এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তুরস্কের পশ্চিম উপকূলের বডরামে ভেসে আসা সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির নিথর দেহের সেই ছবি তুলেছিলেন এক নারী তুর্কি ফটোসাংবাদিক। যেই ছবিটি পশ্চিমা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর টক অব দ্য ওয়ার্ডে পারিণত হয় সেটি শরণার্থীদের দুর্দশার মূর্তপ্রতীক দয়ে দাড়ায়। ঝড় বয়ে যায় তামাম দুনিয়া।
একটি ছবিটি গোটা পৃথিবীকে শোকাহত করে কাদিয়েছে এবং বিশ্ববিবেককে আসামীর কাঠগড়ায় দাড়করিয়েছে। কপাট খুলেছে ইউরোপীয় দেশগুলোর। যে দেশগুলোতে ঢুকতে না দেয়ার কারণে আয়ানের মতো হাজারো শরণার্থীর জীবন ঝড়ে গেছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শরণার্থী নীতিতে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। তবে কে ওই ছবিটি তুলেছেন তা হয়ত জানেন না অনেকেই।
সৌভাগ্যবান সেই নারী ফটোসাংবাদিকের নাম নিলুফার দেমির। তিনি বিশ্ব মিডিয়ায় তেমন একটা পরিচিত নন। তুরস্কের দোগান নিউজ এজেন্সিতে (ডিএইচএ) কাজ করেন দেমির। তিনি জানান, তিনি ১৫ বছর ধরে এজিয়ান সাগর সংলগ্ন মুগলা প্রদেশ দিয়ে অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে কাজ করছেন।
তুরস্কের মুগলা প্রদেশের বদরুম উপকূলের ৪ কিলোমিটার দূরেই গ্রিসের কোস দ্বীপ। এই অঞ্চল দিয়ে বেশ সহজেই নৌপথে গ্রিসে পৌঁছানো যায়। অভিবাসন প্রত্যাশীরা তাই বেশিরভাগ সময় ইউরোপে প্রবেশে এ পথটিই বেছে নেন।
দেমির জানান, গত বুধবার যথারীতি ‘ইউরোপীয় শরণার্থী সঙ্কটের’ চিত্র ক্যামেরাবন্দী করতে গিয়েছিলেন তিনি। গ্রিস উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টারত পাকিস্তানী শরণার্থীদের একটি দলের ছবি তোলার সময় সৈকতে এক শিশুর নিথর দেহ পড়ে থাকার খবর পান।
এরপর ৩ বছর বয়সী আয়লান কুর্দির ছবি তোলেন তিনি। আয়লানের লাশের ১০০ মিটার দূরেই পড়ে ছিল তার ভাই গালিপের (৫) লাশ। এ সময় ছবি তোলা ছাড়া মৃত ওই শিশুদের খবর জানানোর আর কোনো উপায় ছিল না বলে উল্লেখ করেন দেমির।
দেমির বলেন, ‘লাইফজ্যাকেট ছাড়া পানিতে ডুবে মরা শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখে মর্মাহত হই। বিষয়টি আমাদের বেশ কষ্ট দেয়।’ তবে কর্মজীবনে এ ধরনের বহু মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেমির।
তিনি জানান, ২০০৩ সাল থেকে বদরুম উপকূলে কাজ করছেন। এ দীর্ঘ সময়ে বহু শরণার্থীকে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে ও লাশ হয়ে পড়ে থাকতে দেখেছেন তিনি। সূত্র: হারিয়েত
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস