সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯, ০৮:০৯:০২

দিনের আলোতে অবিশ্বাস্য এক ঘটনা, অলৌকিকভাবে দাঁড়িয়ে গেল ঝড়ে উপড়ে পরা বটগাছ!

দিনের আলোতে অবিশ্বাস্য এক ঘটনা, অলৌকিকভাবে দাঁড়িয়ে গেল ঝড়ে উপড়ে পরা বটগাছ!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: দিনের আলোতে অবিশ্বাস্য এক ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায়। ঝড়ে উপড়ে পরা একটি বট গাছ কাটার সময় অলৌকিকভাবে অবিকল দাড়িয়ে গেছে বটগাছটি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার একডালা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকে প্রতি দিনই উৎসক জনতা গাছটি একনজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত যদু প্রামানিক ছোট বেলা থেকেই জ্বিনের প্রতি আশক্ত ছিলেন। মাঝে মধ্যেই তার উপর ভর করতো জ্বিন। প্রায় অর্ধশত বছর আগে জ্বিনে ভর করা অবস্থায় যদু প্রামানিক ছোট একটি বট গাছ নিয়ে এসে রোপন করেন। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে জ্বিন বা মাদারের গাছ হিসেবে পরিচিতি পায় বটগাছটি। জ্বিন বা মাদারের স্বরণে প্রতি বছর সেখানে মাদারের পালা গানের আসরও বসে। এছাড়া দুর দুরান্তরের লোকজন নানা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত ব্যধি দূর করতে ওই গাছে মানত করতো। অনেকের দাবি এই গাছে মানত করে অনেক লোকজন রোগ থেকে মুক্তিও পেয়েছে।

গত মাসে সারাদেশে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে গাছটি উপড়ে পার্শ্বে একটি পাকা ভবনের উপর পরে। এতে ওই ভবনের সিরি রুম এবং ছাদের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্তু হয়। কিন্তু গাছটি উপড়ে গেলেও মাদারের ভয়ে কেউ ডাল পালা পর্যন্ত কাটতে সাহস পায়নি। ফলে এক মাসেরও বেশী সময় ধরে গাছটি ওই অবস্থায় পরে থাকে। এর পর গাছ কাটা লেবার নিয়ে এসে গাছের ডাল পালা কাটতে থাকে। গাছের মাথার অংশ কাটার সময় হঠাৎ করেই গাছটি অবিশ্বাস্যভাবে অবিকল পূর্বের ন্যায় দাড়িয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, পরে থাকা গাছের উপর একজন লেবার দাড়িয়ে কাজ করছিল। কিন্তু গাছ দাড়িয়ে গেলেও লোকটি গাছ থেকে পরেও যায়নি এমনকি তার এতটুকু ক্ষতিও হয়নি। ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকেই প্রতিদিনই উৎসক জনতা ছুটে আসছেন গাছটি এক নজর দেখার জন্য।

তবে অনেকে মনে করছেন, গাছটি উপড়ে যাবার সময় ডাল পালার কারণে মাথার অংশ অনেক ভারী ছিল। সেগুলো কেটে দিলে গোরার অংশ ভারী হওয়ায় গাছটি হয়তো দাড়িয়ে গেছে। তবে একদম আগের ন্যায় অবিকল দাড়িয়ে যাওয়া, গাছের শিকর, গোড়ালি মিলে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন তারা।

গাছের পাশের বাড়ীর সুফিয়া বেওয়া (৫৫) জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি এই গাছ দেখছেন, গাছের পার্শ্বে টয়লেট ছিল তাদের। রাত-বিরাত পর্যন্ত সেখানে চলা চল করলেও কোন আলামত দেখতে পাননি তারা। তবে সেখানে লোকজন মানত করতো, প্রতিবছর মাদারের পালা গান বসে বলে জানান তিনি।

ওই গ্রামের বৃদ্ধ হেকমত আলী (৬০) জানান, গাছটি অবিকল দাড়িয়ে যাওয়াটা একদম অস্বাভাবিক এবং অলৌকিক। গাছের তদারকিকারী ও মাদারের পালা গানের আয়োজক সুরজান বেওয়া (৭৫) ও পুটি বেওয়া (৬২) জানান, ওই গাছে মাদার বাস করে। প্রতি বছরই গাছের নিচে মাদার স্বরণে পালা গান করতে হয়, না করলে অনেক সমস্যা হয়।

তারা যুক্তি দিয়ে বলেন, একশত জন লোক এসেও গাছটি খাড়া করতে পারবে না। যদিও পারে তাহলে অবিকল দাড়িয়ে রাখার ক্ষমতা নেই। তাদের পূর্ণ বিশ্বাস, গাছটি মাদারই দ্বার করে রেখেছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন এগুলো কুসংস্কার। আধুনিক যুগে এসব ধ্যান-ধারণার কোন ভিত্তি নেই।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে