এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় অস্ত্র নির্মাণের দৌড় থেকে পিছিয়ে এলো আমেরিকা। এ জাতীয় অস্ত্র দিয়ে দেশ সহ গোটা বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষকে ধ্বংস করে দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে মার্কিন সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড বাজেটারি অ্যাসেসমেন্ট।
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আধুনিক যুদ্ধে একে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হচ্ছিল। মার্কিন সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড বাজেটারি অ্যাসেসমেন্ট মনে করছে, এই প্রযুক্তি স্মার্টফোনের মতোই অস্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে এক বিপ্লব সৃষ্টি করতে পারত।
তবে, সেই বিপ্লব পরিণাম আত্মঘাতীও হতে পারত। বর্তমানে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন বিশ্বের বহু পুরানো ধ্যানধারণা বদলে দিয়েছে। অতি উন্নত প্রযুক্তির তড়িত্-চৌম্বকীয় অস্ত্র ঠিক একই ভাবে ভবিষ্যতে যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা আমূল বদলে দিতে পারত বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
এই অস্ত্র তৈরি হলে তা হত প্রচণ্ড শক্তিশালী ইএমপি বা তড়িত্-চৌম্বকীয় কম্পাঙ্কযুক্ত একটি ডিভাইস। কোনও ক্ষেপণাস্ত্রে যুক্ত করে লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা চালালে তা থেকে অত্যুচ্চ শক্তিসম্পন্ন বিদ্যুত্-চৌম্বকীয় তরঙ্গ ক্ষেত্র তৈরি হত। আর তার প্রভাব প্রতিপক্ষের বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতির উপর হত মারাত্মক।
যেমন, এর প্রয়োগে যে কোনও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ভোল্টেজ প্রচণ্ড বেড়ে যাবে এবং সেগুলি একেবারে অকেজো হয়ে পড়বে। হামলা এত দ্রুততার সঙ্গে হবে যে, অকস্মাত্ ভোল্টেজ বেড়ে যাওয়া ঠেকানোর ব্যবস্থাও আর কাজ করবে না, যা ঘটবে তা হল এক প্রলয়ংকর শর্ট সার্কিট।
আর তার ফলস্বরূপ শত্রুপক্ষের কমান্ড সিস্টেম, কন্ট্রোল প্যানেল, কম্যুনিকেশন নেটওয়ার্ক এবং কম্পিউটিং ব্যবস্থাও একেবারে ভেঙে পড়বে। আধুনিক যুদ্ধে ইলেকট্রনিক বন্দোবস্তের উপর যে কোনও শক্তিশালী দেশের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা ও নজরদারির ক্ষমতা, আর সেইসঙ্গে সামরিক বল এতটাই নির্ভর করে যে, তার যদি দফারফা ঘটে, তাহলে একেবারে অন্ধের মতো অবস্থা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অস্ত্র নির্মাণ কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসার কারণ একটাই। কোনওভাবে যদি এই তড়িত্-চৌম্বকীয় অস্ত্র ব্যবস্থায় একবার গড়বড় ঘটত, তাহলে আগামী দুই বছরের মধ্যে আমেরিকার ৯০ শতাংশ মানুষই মারা পড়ে যেতে পারত।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জন ম্যাকফি সম্প্রতি এক ব্লগে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। অবশ্য দু' বছরে ২৭ কোটি মানুষ কীভাবে মারা পড়বে সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা এতে দেওয়া হয়নি।
তবে, আমেরিকা খাতায়-কলমে পিছিয়ে এলেও চিন ও রাশিয়া এই অস্ত্রপ্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ছাড়েনি বলে সন্দেহ পেন্টাগনের। মার্কিন বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি, বাস্তব বিপদের কথা না ভেবে ওই দুই দেশ যদি এই তড়িত্-চৌম্বকীয় সামরিক কর্মসূচি চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের আরও ভয়ংকর পরিণতি হতে পারে।
এমটিনিউজ/এসএস