সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:০৯:১২

ছবিতে গিয়ে বাবাকে আবিস্কার করল ফটোগ্রাফার

ছবিতে গিয়ে বাবাকে আবিস্কার করল ফটোগ্রাফার

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সেই ১০ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছেন বাবা। অনেক খোজাখুজি করেও না পেয়ে তার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল পরিবার। সেই কিম এখন একজন ফটোগ্রাফার। নাম ডিয়ানা কিম। হনলুলুর মাউই দ্বীপের রাস্তায় রাস্তায় ঘরহীনদের ছবি তুলতে তুলতে খোঁজ পেলেন সেই বাবা।

কিমের এই আবিস্কারে হতচকিত তাঁর পরিবার। হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেয়ে অন্যদের চেয়ে একটু বেশি খুশি কিম। তার কারণ, বাবার কাছেই ফটোগ্রাফির শিখেছেন তিনি। আর সেই ফটোগ্রাফই খুঁজে এনে দিল হারিয়ে যাওয়া বাবাকে।

ছোটবেলায় মা বাবা ও কিম। এই ছিল তাদের সুখী পরিবার। কিন্তু বাবা মায়ের বিচ্ছেদের পর নিজের আত্মীয় পরিজনদের কাছে থাকতে শুরু করেন কিম। বাবার সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এভাবে কেটে যায় দশটি বছর।

কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? ২০০৩ থেকে হনলুলুর ঘরহীনদের ছবি তোলার কাজ শুরু করেন কিম। ছাদ বলতে মাথার ওপর আকাশ আর বিছানা বলতে রাস্তাই যাদের আস্তানা, সেই ঘরহীনদের ছবি নিয়ে ডকুমেন্ট তৈরি করতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেন আর ছবি তুলতেন।

 

হঠাৎ একদিন তাঁর চোখে পড়ে একজন রুগ্ন ব্যাক্তি রাস্তায় পড়ে আছেন। বহুদিন কিম ওই ব্যাক্তির পিছু নিয়েছেন এবং প্রায় প্রতিনিয়ত নজরে রাখতেন।

কখনও একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কখনও একটা ছেঁড়া কার্টূনের (বাক্স) মধ্যে মাথা গুঁজে শুয়ে আছেন, কখনও রাস্তার ধারে একা একা বসে আছেন, এই সমস্ত নানান মুহূর্ত কিম নিজের লেন্স বন্দি করেন। এরপরই তিনি আবিস্কার করেন ওই ব্যাক্তি তাঁর হারিয়ে যাওয়া বাবা।

জরাজীর্ণ শরীর, গায়ে ছেঁড়া জামা কাপড়। স্কিৎজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত চিকিৎসাহীন বাবাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন কিম।  

বাবা ভবঘুরে। কখনও খাবার পান। কখনও পান না। অভুক্ত কাটে দিন। এরপর থেকেই বাবার জন্য খাবার নিয়ে যেতেন তিনি। যখন কিম তাঁর চিকিৎসা করাবেন বলে জানান কোনও ভাবেই রাজি করানো যায়নি তাকে। শেষে ২০১৪ অক্টোবরে হৃদ রোগে আক্রান্ত হবার পর নিজের চিকিৎসায় রাজি হন। এরপর দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর সুস্থ হয়েছেন তিনি।

কিম জানিয়েছেন, তিনি তাঁর বাবাকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। তিনি আরও বলেন, জীবন একটা উপহার। আমার খুব ভাল লাগছে এটা দেখে, বাবা এখন সুস্থ আছে।

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে