রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:১৩:৪২

ছোট্ট এই বালক সালমান শাহ্'ই দেশীয় চলচ্চিত্রের যুবরাজ

ছোট্ট এই বালক সালমান শাহ্'ই দেশীয় চলচ্চিত্রের যুবরাজ

বিনোদন ডেস্ক: এটি একজন নায়কের ছোটবেলার ছবি। তাকে বলা হয় দেশীয় চলচ্চিত্রের বরপুত্র। চিত্রনায়কের সংজ্ঞাটাই যিনি বদলে দিয়েছিলেন। ফ্যাশনে, চলন-বলনে, আভিজাত্যে। ছিলেন নিজের সময়ের স্বপ্নের নায়ক। ক্ষণজন্মা এই অভিনেতার শূন্যস্থান পূরণ হয়নি আজও। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অকাল মৃত্যুর ২১ বছর পরেও।

তিনি কে? এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে বাকি নেই— সালমান শাহ্! ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ করে রূপালি পর্দায় তার আবির্ভাব হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। মাত্র চার বছরেই পৌঁছে গিয়েছিলেন খ্যাতির এভারেস্টে। পরের ইতিহাস সবারই জানা।

তারকা হওয়ার আগে সালমান শাহ্’র শৈশব কেমন ছিল? ছোটবেলায় কেমন ছিলেন তিনি? তার রহস্যময় মৃত্যু আর তুমুল জনপ্রিয় ক্যারিয়ারের কাছে ঢাকা পড়ে থাকে সেই অতীত।

অনেকেরই জানা, সালমান শাহ্ হলো পর্দা নাম। তার প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় কমর উদ্দিন চৌধুরী ও নীলা চৌধুরীর ঘর আলো করে তিনি জন্মেছিলেন ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টা ১০ মিনিটে। ওজন ছিল ১১ পাউন্ড। স্কুলে তাকে ডাকা হতো শাহরিয়ার নামে। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন তিনি। যে কোনও বিষয় একবার পড়লে দ্বিতীয়বার পড়া দরকার হতো না। প্লে গ্রুপ আর কেজি ওয়ানে ভর্তির আগেই ছড়াসহ পাঠ্য সবকিছুই ছিল তার মুখস্থ।

স্কুলে ভর্তি পরীক্ষার দিন মজার এক কাণ্ড ঘটিয়ে বসলেন ইমন। খাতা জমা নেওয়ার পর প্রিন্সিপ্যাল দেখলেন তার পুরো খাতায় একটি শব্দও নেই! উল্টো ইচ্ছেমতো আঁকিবুকি করে রেখেছেন। মাকে প্রিন্সিপ্যাল জানালেন, এই ছেলেকে ভর্তি করানো যাবে না। তিনি তখন পুরো বই মুখস্ত বলে দিলেন। এরপর বানানও ঠিকঠাক লিখতে পারায় প্রিন্সিপ্যাল তাকে বুকে জড়িয়ে নেন।

ঢাকায় কলেজের প্রিন্সিপ্যালের সঙ্গেও আরেকটা ঘটনা আছে। ততদিনে ইমন টিভি নাটকে অভিনয়ে নাম লিখিয়েছেন। একদিন শুটিং স্পট থেকে সুন্দর একটি টি-শার্ট পরে পরিচয়পত্র আনতে গেলেন কলেজে। কিন্তু ইউনিফর্ম না থাকায় প্রিন্সিপ্যাল পরিচয়পত্র দিলেন না। বাধ্য ছেলের মতো ইউনিফর্ম পরতে ১০ মিনিটের মধ্যে বাসায় চলে এলেন তিনি। সাদা শার্ট পরে মাথায় ঠেসে তেল দিয়ে কলেজের দিকে রওনা দিলেন।

চুলে তেল দেওয়া ছিল সালমান শাহ্’র দৈনন্দিন ব্যাপার। কোচিংয়ে পড়তে গেলে ঘরে ফিরতে মাঝে মধ্যে দেরি করতেন ইমন। কারণ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। মা রাগ করেছেন বুঝলেই তাকে খুশি করার জন্য জড়িয়ে ধরে মাথায় তেল লাগিয়ে দিতে বলতেন। অবশ্য চুলে মা তেল লাগিয়ে দিলে খুব মজা পেতেন তিনি।

ছোটবেলা থেকেই বড় হওয়ার অদম্য আকাঙ্ক্ষা ছিল সালমান শাহ্’র। বাসায় সবসময় বড় বড় জুতা পায়ে দিতেন। মায়ের জুতা পরে বলতেন— ‘মামণি, তোমার জুতা পরলাম।’ বাবার জুতা পরে বলতেন, ‘আব্বুজি পরলাম।’

সূত্র: সালমান শাহ্’র মা নীলা চৌধুরীর বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে