শুক্রবার, ০৬ অক্টোবর, ২০১৭, ০৯:৪৩:১২

যেভাবে চূড়ান্ত করা হয় শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম

যেভাবে চূড়ান্ত করা হয় শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ১৯০১ সালে পুরস্কারটি চালু হওয়ার পর থেকে গত বছর পর্যন্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও ৮৮১ জন্য ব্যক্তি জিতেছেন ভীষণ সম্মানজনক এ পুরস্কার। নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের বলা হয় ‘নোবেল লরিয়েট’।

যারা পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্যে মানবতার স্বার্থে কাজ করেন তাদেরকেই সাধারণত দেওয়া হয় এই সন্মান। পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, সাহিত্য ও অর্থনীতি বিষয়ে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা একই জায়গা থেকে করা হলেও শান্তিতে নোবেল ঘোষণার ক্ষেত্রে তা হয় না।

অন্যান্য ৫টি বিষয়ের নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা সুইডেনের স্টকহোম থেকে দেওয়া হলেও শান্তিতে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা করা হয় নরওয়ের অসলো থেকে। আর তার আগে সম্পন্ন করতে হয় কিছু প্রক্রিয়া।

নোবেলপ্রাইজ.ওআরজি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদানের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই এবং বিজয়ীর নাম ঘোষণার কাজটি করে থাকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী বাছাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। আর এ কমিটিকে নিয়োগ দেয় নরওয়ের পার্লামেন্ট স্টর্টিং।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি শুরু হয় মূলত আগের বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে। তখন মনোনয়ন দেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠায় নোবেল কমিটি। আমন্ত্রণপত্রে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন আহ্বান করা হয়।

এই যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমপি, মন্ত্রী), বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান, ইন্টারন্যাশনাল কোর্টস অব ল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, আইন ও ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক; শান্তি গবেষণা ইন্সটিটিউটের নেতা, পররাষ্ট্রবিষয়ক ইন্সটিটিউট; শান্তিতে নোবেল জয়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান; নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্য এবং নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের সাবেক উপদেষ্টারা।

সেপ্টেম্বরে আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পর পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ থাকে। তবে কেউ নিজেকে মনোনয়ন দিতে পারেন না। এ সময় পার হয়ে যাওয়ার পর যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তাদেরকে পরের বছরের জন্য বিবেচনা করা হয়।

যারা নির্ধারিত সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন সেগুলো থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। নোবেল কমিটি প্রার্থীদের কাজগুলো মূল্যায়ন করে ওই সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে। মার্চ থেকে আগস্টে উপদেষ্টাদের মত নেওয়া হয়। সংক্ষিপ্ত তালিকাটি কমিটির স্থায়ী উপদেষ্টারা পুনরায় মূল্যায়ন করেন।

অক্টোবরের শুরুতে নোবেলজয়ী বাছাই করা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম চূড়ান্ত করে নোবেল কমিটি। এ সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং সেখানে আপিলের সুযোগ থাকে না। এরপর নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। অক্টোবরে নাম ঘোষণা করা হলেও বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় ১০ ডিসেম্বর।

নরওয়ের অসলো থেকে নোবেলজয়ী তার পুরস্কার গ্রহণ করেন। নোবেল ফাউন্ডেশনের বিধি অনুযায়ী, নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন প্রক্রিয়ার তথ্য ৫০ বছরের আগ পর্যন্ত প্রকাশ করা যাবে না। ফলে কে কাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তা জানা যায় না।
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে