মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:২৮:২২

যে কারণে কবিগুরুর রচনায় শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত!

যে কারণে কবিগুরুর রচনায় শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়া দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত 'নমো নমো মাতা'-র মূল রচয়িতাও রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং। কিন্তু মানুষের মাঝে কৌতুহল হলো ভারত ও বাংলাদেশের সাথে রবিঠাকুরের সম্পর্ক ছিল। এক জন্মসূত্রে তিনি ভারতীয়, দুই তিনি বাঙালী হওয়ায় বাংলাদেশের সাথেও তার নাড়ির সম্পর্ক। কিন্তু তার আবাস স্থল কলকাতা থেকে কয়েক হাজার দূরে শ্রীলংকার সাথে তার কিসের সম্পর্ক। সেই কৌতুহল থেকে আজকের প্রতিবেদন।

১৯৩৮ সালে তার শ্রীলংকার সিংহলী ছাত্র আনন্দ সামারাকুনের অনুরোধে 'নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা' গানটি রচনা করেন কবিগুরু। গানের মূল সুরও তার। বলা বাহুল্য, রবীন্দ্রনাথ গানটি বাংলায় রচনা করেন। ১৯৪০ সালে শ্রীলংকায় ফিরে সিংহলী ভাষায় গানটি অনুবাদ করেন সামারাকুন। অনুদিত গানের কথা দাঁড়ায় 'আপা শ্রীলঙ্কা, নমো নমো নমো নমো মাতা, সুন্দর শ্রীবরণী...'। মিউসেস কলেজের এক অনুষ্ঠানে সামারাকুন অনুদিত গানটি প্রথম প্রকাশ্যে পরিবেশন করে তত্‍কালীন সিংহল বা সিলোনের একটি দল। গানটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং স্থানীয় রেডিও স্টেশনের সুবাদে বহুল প্রচারিত হয়।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পরেও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হওয়ার চল ছিল। ১৯৫০ সালে তত্‍কালীন অর্থমন্ত্রী জে আর জয়বর্ধনে সামারাকুন অনুদিত গানটি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান।

জাতীয় সঙ্গীত বাছতে শ্রীলঙ্কা সরকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রী এডউইন বিজয়রত্নের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন। অনেক বাছ-বিচারের শেষে জাতীয় সহ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পায় 'নমো নমো মাতা...'। ১৯৫১ সালের ২২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে সরকারি পরিচিতি পাওয়ার পর ১৯৫২ সালের প্রথম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গাওয়া হয় এই গান। উল্লেখ্য, গানটি তামিল ভাষায় অনুবাদ করেন এম নাল্লাথাম্বি।

১৯৫০-এর দশকের শেষ দিকে এই গানের প্রথম পংক্তি পাল্টানোর সিদ্ধান্ত হয়। পর পর দুই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর পর জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম লাইনে বদল আনার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। পরিবর্তিত সংস্করণে গানের প্রথম পংক্তি দাঁড়ায়, 'শ্রীলঙ্কা মাতা, আপা শ্রীলঙ্কা...'। ১৯৬১ সালে এই সিদ্ধান্তে সরকারি সিলমোহর পড়ে। ১৯৭৮ সালে শ্রীলঙ্কার সংবিধানে ঠাঁই পায় এই গান।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে