এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দিঘির পাড়ে খেলার মাঠ তৈরি হচ্ছে। মাঠ তৈরির জন্য ভাঙা পড়েছে হিন্দুদের নবান্নলক্ষ্মী মন্দির। বারোয়ারি পুজো যাতে বন্ধ হয়ে না যায় তার জন্য এগিয়ে এলেন গ্রামের মুসলিমরাই।
মন্দির নির্মানের জন্য তারা চাঁদাও তুলছেন। ধুমধাম সহকারে লক্ষ্মী মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল। কয়েকজনের জন্য বাকিদের এগিয়ে আসার এই ছবি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার ভাতারের রাজিপুর গ্রামে।
বামুনাড়ার অঞ্চলের রাজিপুরে প্রায় ৯০ শতাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ের বসবাস। গ্রামের মাঝখানে রয়েছে বড় একটি দিঘি। যার নাম মল্লিকদাস দিঘি। গ্রাম থেকে কমিটি বানিয়ে দিঘিতে মাছ চাষ করা হয়। গ্রামের সকলেই তার লভ্যাংশ পান। এই নিয়মেই মাছ চাষ হয়ে আসছে।
গ্রামবাসীরা জানান, এলাকায় খেলার মাঠ না থাকায় তারা পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন করেন। তারপর ঠিক হয় দিঘির পাড়ে খেলার মাঠ হবে। ইতিমধ্যে মাঠের কাজ প্রায় শেষের দিকে। দিঘির দক্ষিণ পাড়ে একটি মাটির ঘরে স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলি মিলে যৌথভাবে নবান্ন উৎসবে লক্ষীপুজো করতেন। কিন্তু মাঠ তৈরির কাজের জন্য মন্দির ভাঙা পড়ে।
গ্রামবাসী সাদরুল আলম, ডালিম শেখরা বলেন, আমাদের হিন্দু ভাইরা দীর্ঘদিন ধরে নবান্ন উৎসবে পুজো করে আসত। মাঠের জন্য পুরানো ঘর ভাঙা পড়ে। তাই গ্রাম থেকে সিদ্ধান্ত হয় পুজো বন্ধ করা যাবে না। মাঠের পাশে নতুন পাকা মন্দির নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
পাড়ায় অধিকাংশই জনমজুর। নিজেদের খরচে পাকা মন্দির তৈরি করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। গ্রামের সকলে সাহায্য না করলে হয়তো পুজো এবং মন্দির করা সম্ভব হত না। শনিবার মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
উপস্থিত ছিলেন বামুনাড়া পঞ্চায়েত প্রধান মনোয়ার ইসলাম শেখ, সাবেক বিধায়ক বনমালি হাজরাসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। এদিন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে গ্রামে ভোজের আয়োজন হয়। প্রায় তিন হাজার গ্রামবাসী একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন।
এমটিনিউজ/এসএস