বুধবার, ০২ অক্টোবর, ২০১৯, ০৯:১৬:১১

চাঁদপুর ট্রায়াঙ্গেল : ভয়ঙ্কর ওই মৃত্যুকূপে পড়লে আর হদিস মেলে না

চাঁদপুর ট্রায়াঙ্গেল : ভয়ঙ্কর ওই মৃত্যুকূপে পড়লে আর হদিস মেলে না

চাঁদপুর থেকে : বারমুডা ট্রা'য়া'ঙ্গেল যা শ'য়তা'নের ত্রিভূজ নামেও পরিচিত, আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চল, যেখানে বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ র'হ'স্য'জনক ভাবে নি'খোঁ'জ হওয়ার কথা বলা হয়।

ছোটবেলা থেকে শুনেছিলাম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর কথা। যাওয়া হয়নি কখনও আটলান্টিক মহাসাগরে। কিন্তু দেখলাম চাঁদপুর ট্রা'য়া'ঙ্গে'ল। চারপাশ থেকে প্রবাহিত তী'ব্র স্রো'ত, মাঝে ভ'য়'ঙ্ক'র ঘূর্ণিপাক। ভ'য়'ঙ্ক'র ওই ঘূর্ণিপাকে কিছু পড়লে তার আর হদিস মেলে না।

এমনকি বড় বড় যাত্রীবাহী লঞ্চও তলিয়ে গেছে এখানে, যেগুলোর সন্ধান কোনোদিনই আর পাওয়া যায়নি। বলছি চাঁদপুরের ত্রিনদীর সঙ্গমস্থলের কথা, যা স্থানীয়ভাবে কোরাইলার মুখ নামেও পরিচিত। পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া তিন নদী এসে মিলেছে এখানে।

নদীগুলো তিনদিক থেকে প্রবাহিত হয়ে মিশে যাওয়ায় সেখানে পানির বিশাল এক ঘূ'র্ণি'গ'র্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই ট্রায়াঙ্গেলে পড়েই নি'খোঁ'জ হয়েছে শত শত মানুষ, লঞ্চসহ কার্গো কিংবা ট্রলার। তিন নদীর এ স'ঙ্গ'মস্থল যেন এক মৃ'ত্যু'কূ'প।

মোহনাটি নদীর একেবারে তীরে অবস্থিত। সাধারণত নদীর তীর অগভীর থাকে। তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, নদীর তীরে হওয়া স্বত্ত্বেও এই মোহনা অনেক গভীর। বর্ষাকালে এটি রূপান্তরিত হয় মৃ'ত্যু'কূ'পে। পানির ভ'য়'ঙ্ক'র ঘূর্ণি দেখে মানুষের মনে শিহরণ জাগে। এই মোহনা নিয়ে লোকমুখে অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে। 

জনশ্রুতি আছে, এই মোহনা এক ছেলের অভিশাপে সৃষ্টি হয়েছে। সে হয়তো হাজার বছর আগের কথা। তখন মোহনাস্থলে কোনো নদী ছিল না। ছিল ছোটখাটো বাজার, হোটেল আর দোকানপাট। নদী ছিল কয়েক কিলোমিটার দূরে। একদিন বিকেলে ছোট এক দ্ররিদ্র ছেলে একটি হোটেলে গিয়ে খাবার চায়। 

হোটেলের মালিক তাকে তাড়িয়ে দেয়। ছেলেটি পুনরায় খাবার চাইতে গেলে তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। ছেলেটি আবারও ওই হোটেলে যায়। এবার হোটেলের লোকটি রেগেমেগে তার গায়ে গরম তেল ছুড়ে মারে। অসহ্য য'ন্ত্র'ণায় চিৎকার করে কাদঁতে কাঁদতে ছেলেটি চলে যায়। 

ওই রাতেই হোটেল অবধি কয়েক কিলোমিটার জায়গা নদীর অতলে হারিয়ে যায়। তৈরি হয় মোহনা। ওই ঘটনার বহু বছর পর ওই ঘূর্ণিপাকে পড়ে একটি লঞ্চ ডুবে যায়। তখন ডুবুরিরা লঞ্চের সন্ধানে নদীর তলদেশে গিয়ে দেখে একটি ছোট ছেলে চেয়ারে বসে আছে। ঘটনাগুলো আদৌ সত্যি কি-না তার কূল-কিনারা নেই। 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াস বলেন, মোহনায় দু'র্ঘ'ট'না প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। জেলে নৌকা, মালবোঝাই ট্রলার ও যাত্রীবাহী ট্রলার প্রায়ই দু'র্ঘ'টনার শি'কার হচ্ছে। আমরা এসব দু'র্ঘ'ট'না এড়াতে সর্বদা কাজ করছি। 

তিনি বলেন, যতদিন ডুবচর ও বিপরীত পাশের চরগুলো খনন করা না হবে, ততদিন এখানে স্রোত কমবে না। স্রো'তের কারণে শহর রক্ষা বাঁধও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন হলে এখানে দু'র্ঘ'টনা কমে আসবে। এদিকে বিপরীত পাশের চর জেগে ওঠায় পদ্মা নদীতে ইলিশ ঢুকতে পারছে না। এজন্য ইলিশ আহরণও হু'ম'কিতে রয়েছে। 

চাঁদপুর নৌ থানার ওসি মো. আবু তাহের বলেন, মোহনাটিতে সবসময়ই প্রবল ঘূ'র্ণি স্রো'ত বয়ে যেতে থাকে। যার কারণে নৌযানগুলো দু'র্ঘ'টা'নার শি'কা'র হয়। এখানে কোনো দু'র্ঘ'ট'না ঘটলে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করি। এছাড়া, ঝুঁ'কি কমাতে এ স্থানে স'ত'র্ক'তা জারি করা হয়। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে