এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দীর্ঘদিন প্রেমের পর বিয়ে। বিয়ের পর অনেক সংসারে সেই আগের সম্পর্কটা আর থাকে না। প্রথম কয়েকটা দিন বেশ ভালোই কাটে। ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে চলে টানাপোড়েন।
কখনো অফিসের কাজের চাপ তো কখনো বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে মনোমালিন্য। সবকিছু নিয়ে বেশ ঘেঁটে যাওয়া একটা পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতিতে কী করা উচিত বা উচিত নয় তা ভেবে কুল করতে পারেন না দু'জনেই।
এমনটা হওয়া আশ্চর্য নয় মনে করেন মনোবিদরা। সম্পর্কের রাস্তা সব সময় সমান থাকে না। জীবনে সামান্য ঘটনা থেকে এমন পরিস্থিতি আপনাদের ক্ষেত্রেও তৈরি হতে পারে। তবে কী সব ঘটনা, চোখ বুলিয়ে দেখে নেয়া যাক এক নজর-
১. ওকেও পাল্টাতে হবে
বিয়ের পর যখন একটি মেয়ে নিজের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে আসেন, সে সময় তার সব থেকে কাছের মানুষ স্বামীই। তবে তাকে নিরন্তর পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বিষয়টি স্বামীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একে অপরকে একটু সময় দিন। পরিস্থিতি পাল্টাতে একটু সময় তো লাগবেই।
২. বাবা-মায়ের সমস্যা
যদি স্বামী বা স্ত্রীর মুখে নিজের বাবা-মায়ের সম্পর্কে খারাপ কথা শুনতে ভালো না লাগে, তবে নিজের জীবন সঙ্গীর কথাও ভাবতে হবে। তারও খারাপ লাগতে পারে। পরিবারে পরিবর্তন হলে সেটা জীবনেও হয়। দু'জনকেই এটা বুঝতে হবে।
৩. শুধু স্ত্রীকে দেখো
স্ত্রীদের এই প্রবণতা বেশি থাকে। যেকোনো ব্যাপারে অফিসে ফোন করা, নিমন্ত্রণে গিয়েও হাত ধরে থাকা, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও চাই আনইন্টারাপটেড অ্যাটেনশন। প্রবণতা ভীষণ খারাপ। মনোবিদদের মতে, স্বামী হোন বা স্ত্রী হোন প্রত্যেকের একটি নিজস্ব সময় থাকা উচিত। তা না হলে একঘেয়েমি আসতে বাধ্য। তাই নিজেও ফ্রি থাকুন এবং সঙ্গীকেও ফ্রি থাকতে দিন।
৪. ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বাইরে আলোচনা
এটা খুব খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। বাড়ির বাইরে গিয়েও যদি কী করা উচিত, কী খাওয়া উচিত ইত্যাদি নিয়ে যদি 'জ্ঞানবাণী' বর্ষণ করেন, তবে অচিরেই সম্পর্কের খারাপ দিকগুলো মাথা তুলতে পারে। সাবধান হোন। বাইরে কখনো সিনক্রিয়েট করবেন না। মনে রাখবেন, নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধানের চেষ্টা করুন। কোনো তৃতীয় ব্যক্তির কাছে সমাধান চাইবেন না।
৫. কথা বন্ধ
অফিস থেকে ফিরতে দেরি হলে বা ফরমায়েশ মতো কোনো জিনিস আনতে ভুলে গেলে বাড়িতে গিয়েই দেখলেন স্ত্রীর মুখ হাঁড়ি। সঙ্গে কথা বন্ধ। 'মনের কথাটি বুঝে নিতে হবে' এই ভেবে যদি কথা বন্ধ করেন তবে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। সঙ্গী যদি 'অন্তর্যামী' হন তবে আলাদা কথা, না হলে কথা বলুন। মনের কথা চেপে রেখে কথা বন্ধ করলে যেকোনো সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে। নিজেদের ভাব আদান-প্রদান ভীষণ জরুরি।
৬. ভুলে যান, ক্ষমা করুন
জন্মদিন হোক বা বিয়ের তারিখ, একবার ভুলে গেলে মহাযজ্ঞ। একে অপরকে দোষারোপ করার অভ্যাস থাকলে তা থেকে বেরিয়ে আসুন। ভুল মানুষ মাত্রই হয়ে থাকে। খারাপ লাগার মুহূর্তটি স্বামী বা স্ত্রীকে আলাদা করে বোঝানোর চেষ্টা করুন। নিশ্চয়ই তিনি বুঝবেন।
৭. সময় বুঝে কথা বলুন
স্বামী বা স্ত্রী অফিস থেকে ফিরেছেন, সে সময়ই সারাদিনের অভিযোগের ডালি সাজিয়ে বসলেন তার সামনে। সঙ্গে আজেবাজে বাক্যবান। মেজাজ গরম হতে পারে নিমেষে। তাই সময় এবং পরিস্থিতি বুঝে কথা বলা জরুরি। মনে রাখবেন, ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলুন। গরম মাথার সিদ্ধান্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভুল হয়।
৮. বিশ্বাসের অভাব, গোয়েন্দাগিরি
সম্পর্কের মূল ভিত্তি বিশ্বাস। যদি একে অপরকে বিশ্বাস না করতে পারেন তবে সম্পর্ক টেকা খুব মুশকিল। তার ওপর যদি গোয়েন্দাগিরির অভ্যাস থাকে তাহলে তো কথাই নেই। ফোন বা ই-মেল, ফেসবুকে চ্যাট হিস্ট্রি এসব ঘাঁটার অভ্যাসও খুব খারাপ। মনে রাখবেন, বিশ্বাস একবার হারিয়ে গেলে সেটা সহজে ফেরত আসে না। তাই এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকাই ভালো।
৯. টেকেন ফর গ্রান্টেড
সকালের চা তো স্ত্রীই করবে। বাচ্চাকে স্কুল থেকে তো স্বামীই আনবে এমনটা হলে খুব সমস্যা। যার সঙ্গে সারাজীবন কাটাতে চান, তাকে কখনই টেকেন ফর গ্রান্টেড মনে করবেন না। সঙ্গীকে এটা বুঝতে দিন, ভালোবাসাই সম্পর্কের প্রধান চাহিদা। এই ভাবনা স্বামী বা স্ত্রীকে আরো কাছে নিয়ে আসে।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে