শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৬:২৬:৫৬

ভালোবাসার হাটবাজার!

 ভালোবাসার হাটবাজার!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : কেনাকাটার জন্য বাজারের অভাব নেই। মাছের বাজার, গরুর বাজার, নানা পণ্য কেনার বাজার থেকে শুরু করে সব বাজারই বিশ্বে বিদ্যমান। কিন্তু কখনো কি শুনছেন প্রেম বা ভালোবাসার বাজারের কথা? শুনতে অবাক লাগলেও ভিয়েতনামের আদিবাসী অধ্যুষিত পর্যটন এলাকা সাপায় বছরের বিশেষ বিশেষ শনিবার রাতে বসে এমনই এক বাজার। যেখানে গিয়ে পর্যটকরা যেমন খুঁজে নিতে পারেন মনের মানুষ, তেমনি স্থানীয়রাও বেছে নিতে পারেন পছন্দের জীবনসঙ্গীকে। ভিয়েতনামের পাহাড়ি এলাকায় ছোট্ট একটি গ্রাম সাপা। গ্রামটি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এ গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ প্রেমবাজার বা লাভ মার্কেট। এ বাজারে গিয়ে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন অনেকে। খুঁজে পেয়েছেন নিজেদের জীবনসঙ্গী। এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হমং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত এ প্রেমের হাট। তাদের রীতি অনুযায়ী বিশেষ কোনো শনিবার রাতে সাপায় বসে প্রেমের হাটটি। এটি হমং আদিবাসী সংস্কৃতির একটি অংশ। এ হাটে গিয়েই অনেক হমং আদিবাসী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এটি তাদের কাছে স্বর্গীয় এক স্থান। বেহালাবাদক হমং আদিবাসী জিয়াং এ ভ্যাংয়ের বয়স এখন ৫০ বছর। ৩০ বছর আগে প্রথমবারের মতো তিনি প্রেমবাজারে যান। সেখান থেকে পছন্দ করা নারীর সঙ্গে সুখেই কাটাচ্ছেন দাম্পত্য জীবন। তার মতে, সেখানে তিনি গিয়েছিলেন সুন্দরী কোনো মেয়ের খোঁজে। প্রথমেই নজরে আসে একজন। তাকে দেখে বেহালা বাজাতে থাকেন তিনি। যদি তার বাজনা ও তাকে পছন্দ হয়, তাহলে যে কেউ তার জীবনসঙ্গিনী হতে পারে। সেই থেকে শুরু। জিয়াং এ ভ্যাং বলেন, আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, তাকে পেয়েছিলাম। আমি মনে করি, সে-ও সৌভাগ্যবতী। কারণ সে-ও আমাকে পেয়েছে। আমরা খুব সুখেই আছি। গত কয়েক বছরে সাপায় বেড়েছে পর্যটকদের আগমন। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালে সেখানে পর্যটকের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ লাখ ৬০ হাজার। ২০১৩ সালে তা বেড়ে ১২ লাখে দাঁড়ায়। প্রেমবাজারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ভাং থি জো বলেন, এটি আমার কাছে খুবই দারুণ। এখান থেকেই আমি একজন ভালো স্বামী খুঁজে পেয়েছি। সাপার তরুণ সম্প্রদায় বা পর্যটকরা প্রেমবাজারে যান সাময়িক আনন্দের জন্য এমন অভিযোগ জোর। সেখানে তারা বন্ধুর খোঁজে যান। কিন্তু হমং আদিবাসী প্রথা অনুসারে আমি চাই, আমার ছেলেমেয়েরা সেখান থেকে খুঁজে আনুক স্বামী বা স্ত্রী। লি থি মাই বলেন, আগে কাউকে পছন্দ করতে সেখানে কেউ বাঁশি বাজাত, তখন মেয়েটি ঘর থেকে বেরিয়ে আসত। কিন্তু এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল। আগের মতো আর নেই। আমি চাই, ২০ বছর আগের নিয়মে সব হোক। তিনি মতে, প্রেমবাজার এখন তামাশায় পরিণত হয়েছে। আগে এই ভালোবাসার বাজার ছিল কেবলই স্থানীয়দের জন্য। কিন্তু এটি এখন এক ধরনের বাজারে পরিণত হয়েছে। সবাই টাকার জন্য আসে। মনিহারি দ্রব্যের মতো ভালোবাসা বেচাকেনা হয়। ১৯ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে