মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০, ১২:১৩:১৬

কেউ বাস করে না, পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে এক সময়ে গমগম এই ৬ শহর

কেউ বাস করে না, পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে এক সময়ে গমগম এই ৬ শহর

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এক সময়ে শহরগুলো গমগম করত। হাজার হাজার লোকের বাস ছিল। আজ সেগুলো যেন ভূতের ডেরা। জনমানবহী'ন, শূন্য। প্রাকৃতিক দুর্যো'গ, যু'দ্ধ, অর্থনৈতিক স'ঙ্ক'ট, পারমাণবিক দূ'ষ'ণের মতো বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর এই শহরগুলো একেবারেই পরিত্য'ক্ত হয়ে পড়েছে।

আনি, তুরস্ক:‌ আর্মেনিয়া সীমান্তে অবস্থিত। মধ্যযুগে এই শহর দামাস্কাস, কনস্টান্টিনোপল, বাগদাদের প্রতিদ্ব'ন্দ্বী ছিল। দশম শতকে আর্মেনিয়ার রাজধানী ছিল। ১০০১টি গির্জা ছিল। আজ সব অতীত। আনি ছিল উত্তর-পূর্ব তুরস্কের প্রত্যন্ত পার্বত্যাঞ্চলের মধ্যযুগীয় শহর, যা ছিল আর্মেনীয়দের প্রাচীন রাজবংশের রাজধানী, সাবেক আঞ্চলিক শক্তি, মূল বাণিজ্য কেন্দ্র এবং জাতীয় ঐতিহ্য ও সত্তার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

৯৬১ থেকে ১০৪৫ সাল পর্যন্ত আর্মেনীয় বাগরাটিড রাজাদের রাজধানী থাকাকালে রাজ পরিবার ও জনগণকে সুরক্ষিত করতে ৯৭৭ সালে নির্মিত হয় শহর প্রাচীরটি। সে সময়কালে এ শহরে ছিল এক লাখ মানুষের বাস৷ কিন্তু এর দখল নিয়ে শত, শত বছর ধরে চলা যুদ্ধ-বিগ্রহ ও দস্যুতার জেরে তিনশ’ বছর আগে পরিত্যক্ত হয় শহরটি।

গার্নেট, আমেরিকা:‌ ১৮৬০ সাল পর্যন্ত এখানেও ছিল মানুষের বাস। ছিল সোনার খনি। সোনার খনির ব্যবসা বন্ধ হতেই গার্নেটের ঔজ্জ্বল্য ফিকে হতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে সকলেই এই শহর ছেড়ে চলে যান। ১৯১২ সালে ভ'য়াব'হ অ'গ্নিকা'ণ্ডে প্রায় অর্ধেক শহর ধ্বং'স হয়ে যায়।

হাশিমা আইল্যান্ড, জাপান:‌ জাপানের নাগাসাকি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে এই দ্বীপ। এখানকার কয়লাখনিগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। বিশ্বের ৫০৫টি জনমানবহীন দ্বীপের মধ্যে হাশিমা দ্বীপ অন্যতম। ১৯৬০ সালের পর থেকে জাপান তথা সমগ্র বিশ্বে কয়লার পরিবর্তে তেলের ব্যবহার শুরু হলে হাশিমা তথা সারা বিশ্বে কয়লার ব্যবহার কমে যায়। ১৯৭৪ সালে জনশূন্য হয়ে যায় শহর।

প্রিপেয়াত, ইউক্রেন:‌ উত্তর ইউক্রেনের বেলারুশ সীমান্তে অবস্থিত। ১৯৭০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন চেরনোবিল নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টকে সমর্থন করার পরই পৃথিবীর নবম নিউক্লিয়ার শহর হিসেবে ধরা হয়। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল বিকেলে চেরনোবিল দুর্ঘ'টনা। সরিয়ে নেওয়া হয় বাসিন্দাদের। তার পর থেকে আর কেউ ফেরেননি শহরে।

কোলমানস্কোপ, নামিবিয়া:‌ নামিব মরুভূমির কাছের একটি হিরের খনির কাছে গড়ে উঠেছিল এই কোলমানস্কোপ। আফ্রিকা মহাদেশে প্রথম ট্রাম চলে এখানেই। ক্রমেই সেজেগুজে উঠল এই ছোট্ট শহর। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরই বদলে যায় ছবিটা। ১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভূতুড়ে বলে বদনাম হয়। এরপরই লোকজন ছাড়তে শুরু করেন শহর। ধীরেধীরে পরিত্যক্ত হয়ে যায় শহরটি। কালক্রমে গোটা শহরটিকে গিলে ফেলে মরুভূমি। পড়ে থাকে শুধু জার্মান স্থাপত্যের নিদর্শন।

ওরাদুর–সুর–গ্লান, ফ্রান্স:‌ মধ্য–পশ্চিম ফ্রান্সের শহর। ১৯৪৪ সালের ১০ জুন নাৎসি আক্র'মণে জনশূন্য হয়ে যায়। নারী, শিশু সহ ৬৪২ জনকে খু'ন করা হয়। যারা পালিয়েছিলেন, আর কেউ ফেরেননি। এখন এই গোটা শহরই একটা মিউজিয়াম, ধ্বংসই যার স্মৃতি৷ বিধ্বস্ত শহরটিতে কিছুই বদলানো হয়নি৷ বহু বাগানের গেট আজও আছে, যদিও বহুদিন হল কোনো মানুষ সেই গেট পার হয়ে বাগানে ঢোকেনি, যায়নি বাড়িতে৷

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে