শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৯, ০৭:৪৮:৪৩

থানায় ঢুকে তরুণী বললেন ‘বিষ খেয়েছি, ওকে ছাড়া বাঁচবো না’

থানায় ঢুকে তরুণী বললেন ‘বিষ খেয়েছি, ওকে ছাড়া বাঁচবো না’

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : হন্তদন্ত হয়ে থানায় ঢুকে পড়লেন এক তরুণী। চোখে-মুখে উত্কণ্ঠার ছাপ। ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে সটান বললেন, “বিষ খেয়েছি। ওঁকে ছাড়া বাঁচবো না। বিয়ে করলে ওঁকেই করব!” 

বলেন কী? তরুণীর মুখে এমন কথা শুনে থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। সাত-পাঁচ না ভেবে তরুণীকে নিয়ে তিনি সোজা ছুটলেন হাসপাতালে। 

বর্তমানে ওই তরুণী পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত বলে জানিয়েছেনন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চন্দ্রকোনা থানার পিয়ারডাঙা গ্রামের ঘটনা। স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে নিয়ে ওই গ্রামেই থাকেন পেশায় দিনমজুর উত্তম বাগ। বড় মেয়ের বয়স বিশ বছর। তিনি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। 

ওই তরুণী পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, চাচাতো বোনের দেওরের সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তার।প্রেমিকের বাড়ি চন্দ্রকোনা থানারই পিংলাশ ভাতাড়া গ্রামে। দুই পরিবারের লোকজন তাদের সম্পর্কের কথা জানত।  

তরুণীর অভিযোগ, ‘তাঁর পরিবার ও প্রেমিক রাজি থাকলেও, বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল প্রেমিকের বাবা-মা।’ আরও অভিযোগ, প্রেমিকের বাবা মাকে মদত দিচ্ছে তারই ভাই-ভাবী। প্রেমিকের সঙ্গে অনেক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি।

তরুণীর কথায়, “আমি ওকে বিয়ে করতে চাই, আমরা দু’জনেই সাবালক।” প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়েই বিষ খেয়েছিলেন বলে পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন।

পুলিশকে ওই তরুণী জানান, শনিবার সকালে রেশন আনতে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বিষের বোতল। রাস্তাতেই সেটা খেয়ে নেন। তার পরই সোজা থানায় এসে হাজির হন। এ ছাড়া তার হাতে কোনও উপায় ছিল বলেও জানিয়েছেন তরুণী।

এই ঘটনায় গোটা গ্রামে শোরগোল পড়ে যায়। মেয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে সেটা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তরুণীর বাবা-মা। তারা বলেন, “ছেলের বাড়ি চাইলে আমরা চার হাত এক করে দিতে ইচ্ছুক।” 

পাশাপাশি দাবি করেন, ওঁদের দু’জনের সম্পর্কের কথা জানার পর ঘটনা ছেলেটিকে বলেছিলেন প্রয়োজনে খরচ দিয়ে দু’জনের রেজিস্ট্রি করে দেবেন। কিন্তু ছেলে ও তার পরিবার তাতে কোনও সম্মতি দেয়নি। 

দিনমজুরি করে কোনওক্রমে সংসার চালান উত্তম। তিনি বলেন, “ছেলেমেয়েকে পড়াশোনাও করাচ্ছি। তার উপর এ সব নিয়ে ভেবে আর কুল পাচ্ছি না। পুলিশই এখন ভরসা।”

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে