এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভূত আছে কিনা তা তর্কসাপেক্ষ। সওয়ালার একদা বাসিন্দা যে কাউকেই জিজ্ঞেস করুন না কেন, উত্তর হবে নেই, মানে আলবত্ আছে! আছে বলেই তো সওয়ালা ছেড়ে মুখ ফিরেও আর তাকাননি। যা হোক, ভূতের সঙ্গে তো আর মানুষ থাকতে পারে না!
কিন্তু গোটা সওয়ালার একদা বাসিন্দাদের মধ্যে এমন একজনকেও পাওয়া যায়নি, যিনি ভূতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সওয়াল করবেন। তাই জমিজমা, ঘরবাড়ি সব ছেড়ে এখন আশ্রয় নিয়েছেন পড়শিগ্রামে। শুনশান গ্রামে নাকি রাজত্ব করছে ভূতেরা!
ভারতের উত্তরখণ্ডের চম্পাওয়াত জেলার অখ্যাত এক গ্রাম সওয়ালা। যদিও অখ্যাত আর নয়, ভূতেরাই 'খ্যাত' করেছে এ গ্রামকে। তাই লোকমুখেই উত্তরাখণ্ডের এ গ্রামটির নাম হয়ে গেছে ভূতের গ্রাম। সাহসী, বেপরোয়া হলে আপনি যেতেও পারেন সওয়ালায়। কিন্তু পড়শি যাদের পাবেন, তারা সবাই নাকি প্রেতাত্মা! চোখে দেখবেন না, অস্তিত্ব টের পাবেন।
এ গ্রামের মানুষজন ঘর ছেড়েছেন তা অনেক দিনই হলো। কত বছর হবে ঠিকঠাক বলতে পারলেন না পড়শি গ্রামের কেউ-ই। কিন্তু ঘটনা হলো, ওই গ্রামের পথে পা মাড়ান না কেউ-ই। দিনে যদিও বা, সন্ধ্যার পর সূর্য অস্ত গেলে, একদমই না। কোনো পীড়াপীড়িতেও না, অনুরোধে, উপরোধে যাওয়ার ঝুঁকি নেন না কেউ-ই। এতই তাদের ভূতের ভয়!
কেন গ্রামে ভূতের আড্ডা? এসবই আপনি জানতে পারবেন তাদের কাছে। ভূতগ্রামের পড়শিদের দাবি, সওয়ালায় বসত করেন আটজন ভূত। হ্যাঁ, গুনে গুনে আটজনই। গ্রামের আদি বাসিন্দাদের উত্খাত করে, তারাই আখড়া বেঁধেছে সওয়ালায়। এমনই তাদের রাজত্ব, অন্য কাউকে গ্রামে ঢুকতে দেখলে পথ আটকে দেয়। তাই যেতে পারেন না কেউ।
স্থানীয়রা বলেন, এই ভূতেরা একসময় আর্মি ছিলেন। অপঘাতে মৃত্যুর পর এ গ্রামেই রয়ে গেছেন। নিজেদের মতো তার একটা কাহিনীও শোনান গ্রামবাসীরা।
ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন ওই জওয়ানরা। পথে এই সওয়ালার রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের জিপ গাড়িটি। জওয়ানরা যখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, গ্রামের মানুষ তখন তাদের হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে নিজেদের মতো লুটপাট চালায়। একসময় ওই আট জওয়ানই মারা যায়। ভূতের উত্পাত শুরু, এর কিছুদিন পর থেকে।
কী করে বুঝলেন? তারা জানান, গ্রামের রাস্তার যেখানে আর্মিজিপ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল, সেই রাস্তায় সেই জায়গাতেই আরো ত্রিশটা গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটেছে। গ্রামের মানুষের বিশ্বাস, ওই জওয়ানরাই অদৃশ্য থেকে দুর্ঘটনা ঘটান, যাতে কেউ গ্রামটিতে ঢুকতে না পারে।
কারণ একই জায়গায় বারবার দুর্ঘটনা, তাদের চোখে স্বাভাবিক বলে মনে হয়নি। মনে হয়েছে, এভাবেই প্রতিশোধ স্পৃহায় মেতেছেন ওই জওয়ান ভূতেরা। সত্যমিথ্যে যা-ই হোক, যাবেন নাকি একবার সওয়ালায়? সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে