এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: একটি করে ফল প্রতি দিন খেলে নাকি কখনও চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে না! এমনই বলা হয়ে থাকে আপেল প্রসঙ্গে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হোক কিংবা বাড়তি ওজনের— আপেল হতেই পারে ভাল দাওয়াই, এমনটাই মনে করেন চিকিৎসকরা।
আপেল খাওয়ার সময় বীজ খেয়ে ফেলেন! যে ভয়ঙ্কর বিপদ! পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও এই আপেলের বীজের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে মারাত্মক বিষ। আপেল খাওয়ার সময় বীজ ফেলে খাওয়ারই নিয়ম, তবুও অনেক সময়ে ভুলবশতই আমরা খেয়ে ফেলি এই বীজ। যার ফল হতে পারে মারাত্মক!
আপেলের বীজে অ্যামিগাডলিন নামক উপাদান থাকে। এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন উৎসেচকের সংস্পর্শে এসে সায়ানাইড উৎপন্ন করে। শরীরে চিনির সঙ্গে সায়ানাইড মিশে হাইড্রোজেন সায়ানাইড নামক বিষ তৈরি হয়। যা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সায়ানাইড নামক রাসায়নিকটি মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহ রুখে দিতে পারে।
শরীরে অত্যধিক মাত্রায় সায়ানাইড গেলে আমাদের হৃদ্যন্ত্র ও মস্তিষ্ক অচল হয়ে যেতে পারে। কোমায় চলে যাওয়া, এমনকি, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে। অল্প পরিমাণ পেটে গেলে মাথা ধরা, বমি, পেট ব্যথা, দুর্বলতা, খিঁচুনি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অল্প পরিমাণ সায়ানাইডও কী প্রাণনাশক?
না, তা নয় যদিও। বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে দেখেছেন প্রায় ২০০টা আপেলের বীজ শরীরে প্রবেশ করলে তবেই মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে তাই বলে ভাববেন না যে ১-২টা শরীরের প্রবেশ করলে কিছুই হবে না। এ ক্ষেত্রে মৃত্যু না ঘটলেও একাধিক শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন মাথা ঘোরা, মাথা যন্ত্রণা, বমি, পেটে যন্ত্রণা, দুর্বলতা প্রভৃতি।
তাহলে কতটা সায়ানাইড বিষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে?
এ ক্ষেত্রে বডি ওয়েট একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। তবে নির্দিষ্ট করে বললে ০.৫-৩.৫ গ্রাম প্রতি কেজি অনুসারে খেলে মৃত্যু ঘটবেই ঘটবে। প্রসঙ্গত, ১ গ্রাম আপেলের বীজে প্রায় ০.০৬-০.২৪ এম জি সায়ানাইড তৈরি হয়। এবার আপনি নিজেই হিসেব করে নিতে পারেন আপেলের বীজ কতটা ক্ষতি করতে পারে।
আপেল ছাড়াও চেরি, অ্যাপ্রিকট, প্লাম, পিচের মতো ফলের বীজে সায়ানাইড থাকে। এই সব বীজের শক্ত খোলসের মধ্যে অ্যামিগাডলিন জমা থাকে।
তাই মুখে আপেলের বীজ পড়লে ফেলে দেওয়াই ভাল। সূত্র: আনন্দবাজার, ওয়ান ইন্ডিয়া