এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমাদের দেশে অনেকক্ষেত্রেই বিনয়কে ভাবা হয় দুর্বলতা, বদমেজাজকে ব্যক্তিত্ব। তাই তো বদমেজাজির আশ্রয় নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়েন অনেকে। যদিও দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেতে বদমেজাজি ব্যক্তিরা হেরে ভূত হন। এগিয়ে যান তারাই, যাদের সুমিষ্ট ব্যবহার, বিনয়ী স্বভাব মন ছুঁয়ে যায়। নারীকে ইমপ্রেস করার বেলাতেও কিন্তু এই সুমিষ্টভাবটাই বেশি নম্বর পায়।
বদমেজাজিরা কস্মিনকালেও জায়গা করে নিতে পারে না নারীর কোমল মনে। তাই বিনয়ী হয়ে উঠুন। মনের মল্লিকার প্রেম পেতে হলে ভিতরে লুকিয়ে রাখা “ম্যানলি” আপনিটাকে খুঁজে বের করুন। কী কী করবেন জেনে নিন -
১. সরাসরি চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন : প্রেয়সীর সামনে হামবড়াভাব একদম দেখাবেন না। নাকউঁচুভাবটা ত্যাগ করুন। সরাসরি প্রেয়সীর চোখের দিকে তাকিয়ে যাবতীয় কথাবার্তা চালিয়ে যান।
২.স্পষ্টবক্তা হতে শিখুন : ম্যানলি হতে চাইলে স্পষ্টবক্তা হওয়া খুব দরকার। তা বলে নিজের যুক্তি খাঁড়া করতে জোরে কথা বলবেন না। জোর গলায় জেতার চেষ্টা ছাড়ুন। ধীরে কথা বলুন। মনের ভাব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করুন।
৩. বিশ্বাস ও ভরসা বাড়িয়ে তুলুন : ভরসা না করতে পারলে প্রেয়সী কিন্তু আপনার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে কুণ্ঠাবোধ করবেন। প্রেয়সীর মনে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে হবে আপনাকেই। কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় বেশি কিন্তু কিন্তু করবেন না। চারপাশ বিচারবিবেচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে আপনাকেই। একই সঙ্গে প্রেয়সীর মতামতও শোনা দরকার।
৪. বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক করুন : হাঁটা চলা, ওঠা বসায় আগ্রাসন কমিয়ে ফেলতে হবে। জোরে কথা নয়। হাতপা নেড়ে কথা নয়। কথা বলার সময় অশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ একেবারেই নয়। বরং হয়ে উঠুন নম্র, ভদ্র, মার্জিত। প্রেয়সীর সঙ্গে ডিনার বা লাঞ্চ করার সময় তাঁকে নিজে থেকেই চেয়ার টেনে বসতে দিন। গাড়ির দরজা খুলে তাকে ভিতরে ঢুকে যেতে অনুরোধ করুন। চেয়ার বা সোফায় বসার সময় হাত-পা ছড়িয়ে বসবেন না। এসবই কিন্তু বডি ল্যাঙ্গুয়েজে গভীর প্রভাব ফেলে।
৫. কণ্ঠস্বরেই বাজিমাত : পুরুষের কণ্ঠস্বরও কিন্তু নারীমনে জায়গা পেতে পারে। না হোক রূপবান, কিন্তু পুরুষের কণ্ঠস্বরে যদি সেই পুরুষালি ব্যাপারটা থাকে, ওখানেই অনেকটা বাজিমাত হয়ে যায়। সুন্দর কণ্ঠস্বর জন্মগত ব্যাপার ঠিকই। কিন্তু যার কণ্ঠস্বর ভালো নয়, তিনিও চর্চা করে কিছু সুফল পেতে পারেন। পুরোপুরি ব্যারিটোন ভয়েস না পেলেও কিছুটা পুরুষালি ভাব নিশ্চয় আসবে। রোজ সকালে গরম জল দিয়ে গার্গেল করুন। কথা বলার সময় শান্ত থাকুন। উত্তেজনার বশে জোরে কথা বলবেন না, চেঁচাবেন না। তা হলেই কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আনতে পারবেন।
৬.প্রেয়সীকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিন : সম্পর্কে জড়ানোর আগে ভালো বন্ধু হওয়া খুব প্রয়োজন। আগে ভালো বন্ধু হয়ে নিন। প্রেয়সীকে মন খুলে কথা বলতে দিন। মন দিয়ে তাঁর সমস্যাগুলো শুনুন ও সেগুলি সমাধান করার চেষ্টা করুন। সমস্যা যদি প্রেয়সীর প্রাক্তন প্রেমিক সংক্রান্ত হয়, তাঁকে সেই নিয়ে কোনওরকম কটূক্তি করবেন না। তার উপর ভিত্তি করে প্রেয়সীকে বিচার করতে যাবেন না।
৭. সমালোচনা নয় : প্রেয়সীকে ইমপ্রেস করতে হলে সমালোচনা করার কু-অভ্যাস ছেড়ে দিন। কারও সম্পর্কে আশ্রব্য ভাষায় মন্তব্য করবেন না। কোনও অশালীন আলোচনায় অংশ নেবেন না।
৮. সৎ থাকুন : নিজের অতীত সম্পর্কে প্রেয়সীকে অন্ধকারে রাখবেন না। এখনকার দিনে কোনও ব্যক্তিরই একটা বা দুটি সম্পর্ক হয় না। হলে একাধিক সম্পর্কেই লিপ্ত হয় আজকালকার অধিকাংশ নারী-পুরুষ। তাই প্রেয়সীকে নিজের করে পাওয়ার আগে নিজের অতীত সম্পর্কে তাঁর কাছে পরিষ্কার থাকুন। ভুলেও কিছু লুকিয়ে রাখবেন না।
৯. ঝকঝকে ব্যক্তিত্ববান হয়ে উঠুন : ব্যারাক ওবামাকে কোনওভাবেই রূপবান পুরুষ বলা যায় না। কিন্তু তিনি হলেন আসাধারণ ব্যক্তিত্ববান। চোখ দুটো ঝকঝকে। দারুণ কথা বলেন। তেমন হওয়ার চেষ্টা করুন। প্রেয়সীর মনে সহজেই জায়গা পেয়ে যাবেন। জেনে রাখবেন, রকবাজ রোমিওরা সুন্দরী মেয়েদের চারপাশে ঘুরঘুর করবেই, কিন্তু তাদের মনে স্থান পাবে না।
খুব বেশি হলে, দু-দিনের টাইমপাসের বস্তুই থেকে যাবে। কিন্তু যেই না কোনও ব্যক্তিত্ববান পুরুষের নাগাল পাবে কোনও রূপসি, পাড়ার রোমিওকে এক ঝটকায় নাকচ করে দেবে। মন দেবে তাকেই, যার ব্যক্তিত্ব মারাত্মক। হাঁটাচলায় যিনি অনবদ্য হিরো। যিনি কথা শুরু করলে, শ্রোতারা সবাই চুপ। ফলে, ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলুন। প্রেয়সী মুদ্ধ হবেনই।
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে