সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ০১:০৭:০২

চরম দুঃসময়ে আত্মীয়রা গায়েব, এক রিক্সাচালককে কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিলেন বৃদ্ধা

চরম দুঃসময়ে আত্মীয়রা গায়েব, এক রিক্সাচালককে কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিলেন বৃদ্ধা

২০২০ সালে স্বামীকে হারান তিনি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাঁর মেয়েও মারা যান। নিঃসঙ্গতা গ্রা'স করছিল তাঁকে। তার উপর স্বামী-সন্তান হারানোর শোক তো ছিলই। জীবনের দুঃসময়ে কাছের মানুষ কে, তা চেনা যায়। ওড়িশার কটকের বাসিন্দা মিনতি পট্টনায়েক সেটা বুঝেছিলেন জীবনের প্রায় সায়াহ্নে এসে। চমর দুঃসময়ে। একাকী বৃদ্ধার পাশে দাঁড়াননি কোনও আত্মীয়। তবে পরিচাত এক রিক্সাচালক এই সময় তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে ছিলেন।

সেই রিক্সাচালকের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক ছিল না মিনতিদেবীর। তবে র'ক্তের সম্পর্ক থাকলেই তো আর সব হয় না। মানুষ অনেক সময় জীবনে চলার পথে কাছের মানুষ খুঁজে পায়। রিক্সাচালক বুদ্ধ শ্যামল ও তাঁর পরিবার এই দুঃসময়ে মিনতীদেবীর পাশে ছিলেন। বুদ্ধ শ্যামলের রিক্সায় চেপে মিনতিদেবী ও তাঁর স্বামী এদিক ওদিক যেতেন। সেই থেকেই পরিচয়। তবে সেই সামান্য পরিচয় কবে আত্মীয়তায় বদলেছে কেউই টের পাননি। নিজের পরিবারের সদস্যের মতো মিনতিদেবীকে আগলে রেখেছিলেন সেই রিক্সাচালক ও তাঁর পরিবারের লোকজন। সেই রিক্সাচালকের নিঃস্বার্থ সেবায় আপ্লুত হন মিনতিদেবী। তিনি বাড়ি, সোনা-গয়না সমেত প্রায় এক কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিলেন বুদ্ধ শ্যামলের নামে।

মিনতিদেবী বলেছেন, ''স্বামী ও মেয়েকে হারানোর পর সম্পত্তির কোনও দাম নেই। দুঃসময়ে আমি মানুষ চিনেছি। কাছের মানুষেরা আমার জন্য যা করেনি, বুদ্ধ ও তাঁর পরিবার করেছে। সজ্ঞানে ওকে সম্পত্তি লিখে দিলাম। আমার মৃত্যুর পর ওদের আর কোনও সমস্য়ায় পড়তে হবে না। আমার খারাপ সময়ে দিন-রাত এক করে বুদ্ধ ও তার পরিবার পাশে ছিল। ওদের সাধ্যের বাইরে গিয়েও আমার জন্য অনেক কিছু করেছে। আমার এই সম্পত্তি ওদেরই প্রাপ্য।''

রিক্সাচালক বুদ্ধ বলেছেন, ''আমি আগেও পট্টনায়েক পরিবারের পাশে ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকব। ওই পরিবারের সঙ্গে আমার ২৫ বছরের সম্পর্ক। আমি কিছু পাব বলে মিনতিদেবীর পাশে দাঁড়াইনি। উনি আমাকে কিছু দেবেন, সেটা আশাও করিনি। আমার জন্য যেটা করলেন সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি।'' সূত্র:  নিউজ এইট্টিন বাংলা

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে