বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২, ১০:৩৩:৪৫

রূপচর্চায় ম্যাজিকের মত কাজ করে ভাতের মাড়!

রূপচর্চায় ম্যাজিকের মত কাজ করে ভাতের মাড়!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভাতের মাড়ের গুণ যে রয়েছে তা কম বেশি সবাই জানেন। এই গুণ হচ্ছে পুষ্টির। অনেকেই স্বাস্থ্যবান হতে কিংবা চিকন শরীর মোটা করতে মাড় বসা ভাত খেয়ে থাকেন। 

অন্যদিকে শরীর ঝরঝরে রাখতে ভালো করে ভাতের মাড় ঝরিয়ে নেন অনেকেই। কেননা নিয়মিত মাড় বসা ভাত খেলে দ্রুত মুটিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। 

তবে ভাতের মাড় ভাল করে ঝরিয়ে ফেলে না দিয়ে সেটিকে কাজে লাগাতে পারেন নানা উপায়ে। ত্বক থেকে চুলের যত্নে কাজে লাগিয়ে দেখুন ভাতের মাড়। ফল মিলবে ম্যাজিকের মতো। 

এবার জেনে নেওয়া যাক ভাতের মাড়ের আশ্চর্য সব ব্যবহার! রূপচর্চায় ম্যাজিকের মত কাজ করে ভাতের মাড়!

১. ভাতের মাড় গোসলের পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিনে অন্তত ২ বার স্নান করতে পারলে ত্বকের অস্বস্তিকর জ্বালা ভাব, চুলকানি, র‌্যাশ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

২. ব্রণ সমস্যায় ভাতের মাড় ঠান্ডা করে তুলা দিয়ে ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত অংশে লাগান। দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ বার এভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারলে ব্রণ-ফুসকুড়ির মতো সমস্যা দ্রুত সেরে যাবে।

৩. মাতের মাড় ঠান্ডা করে তুলা দিয়ে মুখের ও হাত-পায়ের রোদে পোড়া অংশে নিয়মিত মাখতে পারলে বাড়বে ত্বকের উজ্জ্বলতা। এই পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে পারলে ত্বক থাকবে সতেজ, বজায় থাকবে ত্বকের আর্দ্রতা। এ ছাড়াও ত্বকের হাইপার পিগমেন্টেশন আর ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া ঠেকাতে ভাতের মাড় অত্যন্ত কার্যকরী।

৪. ভাতের মাড়ে পানি মিশিয়ে খানিকটা পাতলা করে নিন। শ্যাম্পু করার পর চুলে ভাতের মাড় দিয়ে মিনিট তিনেক রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যার মোকাবিলায় এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। এ ছাড়া চুল গোড়া থেকে মজবুত করতে আর চকচকে করতে সাহায্য করে এই পদ্ধতি।

এ ছাড়াও শরীরের অপুষ্টিজনিত সমস্যার মোকাবিলায় ভাতের মাড় খুবই উপকারী।

ভাতের ফ্যান সাধারণত ফেলেই দেওয়া হয়। অনেকে জামাকাপড় মাড় দিতে ব্যবহার করেন। অবশ্য গরুকে খাওয়ানোর জন্যও অনেকে ভাতের ফ্যান রেখে দেন। 

এছাড়া এটা নিয়ে আমবাঙালির খুব একটা মাথাব্যথা নেই। তবে বাঙালির না থাকলেও কোরিয়ানদের খুব আছে। রূপচর্চায় ভাতের ফ্যান এর উপকারিতা জানলে সত্যিই অবাক হবেন! ভাতের ফ্যান দিয়ে রূপচর্চা করেই এমন মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া ত্বকের মালকিন কোরিয়ান রমণীরা।

চাল ধোওয়া জল এবং ভাতের ফ্যান ত্বকের ছিদ্র কমায়, ত্বককে আঁটসাঁট এবং উজ্জ্বল করে। এমনই বলছেন কোরিয়ান মহিলারা। তাঁরাই গ্লাস স্কিন ত্বকের উদ্ভাবক। এই স্কিনকেয়ারে ত্বক এতটাই চকচক করে যে কাচের মতো মনে হয়। 

আর নিখুঁত ত্বকের জন্যই তো কোরিয়ান মহিলাদের পরিচিত। তাই তাঁদের কথা ফেলে দেওয়ার মতো নয় মোটেই। তাছাড়া ‘রাইস ওয়াটার’ তত্ত্বে সায় দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞরাও। তাহলে সরেজমিনে দেখে নেওয়া যাক ব্যাপারটা।

ত্বকে রাইস ওয়াটারের উপকারিতা:

কোমল ত্বক: সংবেদনশীল ত্বকের যত্নে এর জুড়ি নেই। এটা ব্রণ, জ্বালা এবং অন্যান্য ত্বকের প্রদাহের চিকিৎসায় সহায়তা করে বলেও জানা গেছে। তাছাড়া এর নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয় কোমল এবং মসৃণ।

ছিদ্র নিয়ন্ত্রণ করে: ত্বকে প্রশস্ত ছিদ্র থাকলে রাইস ওয়াটার দুর্দান্ত টোনার হিসেবে কাজ করে। ত্বকের ছিদ্র পরিষ্কার তো করেই সঙ্গে সিবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা নেয়। যার ফলে ত্বকের প্রশস্ত ছিদ্র হ্রাস পায়।

ত্বক উজ্জ্বল করে: যদি নিস্তেজ ত্বক, ব্রণ বা ত্বকের অমসৃণ টোন থাকে তাহলে রাইস ওয়াটার উপকারী হতে পারে। এটা ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং কোমল হয়। তাছাড়া এটা ত্বকে দাগ এবং পিগমেন্টেশন দূর করতেও সাহায্য করে।

অ্যান্টি-এজিং: এর উচ্চ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতার কারণে সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখা হ্রাস করার পাশাপাশি ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।

সূর্য রশ্মি থেকে রক্ষা করে: রাইস ওয়াটার প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে। ত্বককে ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ঠিকঠাক ব্যবহার করলে পোড়া ত্বক নিরাময় এবং সান ট্যানের দাগ দূর করতেও এই জুড়ি নেই।

ত্বকের জন্য রাইস ওয়াটারের মিস্ট: একটি কুকারে, এক কাপ চাল এবং তার দ্বিগুণ জল নিতে হবে। চাল সেদ্ধ হয়ে গেলে সেই চালের জল ছেঁকে নিতে হবে একটা বোতলে।চাইলে চালটা এক কাপ জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখার পর সেই জলটাও বোতলে ছেঁকে নেওয়া যায়। এবার স্নানের পরে এবং ঘুমোতে যাওয়ার আগে মুখে-ঘাড়ে সেটা স্প্রে করলেই হাতে-নাতে ফল মিলবে। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে