মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৮:০৯:১৪

অনুপ্রেরণার কাহিনী, নাইট গার্ড থেকে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক!

অনুপ্রেরণার কাহিনী, নাইট গার্ড থেকে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: সারাদিন কলেজ, ক্লাস, পড়াশোনা। রাতে নাইট গার্ডের কাজ। এভাবেই জীবনের বেশ কয়েকটা বছর কেটেছে রঞ্জিত রামাচন্দ্রের। থেকে ভারতের কেরালার কাসাড়গড়ের ছিপছিপে চেহারার সেই যুবক আজ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম) রাঁচির সহকারী অধ্যাপক। যেটি ভারতের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি।

ইন্ডিয়া টুডে ও হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, নিজের জীবনের এই লড়াইয়ের গল্প ফেসবুকে লেখেন রঞ্জিত। সঙ্গে দেন তার পৈতৃক ভিটে ছোট্ট ত্রিপল ঢাকা কুঁড়েঘর এর ছবি। ৯ এপ্রিল ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি আমার এই গল্প বলতে চাই। এই গল্প যদি কাউকে স্বপ্ন দেখতে অনুপ্রাণিত করে তবে সেটাই আমার সাফল্য।’ তাঁর এই অনুপ্রেরণার কাহিনী ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

২৮ বছরের রঞ্জিত যে ঘরে ঘুমাতেন; সেটি একেবারে জীর্নশীর্ণ। বৃষ্টি হলে টিনের ফুটো দিয়ে পানি ঢুকত ঘরে। সেই ঘরে একটু ঘুমাতে ত্রিপল দিয়ে বৃষ্টি ঠেকানোর ব্যবস্থা করেন। 

দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পরই অর্থাভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দেবেন, এমনটাই ভেবেছিলেন রঞ্জিত। কারণ পরিবারকে টানতে একটা চাকরি সত্যিই প্রয়োজন ছিল তার। কিন্তু চাকরি করতে গেলে তো পড়ার সময় পাবেন না।

এমন সময়েই দুটিই একসাথে করার সুযোগ আসে। পানাথুরে বিএসএনএল এর টেলিফোন এক্সচেঞ্জে নাইট গার্ডের চাকরির সুযোগ পান তিনি। এরপরই শুরু হয় আসল লড়াই। নাইটগার্ডের কাজের মাঝেই সারারাত পড়াশোনা করতেন। আর দিনে পিউস এক্স কলেজে অর্থনীতিতে স্নাতকের ক্লাস করতে থাকেন।

এভাবেই কেটে যায় তিনবছর। এরপর ধাপে ধাপে কেরালা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি ও তারপর আইআইটি মাদ্রাজে পড়াশোনা চালিয়ে যান। ভাল ফলাফলের জন্য ভর্তি হওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি তার। আর পড়াশোনার খরচ নিজেই চালাতেন কষ্ট করে।

এভাবেই ধীরে ধীরে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ততদিনে তিনি বৃত্তিও পেতে শুরু করেন। ফলে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। গবেষণা শেষে অধ্যাপনা শুরু করেন বেঙ্গালুরুর ক্রাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপরেই আসে আইআইএম রাঁচিতে অর্থনীতিতে অধ্যাপনার সুযোগ।

রঞ্জিত লিখেন, 'ওই ছোট্ট কুঁড়েঘর থেকে আইআইএম রাঁচির পথটি ছিল দুর্গম। কিন্তু স্বপ্নে ঘেরা। আমায় মা-বাবা কখনও বলেন নি কী করতে হবে। আমার যেটা মনে হয়েছে করে গিয়েছি। আমার এই কাহিনী শুনে যদি কারও মনোবল বাড়ে, তবে নিজেকে সার্থক মনে করব'।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে