এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: দেশে দেশে যুগে যুগে বিভিন্ন বিস্ময়কর প্রতিভার সন্ধান পাওয়া যায়। এবার এমনই বিস্ময়কর এক শিশুর সন্ধান মিলেছে মরক্কোয়। শিশুটির নাম অ্যাডাম মুহম্মদ আমের। যে কিনা মাত্র ৬ বছর বয়সে রপ্ত করেছে বিমান চালানোর জটিল কলাকৌশল। আর এই বয়সে বিমান চালানোর কৌশল দেখিয়ে আমের তাক লাগিয়ে দিয়েছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের বাঘা বাঘা বৈমানিকদের।
ভালো করে বুলি ফোটার পর থেকেই কম্পিউটারের প্রতি তীব্র আগ্রহী থাকা আমের ঢুকে পড়ে ইউটিউবে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে উড়ে বেড়ানো বিমানগুলো তাকে টানে। ইউটিউব-এ বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানের টেকঅফ থেকে ল্যান্ডিং- সব ধরনের ভিডিও দেখা শুরু করে সে। আর খুব দ্রুত রপ্ত করে ফেলে বিমান চালানোর সকল কলাকৌশল।
অক্টোবরের শুরুর দিকে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বাবা-মায়ের সঙ্গে মারাকাস থেকে আবুধাবি আসছিল আমের। মাঝ আকাশে পাইলটের সঙ্গে দেখা করতে চায় আমের। ৬ বছরের যাত্রীর ডাক শুনে একটু অবাকই হয়ে গিয়েছিলেন বিমানের ফার্স্ট অফিসার ক্যাপ্টেন সমীর ইয়াকলেফ।
বিমানের টেকঅফ থেকে ল্যান্ডিং- প্রতিটি ধাপই গড়গড় করে বলে যাচ্ছে ওইটুকু ছেলে! এবং প্রতিটি ধাপই নির্ভুল! এমনকি, আকাশে ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে বিমানকে কী ভাবে চালনা করতে হয়, কী কী পদক্ষেপ নিতে হয়, সে সবও আমেরের ঠোঁটস্থ।
হতবাক ক্যাপ্টেন তাকে নিয়ে বসান ককপিটেও। সেখানে বসে আমের বর্ণনা করে কী করে ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে বিমান সামলাতে হবে। তা-ও তুলে রাখেন মোবাইলে। সেই ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পরে তা নিয়ে শুরু হয় হইচই। মাত্র ৬ বছরের ছেলে কী করে এতটুকু বয়সে বিমান চালানোর মতো এত জটিল প্রযুক্তি রপ্ত করে ফেলল, তা নিয়ে হতবাক গোটা বিশ্ব। আমের এর আগে ককপিটে বসে বিমান চালিয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্নও কেউ কেউ করে ফেলেন।
এখানেই শেষ নয়, ইতিহাদ এয়ারওয়েজের কর্তাব্যক্তিদেরও কানে যায় ঘটনাটি। চলতি সপ্তাহে আবুধাবিতে পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আমন্ত্রণ জানানো হয় আমেরকে। ইতিহাদের পাইলটেরা যে পোশাক ও টুপি পরেন, ৬ বছরের ছেলের মাপে সে রকম পোশাক ও টুপি তৈরি করা হয়। আমেরকে সেই পোশাক পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এয়ারবাস ৩৮০ বিমানের সিমুলেটারে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যে সিমুলেটর থাকে, তা কার্যত বিমানের মতোই। টেকঅফ থেকে ল্যান্ডিং, আকাশে বিভিন্ন পরিস্থিতি কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয় ককপিট সিমুলেটরে। সেখানে বসে পাইলটরা অনুশীলন করেন। জুনিয়র পাইলটরা প্রশিক্ষণ নেন। আর এয়ারবাস ৩৮০ এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিমান। তার চারটি ইঞ্জিন। অন্য বিমানের থেকেও জটিল তার ‘অপারেশন’।
ইতিহাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা একটা দিন সেই সিমুলেটরে বসে নিখুঁত ভাবে সেই বিমান চালিয়ে গিয়েছেন আমের। ইতিহাদের ফ্লাইট অপারেশন-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন মাজেদ আল মারজুকি আমেরকে দেখে মুগ্ধ।
১৪ অক্টোবর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর