সোমবার, ০৪ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৭:১৪:৪৬

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও ডেলিভারি বয়

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও ডেলিভারি বয়

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: দ্বিথিল ডি কুমার, সোমু ও সতীশ নাইডু। এঁরা তিনজনেই ডেলিভারি বয়। না, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে এঁরা বিশেষ লেখাপড়া করেননি বা ভালো চাকরি পাননি বলেই তাঁদের আজ এই কাজ করতে হচ্ছে। বরং শুনলে অবাক হবেন, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হয়েও এঁরা প্রত্যেকেই স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছেন ডেলিভারি বয়ের কাজ। কিন্তু, কারণটা ঠিক কী? আসুন ভারতের এই তিন ইঞ্জিনিয়ারের ডেলিভারি বয় হওয়ার কারণটা জেনে নিই। ২০১৪ সালে মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটি ফার্মে ফ্রেশার হিসেবে ঢুকেছিলেন দ্বিথিল ডি কুমার। শুরুতে বেতন হয় মাসে ১২,০০০ টাকা। কেটেকুটে হাতে আসত সাকুল্যে ৯,০০০। তাই দিয়ে বাড়ি ভাড়া, খাওয়া খরচই উঠত না। তাই হন্যে হয়ে ফের চাকরি খোঁজা শুরু করেন দ্বিথিল। মে মাসে তিনি খাবারের সংস্থা petoo.com-এ ডেলিভারি বয় হিসেবে কাজে যোগ দেন। আট মাসের মধ্যেই তাঁর মাইনে গিয়ে দাঁড়ায় মাসে ২০,০০০টাকায়। এছাড়াও পেট্রল খরচ ও বাড়তি কাজের জন্য মিলত বাড়তি টাকা। দিনে আট ঘণ্টা কাজ করে এই আয় করতে শুরু করে দ্বিথিল। আর উপরি পাওনা হিসেবে ছিল তাঁর পছন্দের বাইকটা দিনভর চালানোর সুযোগ। ডেলিভারি বয় মানেই স্কুল ড্রপ-আউট বা আনপড় কোনও ছেলে এই কনসেপ্ট যে এখন আর নেই তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ দ্বিথিল। পাটভাঙা ইউনিফর্ম পরে হাতে হরম খাবার নিয়ে আপনার দরজায় যাঁরা খাবার নিয়ে আসেন, তাঁরা নরমভাবে কথা বলেন ঝরঝরে ইংরেজিতে। বিভিন্ন কোম্পানিগুলিও ডেলিভারি বয়ের কাজের জন্য এমন শিক্ষিত ছেলেদেরই চাইছে। যেমন petoo.com-এর অপরাশেনাল হেড রবি কুমার বললেন, 'আমরা যেহেতু প্রচুর ডেলিভারি বয় নিয়োগ করি, সেজন্য শিক্ষিত ডেলিভারি বয়দের আমরা প্রমোশন দিয়ে ম্যানেজারের পদেও বসাই।' ডেলিভারি বয়ের চাকরির জন্য মূলত তিনটি ক্রাইটেরিয়া রাখা হয় বলেও জানালেন রবি কুমার। ইংরেজিতে কথা বলায় দক্ষতা, স্মার্টফোন ব্যবহারে চোস্ত ও কম্পিউটার জ্ঞান থাকলেই মিলতে পারে এই চাকরি। ২৬ বছরের বিই ইলেকট্রিক্যাল গ্র্যাজুয়েট সোমুও একজন ডেলিভারি বয়। মোটা মাইনের পাশাপাশি বেপরোয়াভাবে বাইক না চালিয়েও ডেডলাইন মেনটেন করা, দেরি হলে শান্তভাবে গ্রাহকদের সামাল দেওয়া এই কাজগুলোকে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে নেন সোমু। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার ২৩ বছরের সতীশ নাইডু স্যুইগির ডেলিভারি বয়। মারুতি সুজুকির সেলস এক্সিকিউটিভের কাজ ছেড়ে আট মাস হল এই কাজ করছেন তিনি। পিক আওয়ারে ব্যস্ততা, অন্যান্য সময়ে কম চাপ আর নামি-দামী সেলিব্রিটি ও VIP-দের ঘরে খাবার ডেলিভারি দেওয়ার আনন্দেই চুটিয়ে এই কাজটাকে উপভোগ করছেন সতীশ। স্যুইগির আর এক ডেলিভারি বয় আর কুমারেশ আবার প্রথম প্রথম এই কাজ করতে গিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতেন। তবে, এখন তিনি দারুণ খুশি। কারণ কুমারেশ বুঝতে পেরেছেন, এই কাজে অসম্মানের কিছু নেই, বরং ভালো উপার্জন রয়েছে, গ্রাহকদের ঠিকমতো সামাল দিতে পারলে রয়েছে তাঁদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করার সুযোগ। এই কাজ করে নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে আলাপ করাটাও বেশি উপভোগ্য বলে জানালেন কুমারেশ। ৪ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/জুবায়ের রাসেল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে