২০১৫ সালে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনা
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: কয়েকটি বড় ধরণের বিমান দুর্ঘটনা বছর জুড়েই আলোচনায় ছিল। এসব ঘটনায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এসব ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এখানে তা তুলে ধরা হলো:
২২ ডিসেম্বর: নয়াদিল্লিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক বিমান দুর্ঘটনায় ১০ আরোহীর সবাই নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের তিনজন বিএসএফের কর্মকর্তা, বাকি সাতজন প্রকৌশলী। দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে তাঁরা সবাই একটি হেলিকপ্টার মেরামত করতে ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঁচি যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উড্ডয়নের সামান্য পরই সুপারকিং বিমানটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৪ নভেম্বর: দক্ষিণ সুদানে রাশিয়ায় তৈরি যাত্রীবাহী একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৪১ জন প্রাণ হারান। দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবার একটি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই হোয়াইট নীল নদের তীরে আছড়ে পড়ে বিমানটি।
৩১ অক্টোবর: মিসরের সিনাই উপত্যকার পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় রাশিয়ার এই যাত্রীবাহী বিমান। এতে বিমানটির ২২৪ আরোহীর সবাই নিহত হন। কোগালিমাভিয়া এয়ারলাইনসের ভাড়া করা এয়ারবাসটি (এ-৩২১) সিনাইয়ের দক্ষিণের শারম আল-শেখ থেকে স্থানীয় সময় সকাল পাঁচটা ৫১ মিনিটে উড্ডয়ন করে।সিনাই উপত্যকার প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে বিধ্বস্ত হওয়ার ২৩ মিনিট আগে নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
১৭ আগস্ট: ইন্দোনেশিয়ার দুর্গম পাহাড়ি-বনাঞ্চলীয় প্রদেশ পাপুয়ার রাজধানী জায়াপুরা থেকে ৪৯ জন যাত্রী এবং পাঁচজন ক্রু নিয়ে আকাশপথে ৪৫ মিনিট দূরত্বের পথ ওকসিবিলের উদ্দেশে যাত্রা করে ট্রিগানা এয়ারের ওই বিমানটি। অবতরণের মাত্র ১০ মিনিটি আগে এটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
অনুযায়ী, নিরাপত্তার মান ভালো না থাকায় ২০০৭ সাল থেকে ট্রিগানা এয়ারলাইনস ইউরোপীয় ইউনিয়নের কালো তালিকায় রয়েছে। ১৯৯১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এ বিমান সংস্থাটি ১৪টি বড় সমস্যায় পড়ে, যাতে এর ১০টি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে।
৩১ মে: ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মেদান বিমানঘাঁটি থেকে হারকিউলিস সি-১৩০ বিমানটি স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে উড্ডয়ন করে। এর দুই মিনিট পর সেটি মেদান শহরে আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে। এতে বিমানের ১৪১ আরোহী নিহত হন।
২৪ মার্চ: জার্মানির যাত্রীবাহী এই উড়োজাহাজ আলপস পর্বতমালার ফরাসি অংশের একটি দুর্গম এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে উড়োজাহাজটির ১৫০ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। জার্মানউইংসের এ-৩২০ এয়ারবাসটি স্পেনের উপকূলীয় শহর বার্সেলোনা থেকে জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরে যাচ্ছিল। জার্মানউইংস হচ্ছে জার্মানির বিমান সংস্থা লুফথানসার সহযোগী সংস্থা, যারা কম খরচে যাত্রী পরিবহন করে থাকে। আরোহীদের মধ্যে ৬৭ জন জার্মান এবং ৪৫ জনের মতো স্প্যানিশ ছিলেন। উড়োজাহাজে জার্মানির একটি বিদ্যালয়ের ১৬ জন শিশুশিক্ষার্থী এবং তাদের দুই শিক্ষকও ছিলেন।
৪ ফেব্রুয়ারি: তাইওয়ানের বিমান সংস্থা ট্রান্সএশিয়ার এই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনার শিকার হলে অন্তত ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওড়ার কিছু সময় পরই উড়োজাহাজটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে গিয়ে গোত্তা খেয়ে নদীতে পড়ে যায়। এটি যাচ্ছিল দক্ষিণ-পূর্ব চীনের শহর শিয়ানমেনে। উড়োজাহাজটির মোট ৫৮ আরোহীর মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন চীনা পর্যটক। উড়োজাহাজটি নদীতে পড়ার পর এর অংশবিশেষ পানির ওপরে ভাসতে দেখা যায়। এর ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে বের হয়ে যাত্রীদের কয়েকজনকে সাঁতরাতে দেখা যায়। উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছে তাঁদের সাহায্য করেন।
২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪ডটকম/জুবায়ের রাসেল