রবিবার, ০৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ১০:০৫:৫৪

কী এমন দারুণ সখ্য ছিল তাদের? সালমান শাহ বেঁচে থাকলেই গুলশানে বাড়ি পেতেন মতি!

কী এমন দারুণ সখ্য ছিল তাদের? সালমান শাহ বেঁচে থাকলেই গুলশানে বাড়ি পেতেন মতি!

বিনোদন ডেস্ক: এফডিসিতে প্রডাকশন বয়ের কাজ করেন মতিউর রহমান মতি। হয়তো তাকে প্রোডাকশন বয়ের কাজ করতে হতো না। নিয়তি অনেক কিছু বদলে দিতে পারে। হয়তো মতি এখন গুলশানের বাড়ির মালিক হয়ে থাকতেন। কিন্তু পড়ে আছেন এফডিসিতেই। করছেন এখনো সেই কাজ।

সালমান শাহ'র সাথে মতির ছিল দারুণ সখ্য। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে এফডিসিতে পা রাখেন মতি। মতির বয়স ৩৮। সালমান শাহ'ই তাকে গুলশানে বাড়ি করে দিতে চেয়েছিলেন। এমনটাই জানালেন মতি। সালমানের সাথে মতির স্মৃতি অনেক স্পষ্ট।

মতি বলেন, আমাকে সালমান শাহ খুব পছন্দ করতো। যখন তখন কাছে ডেকে নিতো। আমি গোসল করতাম কম। তিনি আমাকে জোর করে গোসল করিয়ে দিতেন। শরীর মুছিয়ে দিতেন। আমার প্রতি তার ছিল অসীম দরদ। শুটিং এর ফাঁকে ক্লান্ত হলে তিনি আমার পাশেই ঘুমিয়ে পড়তেন।

এফডিসি থেকে বের হলেই চার রাস্তার মোড়ের কর্নারে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। একবার জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিন-চার দিন বাসা থেকে বের হতে পারেননি। এফডিসিও যাওয়া হয়নি। সালমান শাহর সঙ্গেও তার দেখা হয়নি। সালমান শাহ কারো কাছ থেকে জানতে পারলেন মতি জ্বরে আক্রান্ত।

সালমান সেসময় ‘পিয়াসি’ ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু তারপরেও রাতে মতির বাসায় সালমান হাজির। মতিকে রাগ দেখালেন, কেন তাকে জানানো হয়নি বিষয়টি। কারণ সালমানের কাছে মতি যখন যা চাইতো তখন তাই দিতো। মতি বলেন, আমি সালমান ভাইয়ের সঙ্গে ১০-১২টি সিনেমায় প্রোডাকশনে কাজ করেছি। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

সালমানকে এফডিসিতে সবাই পছন্দ করতো জানিয়ে মতি বলেন, ভাইয়ের একটা জিনিস খারাপ ছিল। তিনি অনেক গাড়ি চালাতেন। এটা খুব ভয়ের বিষয় ছিল। সে সময় সবাই বলতো সালমান শাহ একদিন গাড়ি অ্যাকসিডেন্টেই মারা যাবেন।

মতি বলেন, আমি দেখতে মোটেও সুন্দর ছিলাম না। কাজের জন্য অপরিচ্ছন্নও থাকতে হতো। তারপরেও দেখা হলেই বুকে নিতেন সালমান ভাই। আমাকে অনেক আদর করতেন। গুলশানে যেখানে ওয়ান্ডারল্যান্ড ছিল তার পাশেই আমাকে বাড়ি করে দিতে চেয়ছিলেন।  সিরিয়াস ভাবেই সালমান ভাই বলেছিলেন, 'আনন্দ অশ্রু' ছবিটি মুক্তি পেলেই তোকে বাড়ি করে দেবো। আনন্দ অশ্রু ছবির মুক্তি পাওয়ার আগেই তো তিনি চলে গেলেন। আমার আর ঢাকায় নিজের বাড়ি হয়নি, হবে না।

মতিউর রহমান মতির মেয়ে মাদ্রসায় পড়েন। ছেলের বয়স দুই বছর তিন মাস। স্ত্রী গৃহিনী। থাকেন মগবাজার নয়া টোলাতে।প্রোডাকশনের বয়ের কাজ করেই জীবন চলে যায়। নতুন প্রজন্মের কেউ খঁজ না নিলেও মাঝে মাঝে চিত্রনায়ক রিয়াজ  ও চিত্রনায়িকা শাবনূর মাঝেমাঝে মতির খোঁজ নেন।
এমটি নিউজ/আ শি এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে