সোমবার, ০৪ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৯:৫৪:৫০

জীবনের ‘জীবন্ত’ ছবি

 জীবনের ‘জীবন্ত’ ছবি

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : কথায় বলে ছবি মানুষের কথা বলে।স্বপ্নের কথা বলে। কল্পনার জালে সেই ছবিতে বন্দি হয় কত শত জীবনের গল্প। রং তুলিতে আঁকা সে ছবিগুলো মনের ভিতরে সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে চিরম্ল­ান থাকে আজীবন। সে রকমই একজন মনের অজান্তে এঁকে চলছেন এ যেন তার কঠিন শখ। নাম তার জীবন নাহার কুমকুম। বাড়ি রংপুর শহরের শালবন এলাকার বালাপাড়া এলাকায়। জীবনের জীবন্ত ছবি যেন মনের কথা বলে, প্রাণের কথা বলে। আশার মাঝে স্বপ্ন দেখায়। বয়স যখন ৬ বছর। প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ফুটফুটে ছোট মেয়েটির চোখে-মুখে কল্পনার ছাপ। মনের অজান্তে ভাবনার জগতে বসবাস। পেন্সিল দিয়ে সাদা কাগজে কিংবা কাটি দিয়ে মাটিতে রং করত। গাছ- গাছালি, পাখি, মানুষ আর প্রকৃতির ছবি আঁকতো। কেউবা ডাক্তার হয় কেউবা হয় ইঞ্জিনিয়ার এ রকম অনেক শখ থাকে মানুষের জীবনে। স্কুল জীবনে তোমার প্রিয় শখ রচনার সূত্র ধরে শখের বসে এঁকে চলছেন জীবন। থামেনি তার পথচলা। বড় হওয়ার স্বপ্ন তাকে ঘিরে রাখে সারাক্ষণ। তাড়া করে ফিরে। ধীরে ধীরে স্বপ্ন নিয়ে ছোট থেকে বড় হতে থাকে। বয়স বাড়ে। বাড়ে কল্পনার জগত্। চিন্তা-চেতনাগুলো উড়ে এসে জুড়ে বসে। কি সব আবোল-তাবোল চিন্তা ঘুরপাক খায় মাথায়। সেই চিন্তা-চেতনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে বেছে নেয় ছবি আঁকা। মনের অজান্তে আর্টকে ভালবাসে সে। মেঘলা আকাশ, কৃষকের ধান কাটা, গাছ লাগানো, পাখি, বিল এবং প্রকৃতির বিভিন্ন রংয়ের ছবি ক্যামেরায় বন্দি করে নিয়ে আসে। আর সেগুলোই মনের খোড়াক হয় তার। শিল্পীর রং তুলিতে সাজানো হয় শিল্প জগত্। রাঙানো হয় স্বপ্ন। যেন প্রাণ ফিরে পায়। শিল্পীর চোখে শিল্প। শিল্পকে সমৃদ্ধি করতে শিল্পীর চেষ্টা অফুরন্ত। শিল্পীর রং তুলিতে সাজানো হয় শিল্প জগত্। মনের মাধুরী মিশিয়ে দিগন্ত জুড়ে কল্পনার জগতে ছুটে চলার প্রাণপণ চেষ্টা থাকে শিল্পীর। গোধূলী বেলার নীল আকাশ, সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে ছুটে চলা, কাঁশফুলের নরম ছোঁয়া, প্রকৃতি, খেটে খাওয়া মানুষের আর্তনাদ, সন্তানহারা মায়ের বুক ফাটা অশ্রু, পাল তোলা নৌকা, মাঝিমাল­ার ভাটিয়ালী গান এসবই যেন শিল্পীর মনের কথা। মায়ের বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করার সুবাদে ইন্দোনেশিয়া ও চীন থেকে এসেছিলেন দুজন ভিনদেশি। তারা জীবনের আঁকা ছবিগুলো দেখেছেন। খুব পছন্দ হয়েছিল তাদের এবং সেসব কিনে নেয়ার কথা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে তারা শর্ত দিয়েছিল শিল্পীর নাম থাকবে না। কিন্তু সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি জীবন। সেই সাথে মৃত্যুর ৪ মাস আগে এসেছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্ল­ুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান। তিনিও তার আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। আশীর্বাদ করেছিলেন তুমি একদিন বড় হবে মা। যেখানে যান, সেখানেই প্রকৃতিটাকে বেঁচে নেন। শিল্পীর জগত্টা হয়ে ওঠে প্রকৃতি, জীবনী, দেশ ও দেশের শান্তি, আলোকময় শান্তি, নির্যাতিতা নারীর নির্মম চিত্র এসবই ক্যানভাসে চলে আসে। শিল্পী নিজে সাজে ও সাজায়। সাজতে খুব ভালবাসে জীবন। খুব ব্যস্ততম সময় কাটে জীবনের। ছবি আঁকতে আঁকতে কখনও ভোর হয়ে যায়। সারা ঘর জুড়ে তার আঁকা ছবিগুলো যেন নিথর প্রাণ। কৃষি বিভাগে ডিপ্লে­ামাসহ ইংরেজিতে অনার্স করার পর বর্তমানে প্রাইভেটে মাস্টার্স করছেন। সেই সাথে জীবন কৃষি বিভাগে কর্মরত আছেন। তাছাড়া জীবন নাচ-গানেও পারদর্শী। ছোট থেকে আর্ট শেখার পিছনে তার মায়ের অবদান বেশি বলে জীবন বলেন। আরো বহুদূর এগুতে চায় জীবন। ৪ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে