রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০, ১১:২২:৩১

লকডাউনের কারণে ঘটে যাওয়া ১৬০০ বছর আগের এমন ঘটনা স্পষ্ট হয়ে উঠল এখন!

লকডাউনের কারণে ঘটে যাওয়া ১৬০০ বছর আগের এমন ঘটনা স্পষ্ট হয়ে উঠল এখন!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : করোনায় কাঁ'পছে সারা বিশ্ব। এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁ'চতে দেশে দেশে আ'রোপ করা হয়েছে লকডাউন। আর লকডাউনের কারণে ঘটে যাওয়া ১৬০০ বছর আগের এমন ঘটনা স্পষ্ট হয়ে উঠল এখন! পরিবেশ দূষণ কমে গেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। যার ফলে স্বচ্ছ হ্রদের নিচে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ১৬০০ বছরের প্রাচীন গির্জার ধ্বং'সাবশেষ। 

প্রকৃতি নিজেই যেন ইতিহাসের দরজা খুলে দিয়েছে তুরস্কে। দেশটিতে ইজনিক হ্রদের নিচে দেখা যাচ্ছে ৩৯০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত গির্জার ধ্বং'সাবশেষ। ইতিহাসবিদদের ধারণা, ৭৪০ খ্রিস্টাব্দে ভূ'মিকম্পের ফলে স্থাপত্যটি ব্যাপক ক্ষ'তিগ্রস্ত হয়। তার পর ধীরে ধীরে তাকে গ্রাস করে ইজনিক হ্রদের পানি। তলিয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক নিদর্শনটি রয়েছে পানি তল থেকে মাত্র দেড় থেকে দু’মিটার গভীরে। এই প্রথম এতো স্পষ্ট করে সেটিকে দেখা গেল পানির ওপর থেকেই। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ড্রোনের মাধ্যমে তার ছবিও তোলা হয়েছে।

ইজনিক হ্রদের নিচে প্রাচীন গির্জার অস্তিত্ব ধ'রা পড়েছিল ২০১৪ সালে। আর্কিয়োলজিক্যাল ইনস্টিটিউট অব আমেরিকা সে সময় একে বছরের সেরা দশটি ঐতিহাসিক আবিষ্কারের মধ্যে জায়গা দিয়েছিল। গবেষকদের মত, ১৬০০ বছর আগে সন্ত নিওফাইটোসের সম্মানে এই গির্জা তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় ইজনিকের নাম ছিল নাইসিয়া। রোমান সম্রাট কনস্টানটাইনের নাম অনুসারে ইস্তানবুল ছিল কনস্টাটিনোপল। রোমান সম্রাট ডায়োক্লেশিয়ান এবং গ্যালেরিয়াসের আমলে সন্ত নিওফাইটোসকে প্রাণদ'ণ্ডে দ'ণ্ডিত করা হয়েছিল। যে স্থানে সন্তকে প্রাণদ'ণ্ড দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই পরে গির্জাটি নির্মাণ করা হয় তার সম্মানে। মধ্যযুগের বিভিন্ন নথিতে দাবি করা হয়েছে, ইজনিক হ্রদের তটের বধ্যভূমিতে প্রাণদ'ণ্ড দেওয়া হয় সন্ত নিওফাইটোসকে।

গবেষকদের একটা বড় অংশের মতে, ইজনিক হ্রদের নিচে ওই গির্জা তৈরি করা হয় একটি মন্দিরের ধ্বং'সাবশেষের ওপরে। ইতিহাসবিদেরা নিশ্চিত, গির্জার ধ্বং'সস্তূপের নিচে আরো প্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন আছে। এই দাবির পিছনে কারণ হলো, হ্রদ থেকে রোমান সম্রাট অ্যান্তোনিয়াস পায়াসের সমকালীন মুদ্রা ও অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসের সন্ধান মিলেছে। পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন শাসক যেমন সম্রাট ভ্যালেন্স, সম্রাট দ্বিতীয় ভ্যালেন্তাইনিয়ানের সমসাময়িক মুদ্রার নিদর্শনও পাওয়া গেছে।

রোমান সম্রাট অ্যান্তোনিয়াস পায়াস ১৩৮ থেকে ১৬১ খ্রিস্টাব্দ অবধি সিংহাসনে আসীন ছিলেন। তার আমলে বা আরো আগে ওই স্থানে প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার দেবতা অ্যাপোলোর মন্দির ছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। হ্রদের তলদেশে খনন করলে সেই সভ্যতার সন্ধান পাওয়াও যেতে পারে।

এর আগে ২০১৪ সালে এর অস্তিত্ব আধুনিক পৃথিবীর সামনে আসে। প্রকাশ্যে আসতেই অনুসন্ধান শুরু হয়। পাওয়া যায় স্কটিশ নাইটদের স্মারকচিহ্ন। মনে করা হয়, তারাই এই ব্যাসিলিকার প্রথম বিদেশি পর্যটক। সূত্র: আনন্দবাজার।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে