রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭, ০৯:১৬:৩১

আবার মিলবে গুতুম মাছ

আবার মিলবে গুতুম মাছ

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা গুতুম মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদনে সফলতা লাভ করেছেন। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলছেন, গুতুম মাছের প্রতিপালন, কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা   উৎপাদনে সফলতা মেলায় প্রকৃতিতে যেমন এর সংরক্ষণ হবে, তেমনি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের প্রধান ড. খোন্দকার রশীদুল হাসান জানান, প্রথমে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে ছোট আকারের গুতুম মাছ সংগ্রহ করে স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের পুকুরে পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য মজুদ করা হয়। মে-জুন মাসের মধ্যেই গুতুম মাছগুলো প্রজননক্ষম হয়।

তিনি আরও জানান, গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, এদের পরিপক্ব স্ত্রী মাছের ডিম ধারণ ক্ষমতা প্রতি গ্রাম দেহের ওজনে ১৭০০ থেকে ৪৫০০ পর্যন্ত এবং প্রজননকাল এপ্রিল-সেপ্টেম্বর মাস। এসময় পুকুর থেকে মাছগুলোকে সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে পুরুষ ও স্ত্রী মাছ পৃথক করে হ্যাচারির সিমেন্টের ট্যাংকে পানি প্রবাহ দিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা রাখা হয়। পরবর্তীতে হরমোন ইনজেকশান প্রয়োগ করে ট্রেতে স্থানান্তর করা হয় এবং পানির ঝর্ণা প্রবাহিত করা  হয়। হরমোন প্রয়োগের ৮-৯ ঘণ্টা পর স্ত্রী মাছগুলো ডিম ছাড়ে। এরপর ১২-১৫ ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে রেণু পোনা বের হয়। রেণু পরিচর্যার পর ৮ দিন বয়স হলে নার্সারি পুকুরে ছাড়া হয় এবং সেখানে ২ মাসের মধ্যেই পোনাগুলো পুকুরে মজুদের উপযুক্ত হয়। ৮ থেকে ১০ মাসের মধ্যে খাবার উপযোগী হয়ে ওঠে গুতুম। উপকেন্দ্রে উৎপাদিত প্রায় ১০ সেন্টিমিটার আকারের গুতুম মাছ পাওয়া গেছে বলে জানান  ড. খোন্দকার রশীদুল হাসান।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, বাংলাদেশে গুতুম মাছটিকে মূলত খাবারের মাছ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও অ্যাকুরিয়ামে এর সৌন্দর্য্য বেশ ফুটে উঠে। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাহারি মাছ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানে নদী অববাহিকায়, খাল, বিল, পুকুরে এই মাছের দেখা  মেলে। চলন বিল, ছোট যমুনা নদী, হালতি বিলেও গুতুম মাছ পাওয়ার তথ্য রয়েছে। এছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট, দিনাজপুর এবং রংপুরের ছোট ছোট নদী থেকে সামান্য পরিমাণে মিলছে বলে জানা গেছে। মাছটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে প্রজনন করে থাকে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টার ফলে গুতুম মাছের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফলতা এসেছে। খুব শিগগিরই মৎস্য অধিদফতরের কাছে গুতুম মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও রেণুপোনা উৎপাদন প্রযুক্তিটি হস্তান্তর করার পর সারা দেশে তা ছড়িয়ে পড়বে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে