ট্রাঙ্কভর্তি ৩০০ বছরের পুরনো চিঠির সন্ধান!
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রায় তিন শ’ বছর আগের লেখা দুই হাজার ছয় শ’টি চিঠি পাওয়াগেল একটি জাদুঘরে। চামড়ার একটি ট্রাঙ্কে সুরক্ষিত অবস্থায় এই চিঠিগুলো পাওয়া যায়। নেদারল্যান্ডের হেগ শহরের একটি ডাক জাদুঘরে চিঠিগুলো এখনো সুরক্ষিত অবস্থায় আছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলেই আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল নেমে পড়বে ওই চিঠিগুলো পড়ার কাজে। তবে এই চিঠিগুলো সপ্তদশ শতকে লেখা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর এক প্রতিবেদনে এই খবর দিয়েছে।
গবেষকেরা আশা করছেন ওই সংগ্রহের মধ্যে সপ্তদশ শতকের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, গুপ্তচর, প্রকাশক, অভিনেতা, সঙ্গীতশিল্পীদের লেখা চিঠি রয়েছে। এর মাধ্যমে ওই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য চিত্র পাওয়া যাবে বলেও তাদের ধারণা।
প্রাথমিকভাবে চিঠিগুলো মধ্যহতে একটির অনুলিপি ও অনুবাদ করা হয়েছে। একজন নারী ওই চিঠিটি লিখেছিলেন হেগ শহরের এক ইহুদি ব্যবসায়ীর কাছে। সম্ভবত এক বন্ধুর পক্ষ হয়ে তিনি ওই চিঠিটি লিখেছিলেন। প্যারিসে চলে যাওয়া এক অপেরা শিল্পী হচ্ছে লেখিকার সেই বান্ধবী, যিনি গর্ভধারণ করার পর বাড়ি ফেরার জন্য ওই ব্যবসায়ীকে টাকা পাঠানোর অনুরোধ করেছেন। ইহুদি ব্যবসায়ী ছিলেন অনাগত সন্তানটির বাবা।
চিঠিতে ওই ব্যবাসায়ীর উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘তার সমস্যাটি আপনি হয়তো বুঝতে পারবেন। আমি তা লিখে বোঝাতে পারব না। সেটি আপনাকে বলাও বাহুল্য। বিষয়টি ভেবে দেখবেন এবং তাকে ফিরিয়ে এনে বাঁচতে সহায়তা করবেন।’
গবেষক দলের সদস্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড্যান স্টারজা স্মিথ জানান, চিঠিটিতে প্রাপক কর্তৃক গৃহীত হয়নি এমন চিহ্ন রয়েছে। চিঠিগুলোর মধ্যে এমন ছয় শ’টি চিঠি রয়েছে, যার পড়ার পরও এর তথ্য উদ্ধার করা যাচ্ছে না। বিশেষ স্ক্যানিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার পড়ে তথ্য উদ্ধার করা হবে বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে চামড়ার ট্রাঙ্কে প্রাপ্ত চিঠিগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে গবেষণা প্রকল্পের প্রধান ও গ্রোনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডেভিড ভ্যান ডার লিন্ডেন তার ব্যাখ্যা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক লেখায় তিনি বলেছেন, চিঠিগুলোর মধ্য দিয়ে ওই সময়ের জীবনযাত্রার বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রটেস্ট্যান্ট পরিবারগুলোর অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে।
ডার লিন্ডেন লিখেছেন, ‘সপ্তদশ সতকের শাসক চতুর্দশ লুইসের সময় সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের কারণে অনেক প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টান পরিবার অন্যত্র পালিয়ে যায়। অবশিষ্ট যারা ফ্রান্সে রয়ে যায় তাদের পালিয়ে যাওয়া আত্মীয়স্বজনদের সাথে যোগাযোগের জন্য চিঠিই ছিল একমাত্র মাধ্যম।’ এই চিঠিগুলোকে সেই সব বিচ্ছিন্ন পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের আবেগঘন সম্পর্কের দলিল বলে মনে করেন ডার লিন্ডেন।
১০ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�