পৃথিবীর সবেচেয়ে শীতের গ্রাম, যেখানে কলমের কালিও জমে যায়
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : গ্রামের নাম যা‚ রুশ ভাষায় তার অর্থ ‘ জমে না যাওয়া জল’। অথচ এই গ্রামে শীতে গড় তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।গ্রামের নাম ওয়েমায়য়াকোন| রাশিয়ার ইয়াকুৎস্ক প্রদেশের এই গ্রাম হল বিশ্বের শীতলতম গ্রাম‚ যেখানে পাকাপাকিভাবে মনুষ্যবসতি রয়েছে।১৯২৪ সালে জানুয়ারি মাসে গ্রামের তাপমাত্রা নেমে হয়েছিল-৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা উত্তর গোলার্ধে এখনও অবধি রেকর্ড।
আদতে ওয়েমায়য়াকোন ছিল বল্গা হরিণদের জলপানের জায়গা। আসা যাওয়ার পথে এখানে উষ্ণ প্রস্রবণে জল খাওয়ানো হত প্রাণীগুলোকে। এই উষ্ণ প্রস্রবণের জন্য জায়গাটিকে বলা হয় ‘জমাট না হওয়া জল’। ক্রমে এখানে বসত শুরু করায় সাবেক সোভিয়েত সরকার।
ইয়াকুৎস্ক থেকে দুদিন লাগে গাড়িতে‚ ওয়েমায়য়াকোন পৌঁছতে। এই গ্রামে এখন ৫০০ মানুষের বাস। আছে স্কুল কলেজও। নিয়মিতও ক্লাসও বসে সেখানে।তবে গ্রামবাসীদের জীবন কষ্টসহিষ্ণুতার চরম পরাকাষ্ঠা।খাবার বলতে আছে শুধু বল্গা হরিণ আর ঘোড়ার মাংস। কারণ কোনও সব্জি জন্মায় না এখানে।অধিবাসীদের অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে পোষ্যদের দুধ। গ্রামে দোকান একটি। সবেধন নীলমণি ওই দোকানেই মেলে প্রয়োজনীয় জিনিস।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৫০ মিটার উঁচুতে ওয়েমায়য়াকোন গ্রামে গরমে সূর্য আকাশে থাকে ২১ ঘণ্টা। শীতে ৩ ঘণ্টা। স্থানীয় মানুষের জীবিকা বলতে‚ বল্গা-পালক‚ শিকারি বা তুষারজেলে। জুন থেকে অগাস্ট যখন তাপমাত্রা থাকে ৩০ ডিগ্রির উপরে‚ ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে সেটাই নেমে যায় হিমাঙ্কের ৫০ দাগ নিচে। শীতকালে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করেন না স্থানীয়রা। যদি পরে আর চলতে না চায়…
কলমের রিফিলে কালি বা নাকের উপর চশমা জমে যাওয়া‚ এই গ্রামের নিত্য শীত-সমস্যা। পাশাপাশি‚ দাঁতে দাঁত চিপে জীবন সংগ্রাম তো আছেই। তবু তারমধ্যেই বয়ে চলে জীবন। বিশ্বের শীতলতম গ্রাম দেখতে আসেন পর্যটকরা। নতুন সূর্য দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকেন তুষারপুরীর বাসিন্দারা।
২৬ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ