ভাড়া নেওয়া হয়। সেই সভাগৃহে সন্ধ্যার পরে স্বল্পবসনা নর্তকীদের নাচ দেখার ব্যবস্থা করা হয়।

কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার যুবতীদের বস্ত্রহীন হয়ে ড্যান্সও করে। সঙ্গে চলে নেশার ফোয়ারা। পার্টি চলাকালীন কোন যুবতীকে মনে ধরলেই সোজা রাত কাটানোর ফরমায়েশ। রাত যত বাড়ে ততই টাকা উড়বে, আলগা হতে থাকে নর্তকীদের পোশাক। এক সময় একেবারে আদিম ‘লুক’। জানিয়েছেন নিউ দিঘার এক হোটেল কর্মী।

অভিযোগ, সব দেখেও চুপ পুলিশ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, “দাদা সবই মাসোহারায় কাবু। পুলিশ ও প্রশাসনের গাফিলতির কারণে পর্যটন কেন্দ্রে এই খেলা দিনে দিনে বাড়ছে। তাছাড়া পুরানো দিঘায় ফড়েদের বাদ দিয়ে সন্ধ্যার পরে ‘খদ্দের’ ধরতে রাস্তায় নামেন এরা।

যদিও হোটেলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় এখন খুব বেশি মহিলাদের খদ্দের ধরার জন্যে রাস্তায় দাঁড়াতে দেখা যায় না। তবে পাহাড়ে অশান্তির কারণে দিঘায় পর্যটকের ঢল নেমেছে। ফলে এখন আগের থেকে রোজগারও বেড়েছে বলে দাবি অনৈতিক ব্যবসায়ীদের।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে