এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এক দেড় ফুটি মানুষের অসাধারণ গপ্প, যা শুনে আপনি রীতিমত চমকে উঠবেন! সেই মানুষটি বাসের হ্যান্ডেল পর্যন্ত ধরতে পারেন না। কারো না কারো হাত ধরেই উঠতে হয়।
তবে মানুষের বহিরঙ্গ দেখে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করার যে বদ অভ্যাস তার মুখে ঝাঁটা সেঁটেছেন হিমাংশু। আজ হিমাংশু বক্সির পরিচয় তিনি একজন আইনজ্ঞ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, একজন জাতীয় স্তরের তার্কিক এবং বিভিন্ন নামি সংবাদপত্রের কলামিস্ট।
হিমাংশুর মতো মানুষ যে কত লাখো মানুষের বাঁচার প্রেরণা জোগাতে পারে তা তার জীবনের ঘটনা শুনলেই বুঝতে পারবেন। হিমাংশু বলেন, এখনো বাড়ি থেকে বেরোলে অনেক মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন।
সেদিন এক শিক্ষিত মহিলা আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে তার ছেলেকে বলছিলেন, ঠিক করে না খেলে সেও আমার মত হয়ে যাবে। এগুলো শুনে এখন আর আলাদা করে কষ্ট হয় না। শুধু ভাবি, শিক্ষাটা খালি মার্কশিট নাকি তার অন্য কোনো সংজ্ঞা আছে!
হিমাংশু বামনত্ব রোগে আক্রান্ত। ভারতে প্রতি ২৫ হাজার লোকের মধ্যে একজন এই রোগের শিকার। তবে এর জন্য তিনি কোনোদিনই নিজেকে ছোট মনে করেননি। মহাত্মা গান্ধীর একটি কথা সব সময় মনে রাখতেন হিমাংশু— শক্তি কখনো শরীর থেকে আসে না, এটা আসে অদম্য ইচ্ছাশক্তি থেকে।
এ কথাকে হাতিয়ার করে একের পর এক পরীক্ষায় অত্যন্ত ভালো রেজাল্টের সঙ্গে পাস করেন তিনি। হিমাংশুর কথায়, বাবার খুব ইচ্ছা ছিল আমায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে দেখবেন কিন্তু সেটা আর পূরণ হলো না। কিছুদিন আগেই তাকে হারিয়েছি। তবে মা আমার জীবনের সব থেকে বড় ভরসা। চিরকাল আমায় সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন, যেকোনো অবস্থায় আমার পাশে থেকেছেন।
কথায় আছে, ঈশ্বর যদি একহাতে কিছু নিয়ে নেন, অন্য হাতে ফেরতও দেন। যেমনটা দিয়েছেন হিমাংশুকে। এ মুহূর্তে হিমাংশু দেশের সেরা চার সংস্থার অ্যাকাউন্ট সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন। দেশের প্রচুর সেলিব্রিটির কাছ থেকে অনেক পুরস্কার নিয়েছেন।
তার মধ্যে প্রয়াত গায়ক জগজিত্ সিং-ও রয়েছেন। অনেক এনজিও এবং মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা হিমাংশুকে ডাকেন তার জীবনের কাহিনী শোনানোর জন্য। আজ বহু মানুষকে বাঁচার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে হিমাংশুর কাহিনী। তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান টাইমস
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/