শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৭:৫০:০৮

একজন রোহিঙ্গা মায়ের করুন গল্প: সন্তানদের নিয়ে গাড়ির নিচে রাত কাটান নুরুন নাহার

একজন রোহিঙ্গা মায়ের করুন গল্প: সন্তানদের নিয়ে গাড়ির নিচে রাত কাটান নুরুন নাহার

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে সাম্প্রতিক সহিংসতার পর প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা শিশু এবং নারী এখনও টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়ের সন্ধানে ঘুরছেন। এক্ষেত্রে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন পুরুষ সদস্যহীন পরিবারগুলো। এমনই একজন রোহিঙ্গা নারীর নাম নুরুন নাহার। তিনি কোথাও থাকার জায়গা না পেয়ে সন্তানদের নিয়ে রাস্তার পাশে থেমে থাকা একটি বাসের নিচে শুয়ে রাত পার করেছেন।

বৃষ্টির কারণে কাদায় মাখামাখি পোশাক আর কাদা ভরা রাস্তায় এক হাতে সন্তানের হাত ধরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকা নুরুন নাহারের শুকনো চোখে-মুখে শুধুই বেঁচে থাকার আকুতি।

তিনি ইউএনএইচসিআর’কে বলছিলেন, ‘একটু বিশ্রাম নেয়ার জন্য আমাদের সবার আগে একটা জায়গা বা ঘর দরকার, তারপর দরকার চাল। কোথাও থাকার জায়গা না পেয়ে তাই রাস্তার পাশে সন্তানদের নিয়ে নিজের মতো করে একটি থাকার জায়গা বানিয়ে নিয়েছি।’

নাহারের মতো নতুন যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশ আসছেন, তাদের সবার জন্য পানি, খাদ্য, পোশাক এবং বাসস্থানের পাশাপাশি জরুরি ভাবে চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার ও ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী ক্যাম্পে ঠাঁই না পেয়ে নতুন আসা শরণার্থীরা যে যেখানে পারছেন সেখানে এভাবেই বসবাস শুরু করছেন। অন্য যারা রাস্তা পাচ্ছেন না, তারা পাহাড়ের পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে অস্থায়ী আবাস গড়েছেন।

গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অন্তত চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে এবং তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এদের মধ্যে সিংহভাগ শরণার্থী অস্থায়ী ক্যাম্পে ইতোমধ্যে এক মাস পার করেছেন।

শরণার্থীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে সম্প্রতি কুতুপলং শরণার্থী ক্যাম্পের ঠিক উল্টো দিকে আরেকটি জরুরি শরণার্থী আশ্রয় গড়ে তোলার কাজ শেষ করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। নতুন আসা শরণার্থীদের অনেকে এখন সেখানেই জায়গা পাচ্ছেন। এছাড়া শরণার্থীদের সহায়তা করতে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে তারা।

বিশেষ করে অস্থায়ী তাবু নির্মাণে প্লাস্টিক, দড়ি, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কাড়িগড়ি সহায়তা সরবরাহ করে শরণার্থীদের সহায়তা করছে ইউএনএইচসিআর।

গত ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের কয়েকটি সেনা ও পুলিশের চৌকিতে রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের হামলার অভিযোগে আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। হত্যা, ধর্ষণের পাশাপাশি গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় গত কয়েক সপ্তাহে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে