এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বজ্রপাত হলে লাশ চুম্বক হয়ে যায় বলে এলাকায় মানুষের মাঝে একধরনের রিউমার আছে। এ কারণে অনেকসময় মৃতদেহ চুরির আশঙ্কা দেখা যায়”। জেনে নিন, বজ্রপাতে মৃতদেহ চুরির আসল রহস্য।
এমনই আরেকটি ঘটনার খবর জানা যায় নাটোরের লালপুর উপজেলায় গত বছরের এপ্রিল মাসের শেষদিকে। বজ্রপাতে নিহত এক যুবকের মৃতদেহ চুরির আশঙ্কায় তার পরিবার তাকে গোরস্থানে কবর না দিয়ে বাড়ির আঙিনার ভেতর গরুর ঘরের পাশে মৃতদেহ কবর দেয়।
লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের পুলিশ ইন্সপেক্টর মো: সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে একধরনের ‘মিথ’ প্রচলিত আছে। বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় এ ধরনের আতঙ্ক নতুন নয়। কবর থেকে বজ্রপাতে নিহত নারী কিংবা পুরুষের মরদেহের কঙ্কাল চুরি যাওয়ার খবর পত্র-পত্রিকাতেও এসেছে।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে বজ্রপাতে বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। বছরের এ সময়টিতে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে বজ্রপাতও হচ্ছে ব্যাপকভাবে।কিন্তু এভাবে মৃতদেহ চুরির পেছনে কী কারণ রয়েছে?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, “এর পেছনে কারণ একধরনের মিথ্যা বিশ্বাস।”সোহেল মাহমুদ বলেন, “অনেকেই মনে করেন, বজ্রপাতে নিহত মানুষের শরীরে মূল্যবান জিনিস তৈরি হয়। তারা হয়তো ধারণা করে লোহার ভেতর দিয়ে ইলেক্ট্রিসিটি পাস হলে (প্রবাহিত হলে) যেভাবে লোহা চুম্বক হয়ে যায়, এক্ষেত্রেও সেরকম কোনকিছু হয়। কিন্তু এটা তো পুরোটাই অন্ধবিশ্বাস।”
এসব কারণেই অনেকসময় মানুষ মৃতদেহ চুরির চেষ্টা করে। গ্রাম্য অনেক কবিরাজ বা ওঝা’র ঝাড়ফুঁক কাজের জন্য এই ধরনের মৃতদেহের হাড়-গোড় দরকার মনে করে আর সে ধরনের কুসংস্কার থেকেও এই মৃতদেহ চুরির ধারণাটি চলে আসছে বলে অনেকেই মনে করেন।
সোহেল মাহমুদ জানান, আসলে ইলেকট্রিক শক খেয়ে মানুষের মৃত্যু হলে মৃতদেহ যেমন হয় বজ্রপাতে মৃত মানুষের মৃতদেহ ঠিক একইরকম হয়। কোনও পার্থক্য থাকেনা।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস