এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এই ছবিটিতে যুদ্ধের সর্বস্বহারা সিরীয় শরণার্থীদের নিদারুণ অসহায়ত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে। নিজ দেশে জীবন-মরণ খেলা। বেঁচে থাকার জন্য সাগর পাড়ি দিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়া। সেখানেও কড়া নাড়ে মৃত্যু এবং আশ্রয়ের অনিশ্চয়তা। তাই মৃত্যুই এখন নিয়তি হয়ে দাড়িয়েছ সিরীয়দের।
এক সিরীয় ছোট্ট শিশুর প্রাণহীন দেহের ছবি। তুরস্কের সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসেছে তার দেহটি। বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে মৃত এই শিশু শরণার্থী। পশ্চিমা দেশগুলোতে ঝড় তুলেছে সে। সমালোচনা শুরু হয়েছে। এরপরও কী ইউরোপীয়দের হৃদয় গলবে না? ইউরোপীয় দেশগুলো আশ্রয় দিতে অনীহা ও গড়িমসির কারণেই এভাবেই জলে-স্থলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে শরণার্থীরা।
ছবিতে দেখা যায়, তুরস্কের প্রধান পর্যটন রিসোর্টে শিশুটি উপুড় হয়ে পড়ে আছে। অন্য হাজারো লোকের মত সেও ইউরোপে পাড়ি দিতে চেয়েছিল।
লাল টি শার্ট এবং নীল শর্ট পরা ৩ বছর বয়সী শিশুটির নাম আয়লান কুর্দি। সিরিয়ার কোবানি শহর থেকে এসেছে সে। ধারণা করা হচ্ছে, এই শিশুটি সেই ১২ সিরীয়র একজন যারা গ্রিসে পৌঁছার চেষ্টাকালে নৌকাডুবিতে মারা যায়। তার বড় ভাই ৫ বছর বয়সী গালিপের মহদেহও পাওয়া গেছে সৈকতের আরেকটি অংশে।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী সংবাদপত্র ইন্ডিপেনডেন্ট মন্তব্য করেছে ‘সৈকতে ভেসে আসা মৃত সিরীয় শিশুর এই অসাধারণ শক্তিশালী ছবিও যদি শরণার্থীদের সম্পর্কে ইউরোপের মনোভাবে পরিবর্তন আনতে না পারে তবে আর কীসে পারবে?’ গোটা ইউরোপজুড়ে একই প্রশ্ন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
তুরস্কের কোস্টগার্ড জানায়, বুধবার গ্রিসের এজিয়ান দ্বীপ থেকে পৃথক সময়ে যাত্রা শুরুর পর দুটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে নিহতদের মধ্যে ৫টি শিশু ও একজন নারী রয়েছেন। ১৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শিশু আয়লানের ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে। এসেছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। অনেকেই শরণার্থী সম্পর্কে তাদের সরকারের আশু পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আগ্রাসন, গৃহযুদ্ধ ও সহিংসতা প্রেক্ষাপটে বহু লোক এখন ইউরোপে পাড়ি জমাতে চেষ্টা করছে। ইউরোপের দেশগুলো তাদের আশ্রয় দেবে কিনা কিংবা কতজনকে নেবে তা নিয়ে ২৮ সদস্যের জোটে তীব্র বিতর্ক চলছে। সূত্র: আল-জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে