এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: প্রত্যেক বাবা-মা চান সন্তান যেন তাদের কথা মতো চলেন, শোনেন আদেশ নির্দেশ। তবে অনেক ক্ষেত্রে এমনটি হয় না! ইচ্ছানুয়াী সন্তান যদি বাবা-মায়ের কথা না শোনে, তাহলে সেই ক্ষেত্রে বড় সমস্যা দেখা দেয়। অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করার সহজ ৫ টিপস:
১. অনেক সময় বাচ্চারা বড়দের কথা শুনতে চায় না। তখন বকাবকি না করে চেষ্টা করুন ভালো ভাবে তাকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। কেন বড়দের কথা শোনা উচিত, সেটা বুঝিয়ে বলুন আপনার সন্তানকে।
২. সঠিক ভাবে জানা থাকলে সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিয়ে বড় করে তোলার কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। সন্তান যে সময় বড় হয়ে ওঠে, সেই সময় তার মধ্যে নানা ব্যবহারগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এই সময় তার কোনও কোনও আচরণ বাবা-মা হিসেবে আপনাদের পছন্দ না-ই হতে পারে। কিন্তু তা বলে তাকে বকাঝকা করে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। বরং সন্তানের এই বড় হয় ওঠার সময় তার বুঝে তার পাশে থাকা প্রয়োজন।
ছোট বাচ্চাদের মধ্যে বেশিরভাগ সময়েই ভালো ও খারাপের বোধ গড়ে ওঠে না। তাই ঘরের চারদিকে অকারণে দৌড়ে বেড়ানো বা বাড়িতে বড়রা দরকারি আলোচনা করার সময় হই-হট্টগোল করা বাচ্চাদের খুবই স্বাভাবিক আচরণ।
অনেক সময় জিনিসপত্র ছোড়া এমনকি কাউকে মারধর করার স্বভাবও দেখা দেয় কোনও কোনও বাচ্চার মধ্যে। এরকম সময়ে বারণ করলেও তারা শুনতে চায় না। এই অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা বাবা-মায়ের পক্ষে সত্যিই চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে ওঠে।
এই অবস্থায় সন্তানকে বকাঝকা করা বা তাকে শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়। সব বাবা-মাই চান সন্তান যেন তাঁদের বাধ্য হয় এবং সব কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে ও পালন করে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমনটা হয় না। মনে রাখবেন বাচ্চাদের বড়দের কথা শোনার অভ্যেস মোটামুটি ছয় বছর বয়স থেকে তৈরি হয়।
এর পাশাপাশি বাড়ির পরিবেশ ও বাবা-মায়ের অভ্যেসের উপরেও সন্তানের কথা শোনা বা না শোনার স্বভাব তৈরি হয়। বাড়িতে যদি সব সময় ঝগড়া, একে অন্যের কথার উপর কথা বলার পরিবেশ থাকে, তাহলে স্বাভাবিক ভাবে আপনার সন্তানের মধ্য়েও সেই স্বভাব দানা বাঁধবে।
একটি শিশুর বড়দের কথা না শোনার অভ্যেসের পেছনে একাধিক বিষয় কাজ করতে পারে। এর মধ্যে অনেকটাই নির্ভর করে বাবা-মায়ের উপর। অনেক সময় এখনকার দিনে বাবা ও মা দুজনেই নিজেদের পেশাগত জীবন নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন না।
সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় তাঁরা ভুলে যান যে তাঁরা একটি ছোট শিশুর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন এবং শিশুর সঙ্গে শিশুর মতোই আচরণ করা জরুরি।
আগেকার দিনে সন্তান ভুল করলে তাকে কড়া ভাবে শাসন করার রীতি ছিল। শাসনের ভয়ে সন্তান আর ভুল কাজ করবে না বলে মনে করা হত। তবে পেরেন্টিং স্টাইল এখন বদলেছে অনেকটাই। সন্তানকে শাসন করার বদলে তাকে ভালো করে সময় নিয়ে খারাপ ও ভালোর মধ্যে পার্থক্য করতে শেখান।
৩. সন্তান কথা না শুনলে তার সঙ্গে তার বয়সের মতো করেই মিশুন। ঠিক বাচ্চার মতো করেই তার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করুন, কেন সে কথা শুনতে চাইছে না। বন্ধুর মতো করে কথা বললে সন্তান আপনার কাছে তার মনের কথা বলবে।
৪. সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। কথা বলার সময় আই কনট্যাক্ট খুবই জরুরি। এতে আপনার প্রতি আস্থা তৈরি হবে সন্তানের মনে।
৫. সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় মাথা গরম করে ফেলবেন না। এতে সন্তান হয় ভয় পাবে, নয়তো বিরক্ত হবে। সন্তান আপনার কথায় ভয় পেয়ে গেলে হাসি-মজা করে পরিস্থিতি হালকা করে দিন।