বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৬:১২:৪৫

চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েও সফল হয়েছেন যারা

চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েও সফল হয়েছেন যারা

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: মনে করুণ আপনি একজন চাকরিজীবী। হঠাৎ অফিসে এসে শুনতে পেলেন আপনার স্বপ্নের চাকরিটাই চলে গেছে। যদি এমন কোন ঘটনা আপনার জীবনে সত্যি সত্যিই ঘটে, তাহলে আপনি তখন কী করবেন? রেগে যাবেন? কারণ জানতে চাইবেন? ভেঙে পড়বেন? নাকি অফিস থেকে মাথা নত করে বেরিয়ে যাবেন? আসলে পৃথিবীতে শুধু আপনাকেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়নি। ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যায় আপনার মতো আরও বহু মানুষের চাকরি চলে গেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভেঙে পড়েছেন। আবার কেউ মাথা উঁচু করে বেছে নিয়েছেন নিজের পথ। এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে। আর এমন চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া সফল মানুষগুলোকে নিয়েই এই প্রতিবেদন! ১. থমাস এডিসন এডিসন তখন প্রেসে রাতের শিফটে দায়িত্ব পালন করতেন। তবে কাজের পাশাপাশি চালাতেন নিজের নানারকম বৈজ্ঞানিক গবেষণাও। সবটা ঠিকঠাকই চলছিল। তবে ১৮৬৭ সালের সেই রাতটার কথা একটু আলাদা। সেই রাতে রাসায়নিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সময় হঠাৎ করে হাত থেকে সালফিউরিক এসিড পড়ে যায় এডিসনের আর সেটা গড়িয়ে যায় বসের টেবিলের নীচ অব্দি। ফলাফল? পরদিন সকালেই তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁকে কাজ থেকে। এর পরেও একদম ভেঙে না পড়ে নিজের গবেষণা চালিয়ে যান এডিসন আর দু’বছর পর নিজের প্রথম আবিষ্কারের পেটেন্ট নেন। ২. হিলারি ক্লিনটন ওয়েলসলি কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে বেরোবার পর আলাস্কার ভালডেজে স্যামন ক্যানারিতে কাজ নেন হিলারি ক্লিনটন। বারবার তাকে মাছের প্রক্রিয়াজাতকরণের নানা জায়গা থেকে বের করে নতুন কোন জায়গায় বসানো হয়। কিন্তু কোনটাতেই টিকতে পারেননি তিনি। শেষ অব্দি মাছের গুনগত মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন হিলারি। ফলে পরদিন সকালেই বেরিয়ে আসতে হয় অফিস থেকে। আর তারপর? তারপরের গল্পটাতো সবারই জানা। আমেরিকার এই রাজনীতিবিদকে কে না চেনে? ৩. স্টিভ জবস: তার জন্ম ফেব্রুয়ারি ২৪, ১৯৫৫ এবং মৃত্যু ৫ অক্টোবর ২০১১সালে। যুক্তরাষ্ট্রের একজন উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবক। তাকে পার্সোনাল কম্পিউটার বিপ্লবের পথিকৃৎ বলা হয়। বিল গেটস আর ওয়াল্ট ডিজনির নাম বিবেচনায় রেখে বলা যায় বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালি, প্রতিভাবান আর সফল প্রযুক্তিক ভাবনার অধিকারী হচ্ছেন স্টিভ জবস | তিনি স্টিভ ওজনিয়াক এবং রোনাল্ড ওয়েন-এর সাথে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে অ্যাপল কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি পিক্সার এ্যানিমেশন স্টুডিওস-এরও প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ১৯৮৫ সালে অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের সদস্যদের সাথে বিরোধে জড়িয়ে তিনি অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের থেকে পদত্যাগ করেন এবং নেক্সট কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৬ সালে অ্যাপল কম্পিউটার নেক্সট কম্পিউটারকে কিনে নিলে তিনি অ্যাপলে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৯৫ সালে টয় স্টোরি নামের অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। ৪. ওয়াল্ট ডিজনি ডিজনির প্রতিষ্ঠাতা ওয়াল্ট ডিজনিকে ১৯১৯ সালে তার তখনকার কর্মস্থল কানসাস সিটি স্টার নিউজপেপার থেকে বের করে দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল যে, তিনি যথেষ্ট কল্পনাশক্তি আর নতুন চিন্তার অধিকারী নন। তবে এটাই শেষ নয়। এরপর লাফ ও গ্রাম নামে একটি অ্যানিমেশন স্টুডিও খোলেন তিনি। যেটা একেবারেই দেউলিয়া হয়ে যায়। তবে গল্পটায় পরিবর্তন আসে যখন ডিজনি আর সেই সঙ্গে মিকি মাউস আর ডিজনিল্যান্ডের মতন কিছু চমৎকার জিনিস উপহার দিয়ে ২৩ বার অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড জিতে নেন এই মানুষটি। ৫. জে. কে রাওলিং লন্ডনের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অফিসে কাজ করতেন জে. কে রাওলিং। তবে সেখানে বেশিরভাগটা সময় গল্পের নতুন ধারণা নিয়েই দিন কেটে যেত তার। অফিসের কম্পিউটারে একগাদা গল্প লিখে ভরিয়ে ফেলতেন তিনি। যেটা কিনা ধীরে ধীরে সহকর্মীদের অভিযোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং ফলাফল হিসেবে বরখাস্ত হন তিনি। তবে থেমে না গিয়ে আবার বই লেখায় মন দেন রাওলিং। আর সাফল্য পেয়ে যান খুব সহজেই। বর্তমানে তাঁকে পৃথিবীর সবচাইতে সফল লেখক মনে করা হয়, যার কাছে ব্রিটেনের রানির চাইতেও বেশি সম্পদ আছে। ৬. ম্যাডোনা ১৯৭৯ সালে সিটি পাংকের সঙ্গে পরিচয়ের আগে ম্যাডোনাকে যেতে হয়েছে প্রচন্ড কষ্টকর একটা জীবনের ভিতর দিয়ে। কেরিয়ারের শুরুতে টাইমস স্কয়ারে ডানকিন ডোনাট নামের একটি দোকানে কাজ নেন তিনি। একদিন পরেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয় সেখান থেকে ক্রেতার ওপর জেলি ছিটিয়ে দেওয়ার জন্যে। পরবর্তীতে আরও বেশকিছু কাজ হারান এই গায়িকা। তবে মনকে ভেঙে যেতে দেননি এই গায়িকা। আর তাই তো আজকে তিনি এতটা সফল। ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪ডটকম/জুবায়ের রাসেল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে