বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:৫৩:১২

সাহসিকতায় জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছে তেরো বছরের বালক

সাহসিকতায় জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছে তেরো বছরের বালক

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মাত্র তেরো বছর বয়সেই জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনিত হলেন। এই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে তাকে সাহসিকতায় বিশেস অবদান রাখার জন্য। এত অল্প বয়সে দিশান্ত মেহেনদিরাত্তা সাহসিকতার অসিম পরিচয় দিয়ে ভারত সরকারের নজর কেড়েছেন তারই স্বীকৃতি স্বরূপ চন্ডীগড়ের এই বালকের হাতে জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন। কলকাতা ২৪ এর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র দিশান্তের সাহসিকতার প্রমাণ অবশ্য দেশবাসী আট মাস আগেই পেয়েছিল। যখন অস্ত্রধারী ডাকাতের হাত থেকে দিশান্ত তার মায়ের প্রাণ বাঁচিয়েছিল এবং ওই ডাকাতকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। তবে দেরিতে হলেও দিশান্তকে সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার। আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চে চন্ডীগড়ের পাঁচকুলার সাউপিন্স স্কুলের ছাত্র দিশান্ত মেহেনদিরাত্তার হাতে সাহসিকতার পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইতিমধ্যে এই পুরস্কার পাওয়ার খবর শুনেছে দিশান্ত। এই পুরস্কার তাকে আরও উৎসাহিত করবে বলেই সে মনে করছে। ছোটদের জন্য দিশান্তের পরামর্শ, সমস্ত শিশুদেরই সাহসী হওয়া উচিত এবং ভয়ের সামনে কখনও ভেঙে পড়া উচিত নয়। ছেলেকে জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণায় গর্বিত দিশান্তের মা অর্চনা মেহেনদিরাত্তা। তবে গত ৪ এপ্রিল দিশান্ত যেভাবে ছুরিধারী ডাকাতের হাত থেকে তাকে বাঁচিয়েছিল, সে কথা মনে পড়লে এখনও শিউরে ওঠেন ৪২ বছরের অর্চনাদেবী। সেদিনের ঘটনার বৃত্তান্ত দিয়ে তিনি জানান, পাঁচকুলার সেক্টর-২০-তে স্বামী রবীন্দ্র, দুই ছেলে দিশান্ত এবং রায়ানকে নিয়ে বাস করেন এলআইসি-র কর্মী অর্চনাদেবী। তার চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট স্বামী রবীন্দ্র মেহেনদিরাত্তা গত ৪ এপ্রিল দুপুরে সবেমাত্র বাড়ি থেকে বেরোন। তার কয়েক মিনিট পরেই দুপুর দু’টার দিকি অতিথি বেশে অর্চনাদেবীর বাড়িতে আসে এক ডাকাত। অর্চনাদেবী জানান, কলিংবেল শুনে তিনিই দরজা খুলেছিলেন। দরজার সামনে ভদ্র বেশে এক যুবক এসে দাঁড়ায়। সে তার স্বামীর সঙ্গে কাজের বিষয়ে দেখা করতে চান। কিন্তু রবীন্দ্রবাবু বাড়িতে নেই জানানোর পরেও তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চায় ওই যুবক। অর্চনাদেবী ফোন ধরিয়ে দেন। রবীন্দ্রবাবু ওই যুবককে চিনতে না পেরেও তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং পরে বাড়িতে আসতে বলেন। এরপর ওই যুবক বাথরুমে যেতে চান। অর্চনাদেবী তখন তাকে বাড়ির ভিতর আসতে বলেন এবং বাথরুমের পথ দেখিয়ে দেন। এরপর বাড়ির ভিতর ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই কোমর থেকে ছুরি বের করে সে অর্চনাদেবীর গলায় ধরে এবং টাকা-পয়সা, গয়না সমস্ত বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পুরো ঘটনাটি দিশান্ত এবং আট বছরের রায়ানের সামনেই ঘটে। রায়ান তখনও চুপ থাকলেও দিশান্ত ওই ছদ্মবেশী ডাকাতের পা ধরে মায়ের প্রাণ ভিক্ষা চায়। কিন্তু কোনও সাড়া না পেয়ে সে পাল্টা আক্রমণ করে। ওই ডাকাতের হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে দেয় এবং অ্যালার্ম বেল বাজায়। তারপর প্রহরী গিয়ে ওই ডাকাতকে গ্রেফতার করে। মাত্র ১৩ বছরের দিশান্ত যেভাব ওই ডাকাতের হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে, তা দুঃসাহসিক। এর ভিত্তিতেই দিশান্তকে সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার। ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে