এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমরা জেনে বা না জেনে হরহামেশাই নানা ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করে থাকি। দেখতে চটকদার, খেতে মজা এমনসব জিনিস খেয়ে থাকি যার ফলে প্রাণ প্রদীপ অনায়াসেই নিভে যেতে পারে।
কোনো জিনিস ক্ষতিকারক হলে সেই জিনিসের মোড়কে লেখা থাকে ডেঞ্জার, মানে বিপজ্জনক। যেমন ফিনাইল বা বাথরুম পরিষ্কারের অ্যাসিড ইত্যাদি। কিন্তু টুথপেস্ট, কার্পেট, লিকুইড হ্যান্ডওয়াশে তো আর ডেঞ্জার লেখা থাকে না। এসব আমাদের রোজকার জীবনের অতিপরিচিত ব্যবহারিক সামগ্রী।
কিন্তু জানেন কি, এই সুপরিচিত জিনিসগুলোই ক্রমে আমাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিচ্ছে। ডেঞ্জার শব্দটি লেখা না থাকলেও বাড়িতে কিছু জিনিস আমরা রোজ ব্যবহার করি, সেগুলো আদতেই যমদূত।
জেনে নিন সেই ১০ গেরস্থালির টুকিটাকির হালহকিকত-
১. মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন
অবসর সময়ের চটজলদি মুখরোচক খাবারগুলোর মধ্যে পপকর্ন খুবই জনপ্রিয়। তৈরিতেও ঝঞ্ঝাট নেই। মাইক্রোওয়েভে কিছুক্ষণ রাখলেই এক বাটি পপকর্ন হাতে গরম। পপকর্নে থাকে PFO অ্যাসিড। এছাড়াও টেফলন নামে একটি রাসায়নিক। বিজ্ঞানীরা বলছেন, টেফলন নামে এই রাসায়নিক মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব ডেকে আনে। এছাড়া কিডনি, লিভার, অগ্নাশয়ে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ায় পপকর্ন।
২. কৃত্রিম মিষ্টি
অনেকেই কৃত্রিম মিষ্টি রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখেন। এই রঙিন কৃত্রিম মিষ্টিগুলো ওজন তো বাড়ায়ই, একইসঙ্গে DKP নামক একটি বিষ নির্গত হয় কৃত্রিম মিষ্টি থেকে। DKP মস্তিষ্কে টিউমারের অন্যতম কারণ। এছাড়া স্যাকারিন ক্যান্সার ডেকে আনে।
৩. প্রক্রিয়াজাত মাংস
বিভিন্ন রিটেল শপগুলোতে প্রক্রিয়াজাত মাংস বিক্রি হয় আকছার। সেই মাংস বাড়িতে ভেজে মুখরোচক স্ন্যাক্স হিসেবে অনেকের কাছেই প্রিয়। কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রক্রিয়াজাত মাংস নাকি ক্যান্সারে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৪৩ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
৪. আলুর চিপস
শিশু থেকে বয়স্ক আলুর চিপস বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার। আলুর চিপসে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট ও সোডিয়াম, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক। চিকিত্সকরা বলছেন, মাঝে মাঝে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিপস খাওয়ায় কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকলে অবিলম্বে বাদ দিন। না হলে বিপদ কড়া নাড়ছে।
৫. হাইড্রোজেনেটেড তেল
রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর জন্য হাইড্রোজেনেটেড তেল ব্যবহার হয়। এ ধরনের তেলে প্রচুর পরিমাণে Omega-3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ১৯৯৬ সালেই ডেভিড লরেন্স ডেউই নামে এক চিকিত্সা বিজ্ঞানী হাইড্রোজেনেটেড তেলের বিপজ্জনক দিকটি সামনে আনেন। দেখা গেছে, করোনারি হার্ট ডিজিজ, টাইপটু ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, অটিজম, ফুড অ্যালার্জির মতো রোগ বয়ে আনে হাইড্রোজেনেটেড তেল।
৬. রেড মিট
খুবই সুস্বাদু কিন্তু সহজ প্রাপ্য নয়। প্রতিদিনর খাদ্য তালিকায় রেড মিট থাকলে অবিলম্বে বাদ দিন। কারণ বেশি রেড মিট ক্যান্সার ডেকে আনে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের সমীক্ষা বলছে, বেশির ভাগ স্তন ক্যান্সারেরই অন্যতম কারণ রেড মিট।
৭. দাঁত মাজার পেস্ট টুথপেস্ট ব্যবহার তো আমরা ছোট থেকেই করে আসছি। লন্ডনের ব্রুনেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হেমাদ ইয়াসায়েই জানাচ্ছেন, টুথপেস্টে ক্ষতিকারক BPA থাকে। প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহার করা হয় BPA। এই রাসায়নিক ক্যান্সারের বাহক।
৮. প্লাস্টিকের টিফিন বক্স ও কৌটো
প্লাস্টিকের টিফিন বক্স বা কৌটের ব্যবহার আমাদের প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে ওতোপ্রত ভাবে জড়িত। কিন্তু এই প্লাস্টিক যে কী ভীষণ ক্ষতিকর, তা জানলে শিউরে উঠতে হয়। প্লাস্টিকে থাকে PVC ও পলিকার্বোনেট। যার ফলে ক্যান্সার অবধারিত।
৯. কার্পেট
কার্পেট তো অতি পরিচিত। ঘর শোভা বাড়াতে কার্পেটের ব্যবহার বহু বাড়িতেই। কিন্তু ব্রুনেল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, শরীরে মেটাবলিজম আটকে দেয়।
১০. লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ
বেসিনের পাশে লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ ঘরে ঘরে। চটজলদি হাত পরিষ্কারের সহজ উপায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, লিকুইড হ্যান্ডওয়াশে ক্ষতিকারক বায়োসাইডস। এই রাসায়নিক শরীরে বিষক্রিয়া ঘটায়। তথ্যসূত্র : এই সময়
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে