সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:৫৮:১৪

প্লুটোর বুকে পাহাড়, উপত্যকা নাকি খাদ?

প্লুটোর বুকে পাহাড়, উপত্যকা নাকি খাদ?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : নয় বছরের প্রতীক্ষার মহাকাশযান নিউ হরাইজনস অবশেষে পৌঁছল প্লুটোর আকাশে। ৩ লক্ষ কোটি মাইল পেরিয়ে যানটি জরিপ করতে শুরু করেছে সৌরমণ্ডলের শেষ গ্রহটিকে। প্লুটোর স্পষ্ট ছবি চলে এল মানুষের হাতে। এর ফলে ভেঙে গেল অনেক মিথ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় ঘণ্টায় ৪৫,০০০ কিলোমিটার বেগে ধাবমান নিউ হরাইজনস উড়ে গেল প্লুটো থেকে ১২,৫০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে। যেতে যেতে প্লুটোর ছবিও সমানে পাঠিয়ে গেল ওই যান। স্বভাবতই উল্লসিত মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র বিজ্ঞানীরা।

নিউ হরাইজনস-এর পাঠানো ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্লুটোর গায়ে লাল-লাল দাগ। অনেকটা মঙ্গলগ্রহকে যেমন দেখায়। ওই দাগ ছাড়াও প্লুটোর গায়ে দেখা যাচ্ছে উপত্যকা, পাহাড় কিংবা খাদ।

অকল্পনীয় বেগে ছুটতে ছুটতে নিউ হরাইজনস এখন সংগ্রহ করছে আরও যে সব ছবি, সে সব টাটকা হাতে পাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। যাঁরা বসে আছেন আমেরিকার বাল্টিমোর শহরে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষাগারে। টাটকা ছবি তুলে নিউ হরাইজনস রেখে দিচ্ছে নিজের কাছে, সঙ্গে সঙ্গে পাঠানোর জো নেই।

প্লুটোর ছবি চাক্ষুষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার ঝড়। অনেকেই বলছেন, প্লুটোতেও ভগ্ন হৃদয়। আয়তনে পৃথিবীর চাঁদের থেকে প্লুটো পাঁচগুণ ছোট। তবে যতটা মনে করা হয়েছিল তার চেয়ে বড় প্লুটো।

বেতার যোগাযোগেও (যার বেগ সেকেন্ডে ৩০০০০০ কিলোমিটার) প্লুটো থেকে পৃথিবীতে সঙ্কেত পৌঁছতে লাগে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা।

প্লুটোর ১২,৫০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে চলে যাওয়ার পর নিউ হরাইজনস আপাতত মৌন। তার সঙ্গে ফের বেতার যোগাযোগ হবে বুধবার ভোরে। তার আগে পর্যন্ত জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে সময় কাটাবেন।

আর আশা করবেন কোনও দুর্ঘটনায় ওই মহাকাশযান ধ্বংস না হয়ে যায়। সে আশঙ্কা একে বারে উড়িয়ে দেওয়ার নয়। মহাশূন্যে সংঘর্যের কারণে। নিউ হরাইজনস এত ভীমবেগে (ঘণ্টায় ৪৫,০০০ কিলোমিটার) ধাবমান যে, চালের দানার মতো কোনও বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষ হলেও ভেঙে চুরমার হবে পেল্লায় ওই যান।

বিজ্ঞানীরা অবশ্য তেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে নিউ হরাইজনস-এর গতিপথ গণনা করেছেন অতি সন্তর্পণে। এমন ভাবে যাতে ধ্বংসাত্ম সংঘর্ষের আশঙ্কা দাঁড়ায় ১০ হাজারে ১ বার। অন্যান্য মিশনে যেমন মঙ্গল গ্রহে কিংবা চাঁদে অবতরণ করেছে, অথবা চারপাশে ঘুরে বেড়িয়েছে এই মিশনে সেরকম হবে না।

নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী থেকে মঙ্গল যতটা দূরে, এই গ্রহটি তারচেয়েও ৪০০ গুণ বেশি দূরে। জেট বিমানে করে গেলে এই গ্রহে গিয়ে পৌঁছাতে লাগতো ৭০০ বছর।

৫০ বছর আগে মানুষ প্রথম দেখছিল সৌরপরিবারের সদস্য মঙ্গলকে। ১৯৬৪ সালে ম্যারিন ফোর মহাকশ যান মুখোমুখি হয়েছিল মঙ্গলের। আর তারপরই মঙ্গলের ছবি দেখতে পায় পৃথিবী।

এরপর ২০ বছরের মাথায় সৌরজগতের সবথেকে বড় গ্রহ বৃহস্পতির ছবি দেখি আমরা। সৌজন্যে গ্যালিলিও মহাকাশ যান। মানুষের স্বপ্ন থেমে থাকেনি। 'সাইন্স নেভার স্লিপ্স'। মানুষের স্বপ্নকে সফল করতে বিজ্ঞানও ঘুমোয়নি। নিরলস প্রচেষ্টার পর প্লুটোর মুখোমুখি মহাকাশ যান নিউ হরাইজন।সূত্র: আনন্দবাজার ও ২৪ঘন্টা
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে